বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

জেলা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির সভা

আনন্দ বাস চলাচল অবৈধ ॥ শহরের যানজট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥
আনন্দ বাস চলাচল অবৈধ ॥ শহরের যানজট নিয়ে ব্যাপক আলোচনা

চাঁদপুর জেলা যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির এক সভা বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক ও এই কমিটির সভাপতি কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসার পরিচালনায় সভার শুরুতেই বিগত সভার সিদ্ধান্তসমূহ পড়ে শুনানো হয়। পরে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে ছিলো-চাঁদপুর বিআরটিএর তথ্য মতে, লক্ষ্মীপুর টু চাঁদপুর চলাচলকারী বাস আনন্দ পরিবহন অবৈধভাবে চলাচল করছে। চাঁদপুরে চলাচলের ক্ষেত্রে তাদের কোনো বৈধতা নেই। কিন্তু বছরের পর বছর এসব বাস নোয়াখালী, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর হয়ে চাঁদপুরে বাধাহীনভাবে চলছে। আনন্দ পরিবহনের ১৪/১৫টি বাস চাঁদপুরে প্রবেশ করে বলে সভাকে অবহিত করেন বিআরটিএ কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বিআরটিএর কর্মকর্তা ও ট্রাফিক পুলিশদের নির্দেশ দেন, এসব গাড়ি তাদের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে যেনো আগামীতে চলাচল করে। তিনি বলেন, শুধু নোয়াখালী লক্ষ্মীপুরের রুট পারমিটের অনুমতি থাকলে সেগুলো সেসব সড়কে চলবে। আর চাঁদপুরের সাথে এখানের যাত্রী সাধারণের চাহিদা থাকলে চাঁদপুরেও চলবে, কিন্তু অবৈধভাবে নয়। তাই এ ক্ষেত্রে আইনতঃ যা করার সেটি দেখা হবে।

সভায় দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয়ে জানানো হয়, চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট এলাকা থেকে মতলব হয়ে ঢাকার সাথে জৈনপুর এক্সপ্রেস ও জৈনপুর পরিবহন নামের বাসসহ অন্যান্য শহর অভিমুখি কিছু যানবাহন যত্রতত্র বা ফিলিং স্টেশনগুলোর সামনে অবৈধ পার্কিং করার ফলে সড়কপথে চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। জেলা প্রশাসক নিজেও বলেন, এ রকম দুর্ভোগের শিকার আমাদের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ গাড়িগুলোও হচ্ছে। এ সময় সভায় উপস্থিত ট্রাফিক পরিদর্শক মাহফুজ মিয়া জানান, এই বাসগুলো বাবুরহাট মোড় এলাকা ও মতলব অভিমুখী সড়কের দু' পাশ দখল করে রাখে বেশিরভাগ সময়ে। আর এসবের জন্যে ট্রাফিক পুলিশকেও বেগ পোহাতে হয়। যানজট সৃষ্টি হয়। আমরা চেষ্টা করি, কিন্তু এদের আয়ত্বে নেয়া কঠিন। এ সময় সভাপতি জেলা প্রশাসক বলেন, এদের এসব অনিয়ম বিশৃঙ্খলা দূরীকরণে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামনে এসব করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এদের আইনের আওতায় আনতে যা করণীয় তাই করা হবে। সড়কে বাধা বা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে কোনো যানবাহনই চলতে দেয়া যাবে না।

এদিকে হাজীগঞ্জ থেকে কচুয়া গৌরীপুর হয়ে ঢাকার সাথে চলাচলকারী সুরমা বাসে সরকারের ধার্য্যের চেয়েও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় হয় বলে সভায় জানান বিআরটিএ কর্মকর্তা। তিনি সভাকে জানান, তিনি নিজেও টিকিট কেটে এর সত্যতা পেয়েছেন। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে কোনোভাবেই যাত্রী হয়রানি করা যাবে না। সুরমা বাসের এই অতিরিক্ত ভাড়া খুব দ্রুত তাদের নিজেদেরই বন্ধ করতে হবে। এছাড়া এগুলোর জন্য আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত যে কোনো সময়ই ব্যবস্থা নেবে।

সভায় চাঁদপুর শহরের তীব্র যানজটের বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। দিনের বেলা শহরে ট্রাক চলাচল, অসংখ্য ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, তেলের গাড়ি, ব্যাটারিচালিত রিক্সাসহ নানা প্রকার যানবাহন শহরবাসীকে দিনদিনই চলাচলে দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। পৌর মেয়র রাস্তা প্রশস্তকরণে হাত দেয়ায় এ পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতির দিকে যাবে বলে দৃশ্যমান হওয়ার কথা। কিন্তু বাড়তি যানবাহন বিশেষ করে তিন চাকার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশায় সয়লাভ হয়ে যাচ্ছে শহর। এছাড়া মেথারোডস্থ (বিএনপি অফিস সংলগ্ন) জরাজীর্ণ পাকা ব্রিজ এলাকা, কালিবাড়ি, মিশন রোড, চিত্রলেখা, মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, জয়বাংলা ( শপথ চত্বর) ম্যুরাল, বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল এলাকা, পালবাজার মোড় ব্রিজ এলাকাসহ শহরের সর্বত্রই দিনরাত যানজট লেগেই আছে। সভায় বলা হয়, পৌরসভা এলাকায় গ্রামগুলো থেকেও ইজিবাইক চলে আসছে। চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস বলেন, আমাদের পৌরসভা থেকে নিয়মানুযায়ী ইজিবাইকের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে। বাড়তি ইজিবাইক বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসে।

সভায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশন নতুন করে না দেয়ার জন্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জেলা প্রশাসক বলেন, যানজটের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটি, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাসহ নানা সভায় জোরালো আলোকপাত করা হয়। তিনি বলেন, পৌর মেয়রের সাথে সমন্বয় করে আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে শহরের যানজট নিরসন করা যায়। চাঁদপুর সিএনজি স্টেশন, ইজিবাইকসহ অন্যান্য স্থায়ী স্টেশনগুলো কীভাবে করা যায় তা নিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সভায় বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মমিন মিয়া, এ কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, ট্রাক ও ট্যাংক লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়