বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৪, ০০:০০

হ-য-ব-র-ল অবস্থায় চলছে ফরিদগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিস

অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে মুহূর্তেই কমে যায় বিল

জনবল সংকটের কারণেই এমন ভোগান্তি : ডিজিএম

শামীম হাসান ॥
অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে গেলে মুহূর্তেই কমে যায় বিল

যাচ্ছেতাই অবস্থায় চলছে চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ অফিসের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম। প্রতিমাসেই মিটারে ওঠা নির্ধারিত রিডিংয়ের চেয়ে অতিরিক্ত রিডিং তোলার কারণে অধিকাংশ গ্রাহকই প্রতি মাসে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল। সচেতন যে ক’জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল হাতে পাওয়ার পর মিটারের রিডিংয়ের সাথে মিলিয়ে অতিরিক্ত বিল দেখতে পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসে এসে বিল প্রস্তুতকারক কাউকে বললেই কোনোপ্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই মুহূর্তেই পাল্টে দিচ্ছেন বিদ্যুৎ বিল। এর মধ্যে কোনো কোনো বিলের কাগজে ২০ ইউনিট থেকে একশ’ ইউনিট পর্যন্ত কমে গিয়ে বিল কমে যাচ্ছে শত টাকা থেকে হাজারের অধিক টাকা পর্যন্ত।

নিজের মিটারে উল্লেখিত ইউনিটের সাথে বিলের কাগজের অতিরিক্ত একশ’ ইউনিটেরও বেশি পার্থক্য দেখতে পেয়ে বুধবার (২৬ জুন) সকালে বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে ছুটে যান ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার কনফেকশনারি দোকানদার আব্দুল আলী পাটওয়ারী। বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বলতেই ১২৪৫ ইউনিটের উল্লিখিত ৫৫৩৮ টাকার বিলের কাগজ হয়ে যায় ১১০০ ইউনিটের ৩৩৬৭ টাকা।

মুহূর্তেই একই অভিযোগ নিয়ে আসতে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বেশ ক’জনকে। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ শরিফ হোসেন বলেন, মিটারে এখনকার ইউনিট ৫২০০। অথচ বিদ্যুৎ অফিসের লোক আরো ক’দিন আগেই রিডিং তুলেছে ৫২৩০। তবে কী রিডিং তোলার পর এতোদিন আমি বিদ্যুৎ ব্যবহার করিনি? বরং বিলের কাগজে উল্লেখিত তখনকার বিলের চেয়েও এখন কম হয় কীভাবে? এরপর এখানে আসার পর ওনারা বিল পরিবর্তন করে কমিয়ে দিয়েছেন। এমন ঘটনা গত ক’মাসই ঘটে আসছে। যে মাসে সময় করে বিদ্যুৎ অফিসে এসে বিল কমাতে পারি সে মাসে কম দিতে পারি নয়তো অতিরিক্ত পুরো বিলই দিতে হয়। আর বিদ্যুৎ অফিসে আসলে আসা-যাওয়ায় ৬০ টাকা করে ১২০ টাকা খরচ করতে হয়। এ রকম ভোগান্তি আমাদের আর কত পোহাতে হবে?

অপর ভুক্তভোগী আব্দুুল জব্বার বলেন, ‘আমার মিটারে রিডিং কম উঠছে, কিন্তু বিলের কাগজে বেশি। অহন এখানে আইসা বলাতে বিল কমাই দিছে। এ রকম আগেও বহুবার হইছে, বিলের কাগজ লই আইলে বিল কমাই দেয়। তাইলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকরা দিনের পর দিন ভুল করি আমাগোরে কিল্লাই ভোগান্তিতে হালায়?’

ভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আসা ক’জন জানান, বিদ্যুৎ অফিসের লোক রিডিং তুলতেই যাননি। বিদ্যুৎ অফিসের মনগড়া রিডিং তোলায় আমাদের অতিরিক্ত বিল দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিসের এমন হ-য-ব-র-ল ব্যবস্থাপনার কারণে জনমনে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি যারা মিটারের সাথে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ মেলান না, তাদের কাছ থেকে মাসের পর মাস অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায় করছে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস?

বিলের কাগজে অতিরিক্ত ইউনিট তুলে গ্রাহকদের এমন হয়রানির বিষয়ে কথা হয় বিদ্যুৎ অফিসের বিল প্রস্তুতকারক এক কর্মকর্তার সাথে। বয়োজ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানালেন, রিডিং তোলার কারণে এমন সমস্যা হতে পারে। গ্রাহকরা সমস্যা নিয়ে আসলে আমরা পরিবর্তন করে দিই। ‘কোনো প্রকার ডকুমেন্টস ছাড়াই কেনো পরিবর্তন করা হলো একাধিক বিলের কাগজ?’ এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, বাকি সব ডিজিএম স্যার বলতে পারবেন।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডি. জি. এম.) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যথেষ্ট জনবল সংকট রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে বয়োজ্যেষ্ঠ ক’জনকে দিয়ে কাজ করানোর কারণে এমন মিসিং হচ্ছে। চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুৎ অফিস আমাদের জনবল নিয়োগ দিলেও এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কাজে লাগানোর জন্যে আমরা তাদের পাইনি।

সংশ্লিষ্ট কর্মী ভুল রিডিং তোলার পর অতিরিক্ত বিলের কাগজ নিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে আসার সাথে সাথে বিল প্রস্তুতকারককে বললেই কোনোপ্রকার যাচাই-বাছাই না করে বিল কমিয়ে সংশোধিত বিল দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জুন আমাদের ক্লোজিং মাস, অফিসের সকল কর্মকর্তার প্রচুর কাজের প্রেশার যাচ্ছে। অন্য সময় হলে আরো যাচাই-বাছাই করেই বিলের কাগজ সংশোধন করা হতো। ‘যেহেতু অনেক আগে থেকে গ্রাহকদের এমন অভিযোগ’ পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের চলমান ভোগান্তি লাঘবে তিনি কোনো ব্যবস্থা পূর্বে গ্রহণ করেছেন কিনা কিংবা করবেন কি না’ জানতে চাইলে বলেন, আমারা যথাযথ জনবল পেলে এ ধরনের সমস্যাগুলো আর হবে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়