বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০

চাঁদপুর মেঘনায় আবারো বালু উত্তোলন ॥ বাল্কহেডে অভিযান, গ্রেপ্তার ৮ সুকানি

মিজানুর রহমান ॥
চাঁদপুর মেঘনায় আবারো বালু উত্তোলন ॥ বাল্কহেডে অভিযান, গ্রেপ্তার ৮ সুকানি

চাঁদপুর জেলার নৌ সীমানার মেঘনা নদীতে নানা কৌশলে আবারো বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে বালুদস্যুরা কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আগে হাইমচর দিয়ে কাটা হতো এখন আবার চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন এলাকায় ৪/৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে যে ব্যক্তি নদীর বালু নিজের সম্পত্তি মনে করে বালু কেটে বিক্রি করেছিলো ওই ব্যক্তি বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ নামে নতুন করে বালু কাটার পত্র নিয়ে এসে রাজরাজেশ্বর বালু কাটছেন বলে এমন কথা শহরজুড়ে বেশ আলোচিত হচ্ছে। নদী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর তাদের ম্যানেজ প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে। আবার লোক দেখানো অভিযানও করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদ নদ-নদীর বালু কেটে বিক্রির টাকায় কতিপয় দুর্বৃত্ত এমনিতেই বিপুল ধন সম্পদের মালিক বনে গেছে। পর্যবেক্ষকের মতে, নদী রাষ্ট্রের অথচ চিহ্নিত দুর্বৃত্ত ব্যক্তি এই বালু উত্তোলন করে নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থান আরো পাকাপোক্ত করে যাচ্ছেন। সরকার হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব। কারণ সর্ষের ভেতর ভূত। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি ভালোভাবে জানেন, কারা এসব করছে। প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট অংশীজন যদি ম্যানেজই না হয়, তারা প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে নদীতে নামার সাহস পায় কোত্থেকে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলসহ স্থানীয় সকল মহলে।

সূত্র জানায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের আপাতত কোনো ইজারা নেই। উচ্চ আদালতকে ব্যবহার করে নদীর বালু দস্যুরা নানা প্রক্রিয়ার বালুকাটার কাগজ নিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে অন্য জেলার নৌ সীমানার বালু কাটার কাগজ দেখিয়েও চাঁদপুর নৌ সীমানায় ঢুকে বালু কাটছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এক্ষেত্রে হাইমচর দিয়ে বরিশাল জেলার, রাজরাজেশ্বর চর এলাকায় শরীয়তপুরের, তারাবুনিয়ায় মুন্সিগঞ্জ জেলার নৌ-সীমানার নাম ব্যবহার করে বালু কাটা এবং বিক্রি করা হয় বলে জানা যায়।

এদিকে চাঁদপুর মেঘনা নদীতে নৌ-পুলিশের নিয়মিত অভিযানে সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের লালপুর নামক এলাকায় সাতটি বাল্কহেড থেকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে আট সুকানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর দুদিন আগেও রাজরাজেশ্বর মিনি কক্সবাজার এলাকা হতে বিভিন্ন বালুর জাহাজের আরো ১২জন সুকানিকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। ৩১ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান।

গ্রেপ্তারকৃত সুকানিরা হলেন : সুকানী মোঃ ইদ্রিস বেপারী (৪২), মোঃ লিটন (২০), মোঃ হেলাল (২০), মোঃ হাফিজুর সিকদার (৪৩), মোঃ বাবুল (৫৫), মোঃ মোক্তার (২৮), সোবাহান রশিদ (৫৮) ও জুয়েল মিয়া (৩৯)। এদের বাড়ি লক্ষ্মীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, আজ ভোর সোয়া ৬টা হতে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসাইন সঙ্গীয় ফোর্সসহ মেঘনা নদীর লালপুর নামক স্থানে সাতটি বাল্কহেডের কাগজপত্র যাচাই করেন। এ সময় বাল্কহেডে সার্ভে সনদ ঝুলিয়ে না রাখাসহ রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রকাশ্য স্থানে উৎকীর্ণ ও সুকানি যোগ্যতা সনদ না থাকায় এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়া নদীপথে বেপরোয়া গতিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাল্কহেড চালানোর কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আট জনের মধ্যে ছয় জনের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারায় মেরিন আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল করা হয় এবং জব্দ বাল্কহেড চালকের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বাকি দুজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়।

সচেতন মহল মনে করছেন, যারা চুরি চামারি বা অন্য যে কোনো প্রক্রিয়ায় সরকার দলের প্রভাব খাটিয়ে নদীতে ড্রেজার বসাচ্ছে, অবৈধভাবে বালু কাটছে এবং বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, ড্রেজারগুলো জব্দসহ এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়