প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
হাজীগঞ্জে বৃহস্পতিবার উচ্ছেদকৃত ১৬ পরিবারের পাশে মানবিক সহায়তায় দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এর আগে উপজেলার বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহারা গ্রামের গাজী বাড়িতে গত ২৮ আগস্ট সোমবার আদালতের নির্দেশক্রমে ডিক্রিপ্রাপ্ত ২ একর ৪৭ শতাংশ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয় পরিবারগুলোকে। এ দিন ১৬টি পরিবারের মাঝে নগদ ১০ হাজার টাকা ও খাবার সামগ্রী (৩০ কেজি চালসহ ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ, আলু, হলুদ ও মরিচ ইত্যাদি) বিতরণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রাশেদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার ৩১ আগস্ট বিকেলে ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মোঃ ফারুক, মোঃ মহোসিন, আনোয়ার হোসেন, আমির হোসেন, রমজান আলী, আলম গাজী, শরিফ গাজী, জামাল হোসেন, কামাল হোসেন, খোরশেদ আলম, আব্দুল লতিফ, মফিজুল ইসলাম, আব্দুল মন্নান, সাদ্দাম হোসেন, ফারুক গাজী ও ইসমাইল হোসেন এবং তাদের পরিবারের হাতে নগদ টাকা ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন।।
জানা যায়, নাটেহারা গ্রামের গাজী বাড়ির আবু তাহের ও ফিরোজ গাজী ২ একর ৪৭ শতাংশ ভূমি উদ্ধারে আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে আদালত তাদের পক্ষে রায় দেয়। পরে তাদের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ মামলা করা হয়। ওই মামলায় আদালতের নির্দেশক্রমে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গত ২৮ আগস্ট দুপুরে উল্লেখিত ভূমি থেকে বর্তমানে বসবাসরতদের উচ্ছেদ করে তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরপর উচ্ছেদকৃত উল্লেখিত পরিবারগুলো বাস্তুহারা হয়ে পড়ে। তাদের সবাই খেটে খাওয়া দিনমজুর। উচ্ছেদের দিন থেকে তাদের মধ্যে কেউ মসজিদে রাত্রিযাপন, কেউ পাশের বাড়ি ও কেউ নিকট আত্মীয়-স্বজনের বসতঘরে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে তাদের ঘরের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে। ১৬টি পরিবারে থাকা শতাধিক লোকজনের মানবেতর জীবন-যাপনের বিষয়টি জানতে পারে জেলা প্রশাসন।
এরপর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার ৩১ আগস্ট বিকেলে নগদ টাকা ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে ওই বাড়িতে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম। তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো সদস্যদের সাথে কথা বলেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্তদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সম্পত্তি ফিরে পাওয়ার দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, আদালতের নির্দেশক্রমে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো মতামত নেই। আপনাদের যদি কিছু বলার থাকে আপনারা আদালতে যেতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, আপনাদের যদি কারো জায়গা (ভূমি) থাকে, তাহলে আমরা ঘর করার জন্য টিন দিবো। আর যদি কারো জায়গা না থাকে, তাহলে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।