প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩, ০০:০০
নিখোঁজের ৫ দিন পর সোহানের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
![নিখোঁজের ৫ দিন পর সোহানের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার](/assets/news_photos/2023/05/20/image-33195-1684589892.jpg)
আদিল মোহাম্মদ সোহান। বয়স আট বছর। পৌর এলাকার পূর্ব বড়ালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছিলো ছোট। পরিবারের সকলের আদরের। প্রতিদিনই বাড়ির সামনের মসজিদে নামাজ পড়তে যেতো। নামাজ পড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসতো। গত সোমবার মাগরিবের নামাজের পর নিখোঁজ হয়। তবে শুক্রবার সে ফিরলো লাশ হয়ে। এভাবে আদরের সন্তানকে অর্ধগলিত অবস্থায় ফিরতে হবে তা কখনো ভাবিনি। নিহত সোহানের বাবা আনোয়ার হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন এ কথা। সোহানের মা ফাতেমা বেগম নিজ সন্তানের মরদেহ উদ্ধারের সংবাদ পেয়েই চিৎকার দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন, আর ছেলে হত্যার বিচার প্রার্থনা করেন।
শুক্রবার (১৯ মে) সকালে নিখোঁজের ৫দিন পর আদিল মোহাম্মদ সোহান (৮)-এর অর্ধগলিত মরদেহ পুলিশ পৌর এলাকার রুদ্রগাঁও গ্রামে তার বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত জমি থেকে মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করে। এদিকে মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পুলিশ বিভাগের সকল টিম একত্রে হয়ে কাজ করছে। মৃতদেহ উদ্ধারকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি দেবনাথ, সিআইডি, ডিবি, পিআইবি ও পুলিশ সদস্যরা।
জানা যায়, গত সোমবার (১৫ মে) সোহান প্রতিদিনের ন্যায় গ্রামের বাড়ির একটু সামনের রুদ্রগাঁও বায়তুল আমান জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়তে যায়। নামাজ শেষে সময় মতো বাড়িতে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশী, স্বজন ও সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে শিশুটির বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় জিডি করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রিকায় শিশুটির সন্ধানে ব্যাপক প্রচারণা চলে।
পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার (১৯মে) সকালে ওই বাড়ির বৃদ্ধা নারী রেনু বেগম (৭০) বাড়ির পাশের একটি গাবগাছ থেকে গাব সংগ্রহ করতে গেলে দুর্গন্ধ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছি দেখে চিৎকার করে। পরে প্রতিবেশীরা এসে লাশ-পচা দুর্গন্ধ বুঝতে পেরে দ্রুত পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থলের আশপাশের বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। শিশু সোহানের দুর্গন্ধযুক্ত লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন নি।
স্থানীয়রা জানান, সোহানের বাবা আনোয়ার হোসেন একজন দিনমজুর। যখন যেই কাজ পায়, সেই কাজ করেন। তাদের জমি সংক্রান্ত ছাড়া অন্য কোনো ঝামেলা থাকতে পারে হয়তোবা। কিন্তু এর বলি শিশু হবে কেন? অথবা কী কারণে শিশুটিকে হত্যা করা হলো তার রহস্য উদযাটন করা প্রয়োজন। একই সাথে দোষীদের দ্রুত আটক ও বিচার দাবি করেন তারা।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবদুল মান্নান বলেন, শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়না তদন্তে হত্যার কারণ জানা যাবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।