প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দাম্ভিক মেয়র লিপনের অপসারণে স্বস্তি হাজীগঞ্জে
নারী নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও হাজীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম মাহবুব উল আলম লিপন পৌর ভবনের পেছন দিয়ে মই ব্যবহার করে পালিয়ে যান। তার পালিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ক'দিন পালিয়ে থাকার পরে হঠাৎ গত ১৯ আগস্ট পৌর ভবনে আসলেও জনরোষের ভয়ে দ্রুত পৌর ভবন ত্যাগ করেন । পরের দিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে মেয়র পদ থেকে অপসারণ করা হয়।
মাহবুব আলম উল লিপনের অপসারণের কথা হাজীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বস্তি প্রকাশ করেন। লিপনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপি, আসহায়দের সহযোগিতার নামে সেলফিবাজি, পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার, হাজীগঞ্জ বাজারের ইসলামী ব্যাংক শাখায় হামলাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ছাড়াও নারী নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। নারী নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা করেন তারই পরিষদের এক মহিলা কাউন্সিলর। সেই মামলা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের প্রভাব খাটিয়ে খারিজ করান বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মহিলা কাউন্সিলর। যদিও ভুক্তভোগী হাইকোর্টে আপিল করেন। যা এখনো চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।
হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার একাধিক লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়, লিপন মেয়র হওয়ার আগে একটি টিনশেড বাড়িতে থাকতেন। মেয়র হওয়ার পরেই যেনো আলাদিনের চেরাগ হাতে পান। টিনশেড বাড়ি হয়ে যায় ডুপ্লেক্স। এছাড়া স্ত্রী ও মেয়ের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট ক্রয় করেন বলে জানা যায়।
হাজীগঞ্জ পৌর ভবন তাঁর সময় ছিলো আওয়ামী লীগের অঘোষিত কার্যালয় । টেন্ডার ও সকল কাজই পেতেন নিজের অনুগতরা। নিজ দলের মাঝেও নিজ বলয় তৈরি করেন।
ভুক্তভোগী এক কাউন্সিলর জানান, আমি ন্যায় বিচার চেয়ে আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা করি। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ও টাকা দিয়ে মামলাটি তিনি খারিজ করান। পরে আমি হাইকোর্টে আপিল করি। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের আত্মীয় বলে পরিচয় দিতেন। মাঝে মাঝে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে ছবি ফেসবুকে দিতেন। যার কারণে তখন অনেকে প্রতিবাদ করতে সাহস পেতো না।
মেয়র লিপন পৌরভবনের পেছন দিয়ে মই বেয়ে পালানোর একটি ভিডিও শেয়ার করেন হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামাল সুমন। তাঁর ফেসবুকে লিখেন, এজন্যেই বলে, ক্ষমতায় থাকতে এমন কিছু করো না, যাতে ক্ষমতা না থাকলে এইভাবে পালাতে হয়।
ঠিকাদার গাজী নাসির উদ্দিন বলেন, পৌরসভার কাজ করে দিনের পর দিন ধর্ণা দিয়েও বিল তুলতে পারতাম না। কারো সাথে ভালো করে কথা বলতেন না। দাম্ভিকতা ছিলো অনেক।