প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে ফসলি জমিতে জোরপূর্বক মাছচাষের চেষ্টা ॥ জমি রক্ষায় ইউএনওর দারস্থ কৃষকরা
বছরে দুটি ফসল উৎপাদন হয়। এই উৎপাদিত ধান দিয়ে চলে এলাকার শতাধিক কৃষক পরিবারের সংসার। কিন্তু ৪০ একর ফসলি জমি ঘিরে মাছচাষের জন্য স্থানীয় একটি প্রভাবশালী পরিবার উঠে-পড়ে লেগেছে। ঈদের পূর্বে মাটি কাটার মেশিন ভেক্যু নিয়ে আসলেও কৃষকদের বাধার মুখে পড়ে। আপাতত ভেক্যু ফিরে গেলেও যেভাবেই হোক ফসলি জমিতে মাছের খামার গড়ে তুলবেন এমন হুমকিতে আতঙ্কিত কৃষকরা। বাধ্য হয়ে ফসলি জমি রক্ষার জন্য গত ২৪ জুন সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গণস্বাক্ষরযুক্ত আবেদন করেছে স্থানীয় কৃষকরা। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের।
স্থানীয় কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হাঁসা ও চরভাগল গ্রামের বিলের (আইলের রাস্তার দক্ষিণ অংশ) প্রায় দুই গ্রামের ৭০/৮০জন লোকের ৪০ একর ফসলি জমি রয়েছে। ওই কৃষকরা ছাড়াও এই জমির উপর আরো বেশ কিছু পরিবার। যারা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে সংসার চালায়।
শাহাদাত তালুকদার, আমান খলিফা, মোহাম্মদ হোসেন, হান্নান মিজি, লুৎফুর রহমান, আমেনা বেগম, ফাহিমা বেগমম কুসুম বেগমসহ স্থানীয় কৃষকরা জানান, ৪০ একরের এই বিলের জমিতে তারা বছরে দুটি ধানের আবাদা করে থাকেন। কৃষি অফিস সহয়তা করলে আবাদ বাড়ার সাথে সাথে সাথী ফসলও করা সম্ভব। কিন্তু হঠাৎ করেই স্থানীয় প্রভাবশালী জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী আব্বাস ও তার কিছু অনুসারী কিছু জমি কিনে নিয়ে পুরো বিলে মৎস্য চাষের প্রজেক্ট করতে পাঁয়তারা শুরু করেছে। ঈদের আগে গত ১০ জুন রাতে জাহাঙ্গীর পাটওয়ারীর আব্বাসের লোকজন মাটি কাটার মেশিন ভেক্যু নিয়ে ফসলি জমিতে আসলেও কৃষকদের বাঁধার মুখে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। পরে দিনের বেলায় মাটি কাটার মেশিন ভেক্যু সরিয়ে নিয়ে যায়। তারা হুমকি দিয়ে যায় যে, আমরা যেভাবেই হোক উক্ত কৃষি জমিতে মাছচাষ করবে। ফলে কৃষকরা আতঙ্কে রয়েছেন।
কৃষকরা জানায়, তাদের এই জমি দিয়েই বছরের খাবারের ব্যবস্থা হয়। অধিকাংশ কৃষকের এই বিলের একখণ্ড ফসলি জমি ব্যতীত অন্য কোথাও জমি নেই। তাই তারা জমি রক্ষায় আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী আব্বাস মুঠোফোনে জানান, কৃষকরা জমি না দিলে কিছু করার নেই। তবে ধানের আবাদের চেয়ে মাছের আবাদে লাভ বেশি। সেই দিক বিবেচনা করেছিলাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মণ্ডল জানান, কৃষকদের আবেদন তিনি পেয়েছেন। ফসলি জমিতে ভেক্যু চালানো যাবে না। কৃষি কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে তদন্ত করতে পাঠানো হবে।