প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
আজ ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩ হিজরি মোতাবেক ২০ অক্টোবর বুধবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হিজরি সনের তৃতীয় মাসের নাম মাহে রবিউল আউয়াল। ইসলামের ইতিহাসে এ মাসের গুরুত্ব সমধিক। রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সুবহে সাদেকের সময়টুকু বিশেষ গৌরবময় ও মর্যাদাপূর্ণ। কেননা এ সময়েই বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মা আমিনা (রাঃ)’র কোল আলোকিত করে দুনিয়ায় আগমন করেছিলেন। তাঁকে সৃষ্টি না করলে আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র এমনকি ইহকাল-পরকাল ও উহার মধ্যস্থিত কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হতো না। সেদিন দুনিয়ার সবাই এমনকি গাছপালা, তরুলতা, পশু-পাখি, জীব-জন্তু পর্যন্ত মেতে উঠেছিলো মহা উৎসবে ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন মারহাবা! মারহাবা!’ বলে। শুধুমাত্র দুঃখ পেয়েছে অভিশপ্ত ইবলিস শয়তান। সে প্রিয় নবীর আগমনে খুব কষ্ট পেয়ে ‘জাবালে আবু কুবাইস’ তথা আবু কুবাইস নামক পাহাড়ের সাথে নিজের মাথা ঠুকেছে। সেই ইবলিসের প্রেতাত্মারা আজো আছে, কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে; যারা ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ)-এর বিরুদ্ধাচারণ করে নানা ফতোয়াবাজি করবে।
মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে দুনিয়াবাসীর প্রতি যত দয়া-অনুকম্পা প্রেরিত হয়েছে, হুজুর (দঃ)-এর জন্ম তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। নবীর জন্ম তথা মিলাদের বর্ণনায় পরিপূর্ণ হয়েছে হাদিস গ্রন্থসমূহের বিরাট অংশ। কম্পাসের কাঁটা যেভাবে উত্তর-দক্ষিণ মেরু বরাবর সোজা না হয়ে স্থির হয় না, তেমনি প্রকৃত আশিক হৃদয় হুজুর (দঃ)-এর জন্ম দিনে তাঁর জন্মকথা না শুনে স্থির থাকতে পারে না। মিলাদের আলোচনায় তার হৃদয়ে বয়ে দেয় খুশির জোয়ার আর আনন্দের প্লাবন। তাইতো বিশ্ববাসী আজ পালন করবে ঈদে মিলাদুন্নবী বা হুজুর (দঃ)-এর জন্মের খুশির দিন।
মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত, হামদ, নাত, সালাত-সালাম, মিলাদ-কিয়াম, জশনে জুলুছ, ওয়াজ, বক্তৃতা এসবই উত্তম আমল এবং নবীপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। এর সাথে রাসূলুল্লাহ (দঃ)-এর আদর্শ গ্রহণের মনোবৃত্তি তৈরি করে সর্বত্র তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শান্তিময় সমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্রত হওয়া প্রকৃত মু’মিনের পরিচায়ক। মুসলিম বিশে^ বছরের সর্বদিনের চেয়ে নবীর জন্মদিনটির গুরুত্ব সমধিক। তাই পৃথিবীর সকল দেশের মতো বাংলাদেশে এবং চাঁদপুরের সকল গ্রাম-গঞ্জে, শহরে, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা-মসজিদে এই পবিত্র দিনটিতে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) হিসেবে উদ্যাপিত হয়ে থাকে। এই দিবসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ থাকে।
ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁদপুর জেলা কার্যালয় মঙ্গলবার থেকে তিনদিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে হামদ-নাত প্রতিযোগিতা, বুধবার সবিনা খতম এবং বৃহস্পতিবার সেমিনার আয়োজন। এদিকে চাঁদপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদ্যাপন পরিষদ সকালে বিশাল সমাবেশের আয়োজন করেছে। এছাড়া ডিসি অফিস সংলগ্ন চেয়ারম্যান ঘাটা বায়তুল আমান জামে মসজিদে আজ বাদ ফজর থেকে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। একই সময় চাঁদপুর শহরের জিটি রোডস্থ আনোয়ারা মতিউর মহিলা মাদ্রাসায় মিলাদ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চাঁদপুর শহর জমইয়াতে হিযবুল্লাহর উদ্যোগে আজ বাদ জোহর চাঁদপুর দীনিয়া মাদ্রাসায় ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ)-এর মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কালেমা খচিত পতাকা উড়িয়ে আলোকসজ্জার আয়োজন করবে বলে জানা গেছে।