প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ
চাঁদপুরের সকল বিভাগের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক
চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ৬৬টি ডিপার্টমেন্ট এর সদস্য। এ সভায় সবাই যারা এসেছেন তারা মূলত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্যই এসেছেন। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ আমরা সবাই সরকারের কাজ করি। সবাই মিলে আমরা একটি টিম। তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর শহরটা সুন্দর হোক এটা আমি চাই। সকল ভালো কাজেই আমার সহযোগিতা পাবেন। আমি চাই আমরা সবাই মিলে চাঁদপুরকে সুন্দর করে গড়ে তুলি।
|আরো খবর
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ কুদ্দুস, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম রেফাত জামিল, পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মিজানুর রহমান, বিআরডিবির উপ-পরিচালক মোঃ মোকাব্বের হোসেন ভূঁইয়া প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক অন্যান্য বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, চাঁদপুর পৌরসভা থেকে ইজিবাইকের ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেয়া হচ্ছে। এর দ্বারা অবৈধগুলো শনাক্ত হয়ে যাবে। অক্টোবর মাসে ইজিবাইকের উপর অভিযান চালাবে পৌর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আগামী ৬-৭ মাসের মধ্যে চাঁদপুর জেলা শহরে যাত্রী ছাউনি এবং গণশৌচাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন বিধায় চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রকে অভিনন্দন জানাই। তিনি আরো বলেন, অনেকদিন পর স্কুল খুলেছে। স্কুল যেনো বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্যে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছি। যাতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে আসে। এদিকে শাহরাস্তিতে এক প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রীর টয়লেটে আটকাপড়া বিষয়ে তিনি সবাইকে সচেতন করেন, যাতে পুনরায় আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে। এ ঘটনার দায় কোনোভাবেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা এড়াতে পারেন না। সবার সহযোগিতা থাকলে চাঁদপুরকে আমরা একটি সুন্দর পরিবেশ দিতে পারবো বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সভায় যুব উন্নয়ন, বিআরডিবি, বিআইডব্লিউটএ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। এদিকে রেলের জায়গায় অনেকেই মাছ চাষ করছেন। কিন্তু মানছেন না কোনো নিয়ম নীতি। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে রেল কর্তৃপক্ষকে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানান। রেলের লীজকৃত কোনো জায়গায় কেউ মাছ চাষ করলে মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমতি আছে কি না সে বিষয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়। অপরদিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এখন আর দেয়া হয় না। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা সরাসরি তাদের একাউন্টে জমা হচ্ছে। এটা একটা জটিলতা। যেহেতু মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের একাধিক স্ত্রী থাকে এবং সে মারা গেলে পরবর্তীতে তার ওয়ারিশদের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে কাগজের জটিলতা দেখা যায় বলে তিনি মন্তব্য করেন। ভিক্ষুক পুনর্বাসন সম্পর্কে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ প্রত্যেক উপজেলায় দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তালিকা হালনাগাদ করতে হবে। সেসব ভিক্ষুকের শারীরিক সক্ষমতা আছে তাকে ভ্যান বা অন্য কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করে দিতে হবে। যে এলাকায় যে ভিক্ষা করে তাকে পুনর্বাসন করতে হলে স্থানীয়দের অবহিত করতে হবে। তাহলে আর ভিক্ষাবৃত্তির নাম করে যারা প্রতারণা করে সেটা অনুমান করা সম্ভব হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ হাজার জিও ব্যাগ থাকলেও হবে না। আরো মজুদ রাখতে তিনি নির্দেশনা দেন। এছাড়া চাঁদপুরের নদীতে ডুবোচর দেখা যাচ্ছে। যার কারণে ইলিশের উৎপাদনে বাধা হচ্ছে। তাই ডুবোচরে ড্রেজিং ব্যবস্থাসহ আরো উন্নত করা যায় কিনা সে বিষয়ে পরামর্শ দেন। পরিশেষে চাঁদপুর জেলা ফায়ার স্টেশন সার্ভিসের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, অত্যন্ত প্রশংসামূলক কাজ করছে ফায়ার স্টেশন। তাদের সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছোট পরিসরে হলেও আগুন নিভানোর প্রশিক্ষণ নিতে সকলকে আহ্বান জানান। আগুন প্রতিরোধে সবাই সচেতন হলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে জেলা প্রশাসক আশা ব্যক্ত করেন।