প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
সরেজমিন প্রতিবেদন-৯ : হানারচর ইউনিয়ন
যারা কৃষক না তারা সরকারি প্রণোদনার ধান বীজ ও সার পেয়ে থাকে
চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া উত্তর, গোবিন্দিয়া দক্ষিণ ও হানারচর ব্লকের দায়িত্বে রয়েছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভক্ত চন্দ্র দাস। তার ও মেম্বারদের মাধ্যমে প্রভাবশালী ও দলীয় কৃষকরা পায় সরকারি প্রণোদনার ধান, সার ও বিভিন্ন বীজ।
ইরি ধান চাষাবাদের সময় মাঝে মধ্যে আসেন কৃষি অফিসার। এছাড়া কৃষি অফিসারকে তেমন একটা দেখা যায় না। দোকানের নিকট বসে ও রাস্তায় হেঁটে কৃষকদের খোঁজ খবর নেন। না আসার অনিয়ম তো রয়েছে। বেলা ১১টা বা ১২টায় আসেন। দুপুর ১টার মধ্যে চলে যান। মেঘনা নদীতে এ ইউনিয়নের অনেক কৃষি জমি ভেঙ্গে গিয়ে কৃষি জমি কমে কৃষকের সংখ্যা কমে যায়। তারপরও কৃষকরা সরকারি কোনো কিছু পায় না।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভক্ত চন্দ্র দাসের বাড়ি মতলব দক্ষিণ উপজেলার মেহরনে। চাকুরির সুবাদে চাঁদপুর শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
এ ব্যাপারে উত্তর গোবিন্দিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ আবুল কাশেম বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে কৃষি কাজ করে আসছি। অন্য কৃষক না থাকায় সবজি বীজ আমি পেয়েছি। যারা কৃষক না তারা ধান ও সার পেয়ে থাকে।
কৃষক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ধানসহ সকল ফসল একটু একটু করে থাকি। ইরির সময় কৃষি অফিসার মাঝে মধ্যে আসেন। প্রভাবশালী কৃষকদেরকে সরকারি সকল কিছু দেয়া হয়। গরিব কৃষকরা সরকারি কিছুই পায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক’জন কৃষক বলেন, কৃষি অফিসার বেলা ১১টা ও ১২টা বাজে আসেন। দুপুর ১টার মধ্যে আবার চলে যান। তিনি সাবেক সিআইপি বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে ও চায়ের দোকানে বসে কৃষকদের খোঁজখবর নিয়ে চলে যান। দলীয় ও প্রভাবশালী কৃষকদের সরকারি সকল কিছু মেম্বার ও কৃষি অফিসার মিলে দিয়ে থাকেন। কৃষি অফিসার মেম্বারদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যেও বলে থাকেন। যে সকল কৃষক অল্প জমি চাষাবাদ করেন তারা কখনো কোনো কিছু পান না। মেঘনা নদীতে অনেক কৃষি জমি ভেঙ্গে গিয়ে কৃষি জমির পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। তারপরও কৃষক বেশি বলে নিরীহ অল্প জমির কৃষকদের কোনো কিছু দেয়া হয় না।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভক্ত চন্দ দাস বলেন, পুরো ইউনিয়নে ৩ জনের জায়গায় আমি একা দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমাকে তিনটা ব্লকের দেখাশোনা করতে হয়। আমি তিনটা ব্লকে যাই। অনিয়ম করা হয় না।
উল্লেখ্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সঠিকভাবে তদারকি না করার কারণে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা অনিয়ম করে আসছেন। তাদেরকে মাঠে যাওয়ার বিষয় নিয়ে কাগজে-কলমের প্রতিবেদন না দেখে তদারকি করা হলেই অনিয়ম হতো না। আর কৃষকরা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য পেতো।