শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
  •   চাঁদপুর সদরের শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের মান্দারি লোহাগড় গ্রামে দুটি পুকুরে বিষ দিয়ে ১৫ লাখ টাকার মাছ নিধন
  •   গৃহবধূ আসমার খুনিদের বিচারের দাবিতে ফরিদগঞ্জে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
  •   কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভিযোগ
  •   হাজীগঞ্জের সন্তান অতিরিক্ত ডিআইজি জোবায়েদুর রহমানের ইন্তেকাল

প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৩, ০০:০০

রত্নগর্ভা সম্মাননা পেলেন ফরিদগঞ্জের রওশন আরা
প্রবীর চক্রবর্তী ॥

একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতি হিসেবে ৩৬ নারীকে ‘রত্নগর্ভা মা’ পদক দিলো আজাদ প্রোডাক্টস। এর মধ্যে ১১ নারীকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে এবং ২৫ নারীকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে এই পদক দেয়া হয়। ১৪ মে রোববার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড-২০২২-এর আয়োজন করে আজাদ প্রোডাক্টস। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রত্নগর্ভা মায়েদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সাধারণ ক্যাটাগরিতে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ বড়ালী গ্রামের রওশন আরা এই পদক পেলেন।

ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার বড়ালী গ্রামের সাবেক বিডিআর, বর্তমান বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ বিজিবি'র সাবেক হিসাবরক্ষক মরহুম মোঃ আবুল হোসেনের স্ত্রী মিসেস রওশন আরা।

রওশন আরার প্রথম সন্তান মোঃ রফিকুল ইসলাম, বিএসসি, এমএসসি সম্পন্ন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি পড়েছেন ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা নিয়ে। তিনি একজন পরিবেশবিদ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তিনি বিশ্বের অন্যতম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আমাজন লজিসটিকস, জার্মানীতে কর্মরত আছেন।

দ্বিতীয় সন্তান শামছুন্নাহার, তিনি বিএসসি, এমএসসি, এমপিএস (মাস্টার্স অফ পুলিশ সায়েন্স) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি ৩৩তম বিসিএস-এর একজন কর্মকর্তা। সম্প্রতি তিনি জাতিসংঘ মিশনে বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি বর্তমানে ৫ এপিবিএন, উত্তরা, ঢাকায় কর্মরত।

তৃতীয় সন্তান মোঃ শফিকুল ইসলাম কৃতিত্বের সাথে বিএসসি, এমএসসি সম্পন্ন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর দ্বিতীয় এমএসসি এবং পিএইচডি করেছেন মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানি থেকে। তাঁর পিএইচডির গবেষণার বিষয় জিনোম সিকোয়েন্সিং। তার পিএইচডি গবেষণার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান অপেক্ষমান রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিখ্যাত নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান মাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউট, জার্মানিতে সিনিয়র বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত। পাশাপাশি সিইও হিসেবে আছেন ওয়াইল্ডমেন্টর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানে।

চতুর্থ সন্তান নূরজাহান বেগম, বিএ, এমএ সম্পন্ন করার পর উদ্যোক্তা হয়েছেন। ভূঁইয়া এন্টারপ্রাইজের পরিচালক তিনি। এটি তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বিভিন্ন নারী উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত আছেন।

পঞ্চম সন্তান মোঃ জহিরুল ইসলাম। এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি ৩৯তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। বর্তমানে প্রেষণে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে এমডি (কার্ডিওলজি) কোর্সে আছেন। এছাড়া তিনি এফসিপিএস (মেডিসিন)-এর শেষপর্বে আছেন এবং এমআরসিপি (লন্ডন)-এর দুটি পর্ব সম্পন্ন করেছেন।

এছাড়া পরিবারে বড় ছেলের স্ত্রী লীন শারমিন আসমিনা বিশ্বাস রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, ঢাকা ব্রাঞ্চের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। বড় মেয়ের জামাতা জামাল হোসেন খান ব্যাংকার। এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডে কর্মরত আছেন ঢাকায়। মেজো ছেলের স্ত্রী জান্নাতুল রাফেয়া একজন মাইক্রোবায়োলজিস্ট। তিনি ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানির একজন গবেষক। ছোট মেয়ের জামাতা মোঃ মিজানুর রহমান স্বপন একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছেন। নাবা প্রোপার্টির পরিচালক ও কর্ণধার। এছাড়া সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত আছেন তিনি।

রওশন আরা নিজেও একজন রত্নগর্ভা মায়ের সন্তান। তাঁর বড় ভাই আলিফ খান তৎকালীন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন ছিলেন। পাকিস্তান আমলে ফরিদগঞ্জের প্রথম কমিশন্ড অফিসার ছিলেন তিনি।

রওশন আরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের কড়ৈতলী গ্রামের শরাফত আলী খাঁ ও বদরুন্নেসা দম্পতির অষ্টম সন্তান হিসেবে ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপটে অদম্য স্পৃহা থাকা সত্ত্বেও মেধাবী এই মা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ালেখা চলাকালীন সময়েই ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বড়ালী গ্রামের মোঃ কলি মিয়া মিয়াজী ও অজুফা খাতুনের দম্পতির ছোট ছেলে বিজিবির সাবেক হিসাবরক্ষক মোঃ আবুল হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিশোরী এই পুত্রবধূ স্বপ্ন দেখতেন নিজের সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে দেশ ও জাতির জন্য অবদান রাখবেন। একজনের সীমিত আয়ের সংসার যৌথ সংসার, শ্বশুর-শাশুড়ি সব কিছুকে সামলিয়ে একক নৈপুণ্যে পরম মমতায় সন্তানদের বড় করে তুলেছেন। পাঁচ সন্তানদের সবাইকে উচ্চণ্ডশিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়