বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০০

কচুয়া উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারির নথি গায়েব !

ফরহাদ চৌধুরী ॥
কচুয়া উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারির নথি গায়েব !

কচুয়া উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ই-নামজারির নথি গায়েব হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোহট গ্রামের মজুমদার বাড়ির দুলাল চন্দ্র দের স্ত্রী অঞ্জু রাণী দে তার মালিকীয় দখলীয় ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ২ একর ৫৫ শতাংশ জমির মধ্যে ২ একর ১৮ শতাংশ সম্পত্তি ই-নামজারির জন্যে ২৯/০৯/২২ তারিখে আবেদন করেন। আবেদন নং ৪০৪২৭৪৪, মামলা নম্বর ১৮৩৪/২২-২৩।

আবেদনে তার দখলীয় মাতৃওয়ারিশ সূত্রে একমাত্র মালিক হয়ে ১৪৩নং গোহট মৌজার সিএস ৬৫নং খতিয়ানে বর্তমানে ভি পি ‘খ’ গেজেটের তফসিলভুক্ত সম্পত্তি এবং অঞ্জু রাণীর ওয়ারিশদের নাম গেজেটে ১৪৯ ও ১৫০নং ক্রমিকে রয়েছে। তিনি সেই মালিকীয় সম্পত্তির নামজারির জন্যে আবেদন করেন।

অঞ্জু রাণীর মালিকানা সম্পত্তি সম্পর্কে পর্যালোচনা করে জানা যায়, গোহট মৌজার ৬৫ খতিয়ানে মোট ১৫ একর ৩১ শতাংশ ভূমির মধ্যে হিস্যা অনুযায়ী অঞ্জু রাণীর নানা ২ একর ৫৫ শতাংশের মালিক হন। তার নানা নীলকান্ত মজুমদার। জীবদ্দশায় তার তিন ছেলে ভারতবাসী হয়ে মৃত্যুবরণ করায় নীলকান্তের মৃত্যুর পর তার একমাত্র মেয়ে ঊষা মজুমদার ওই সম্পত্তির মালিক হয়। ঊষা রাণীর ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে ৪ ছেলে দেশ স্বাধীনের পূর্বে ভারতবাসী হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এর কয়েক বছর পর এক মাত্র মেয়ে অঞ্জু রাণীকে রেখে ঊষা রাণী মজুমদার গোহট মজুমদার বাড়িতে মৃত্যুবরণ করলে মাতৃওয়ারিশ সূত্রে অঞ্জু রাণী দে এই সম্পত্তির মালিক হন। বর্তমানে এই মজুমদার বাড়িতে অঞ্জু রাণী দে, স্বামী দুলাল চন্দ্র দে, বড় ছেলে প্রদীপ চন্দ্র দে, ছোট প্রদীপ চন্দ্র দে, মেয়ে মাধবী চন্দ্র স্থায়ীভাবে বসবাস করছে।

আরো জানা যায়, সিএস ৬৫ খতিয়ানে মালিক রজনীকান্ত মজুমদার, নীলকান্ত মজুমদার ও কৃষ্ণকান্ত মজুমদার নামক ৩ ভাইয়ের বাংলাদেশে বসবাসকারী একমাত্র ওয়ারিশ অঞ্জু রাণী দে। তার খারিজ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি দেখতে পান অঞ্জু রাণী আবেদনকৃত নামজারির দখলীয় সম্পত্তিতে বসবাস করছেন। তদন্তকালে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার তানিয়া আক্তার, কানুনগো সাইফুল ইসলাম, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইমাম হোসেন, সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবুল বাসার, স্থানীয় সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। এই তদন্তের সংবাদ পরদিন চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ ও চাঁদপুর দর্পণসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তদন্ত কর্মকর্তাগণ অঞ্জু রাণী দের বসবাসকৃত বাড়িঘর ও দখলের প্রমাণ পাওয়ার পরও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইবনে আল জায়েদ কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তার নামজারি প্রদানের জন্যে অনুরোধ করলেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপের অজুহাত দেখিয়ে একবছরের অধিক সময় কালক্ষেপণ করেও নামজারি করেননি, বাতিল বা খারিজের আবেদন সম্পর্কে কোনো শুনানি করেননি এবং কচুয়া অফিস থেকে বদলি হয়ে যান।

সম্প্রতি অঞ্জু রাণী গং সাংবাদিকসহ উপস্থিত হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাপ্পী দত্ত রনির কার্যালয়ে নামজারির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ ধরনের নথির বিষয়ে আমার জানা নেই।

নথি গায়েবের বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাপ্পী দত্ত রনি জানান, অঞ্জু রাণীর আবেদনটি আমার পূর্বের সহকারী কমিশনার (ভূমি)র সময়ে করা হয়েছে। তার নামজারির আবেদনপত্রটি আমি এসে পাইনি, নতুন করে আবেদন করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অঞ্জু রাণী জানান, দীর্ঘদিন আমাকে নামজারির বিষয়ে হয়রানি করে আসছে কচুয়া উপজেলা ভূমি অফিস। আবার জানতে পারলাম, গত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবেদন করে কেইস নং ২২৮৭/১৩-১৪ খারিজ নং ২৫১ সৃজন করেছিল, পরে তা বাতিল হয় এবং বারবার স্থানীয় ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিসে চেষ্টা করেও বিএস হাল দাগের উপর খারিজ চেয়ে না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে আবারো অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)-এর মাধ্যমে খারিজ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

ভুক্তভোগী অঞ্জু রাণী দে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক বরাবরে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পণ আইনে তার মালিকীয় খ তফসিলের দখলীয় সম্পত্তি নামজারি প্রদানে সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়