শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
  •   চাঁদপুর সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মান্দারি লোহাগড় গ্রামে দুটি পুকুরে বিষ দিয়ে ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন
  •   গৃহবধূ আসমার খুনিদের বিচারের দাবিতে ফরিদগঞ্জে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
  •   কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ
  •   হাজীগঞ্জের সন্তান অতিরিক্ত ডিআইজি জোবায়েদুর রহমানের ইন্তেকাল

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

হাজীগঞ্জের খোদ্দ গাং-এর মুখে

ব্রীজের সামনে বাঁধ ॥ ইরিগেশনসহ শতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা

কামরুজ্জামান টুটুল ॥
ব্রীজের সামনে বাঁধ ॥ ইরিগেশনসহ শতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা

৩টি ইরিগেশন স্কীম ও শতাধিক গ্রামের পানি ডাকাতিয়া নদীতে নামার একমাত্র খাল। সেই খালের উপর পাকা ব্রীজ। সেই ব্রীজের সামনে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। বাঁধটি এখনই অপসারণ না করলে কিংবা বিকল্প খাল খনন না করলে অতিবৃষ্টি কিংবা আসছে বর্ষা মৌসুমে ইরিগেশন স্কীমসহ শতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এতে করে মাছ চাষসহ মৌসুমী ফসলের অপূরণীয় ক্ষতির শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের কৈয়ারপুল-অলিপুর-উটতলী পাকা সড়কের ডাকাতিয়ার পাড় তথা খোদ্দ গাং-এর এলাকায় বাঁধটি দেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব বৃটিশ নামের একজন। তবে তিনি তাঁর নিজের জমিতে বাঁধ দিয়েছেন এমনটা দাবি করে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আমি যে হালকা বাঁধ দিয়েছি তা পানির তোড়ে টিকবে না।

সরজমিনে দেখা যায়, কৈয়ারপুল-অলিপুর-উটতলী সড়কের উচ্চগাঁ-অলিপুর গ্রামের মাঝে পাকা সড়কের উপর খোদ্দ গাং-এর পশ্চিমণ্ডদক্ষিণ কর্নারে খোদ্দ ব্রীজটি। ব্রীজের পূর্ব পাশের খোদ্দ গাং থেকে শুরু হয়ে ব্রীজের নিচে দিয়ে চলে যাওয়া খালটি চলে গেছে উত্তরে। খালটি উচ্চগাঁ গ্রামের মাঝ ধরে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উচ্চগাঁ মজুমদার বাড়ির সামনে রেলের সেতু হয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের সাতবাড়িয়া এলাকায় সওজের সেতু ধরে খালটি বহু ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। ঐ সকল গ্রামে ৩টি ইরিগেশন প্রকল্প ও শতাধিক গ্রাম রয়েছে। মূলত খোদ্দ ব্রীজের গোড়ার সেই বাঁধটি অপসারণ কিংবা খালটি খনন না করলে চরম বিপাকে পড়বেন সেই সকল গ্রামবাসীসহ তিনটি ইরিগেশন প্রকল্প।

মূলত এই খালটি ধরে বাকিলা ইউনিয়নের ফুলছোঁয়া, সন্না, বোরখাল, নওহাটা, হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সিদলা, বেতিয়াপাড়া, সুবিদপুর, কুচির বিল, উচ্চগাঁ ও অলিপুর এবং চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের মনিহার ও কামরাঙ্গাসহ তৎসংলগ্ন গ্রামের পানি উক্ত ব্রীজের নিচ দিয়ে খোদ্দ গাং হয়ে ডাকাতিয়া নদীতে নামে। এ ছাড়া ফুলছোঁয়া ইরিগেশন স্কীম, বিএডিসির সোলার সিস্টেম ইরিগেশন প্রকল্প, কুচিরবিল ইরিগেশন স্কীমের পানি নিষ্কাশন হয় এই খালটি ধরে।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপরোক্ত গ্রামগুলোর মধ্যে সদর ইউনিয়নের উচ্চগাঁ ও উচ্চগাঁ, অলিপুর ও মনিহার (পূর্বাংশ) গ্রামটি কুমড়া ও মুলা চাষের জন্য দেশব্যাপী খ্যাতি (সুনাম) রয়েছে। খননের অভাবে খোদ্দ গাংটি গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রায় মৃত হয়ে পড়ে। তারপরও কৃষকরা এ গাংয়ের সুফল ভোগ করে থাকেন। সম্প্রতি ব্রীজের পূর্ব পাড় থেকে খোদ্দ গাংয়ের ভিতরে খালটির প্রায় অর্ধেক দখল করে একটি বাঁধ নির্মাণ করেছেন আব্দুল মোতালেব বৃটিশ নামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এতে গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ বন্ধ ও আসছে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন বাধার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এই সকল কৃষকসহ স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন। তারা বাঁধটি অপসারণ করে পানি প্রবহমান রাখা ও খোদ্দ গাং খননের দাবি জানিয়ে আরো বলেন, গাংটি খনন হলে উপকৃত হবে কয়েক হাজার কৃষক।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব বৃটিশ বলেন, যে অংশে আমি বাঁধ দিয়েছি সেখানে আমার ব্যক্তিগত ক্রয় ও উত্তরাধিকার সূত্রে ৩ একরেরও বেশি সম্পত্তি (ভূমি) রয়েছে। আমি কৃষকদের সুবিধার্থে তাদের সেচ কাজের জন্য এবং গাংয়ে পানি রাখার জন্য ব্যক্তিগতভাবে অনেক চেষ্টা করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। এতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে, এখনো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি যে বাঁধ দিয়েছি তা বেশি পানিতে ভেঙ্গে যাবে।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) মোঃ আবুল বাশার জানান, খাল দখল করে বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দিলরুবা খানম বলেন, নিজের সম্পত্তি হলেও কেউ পানি প্রবাহের পথ বন্ধ করতে পারবে না। সরকারি খালে কেউ বাঁধ বা রাস্তা তৈরি কিংবা স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবো। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়