শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৩, ০০:০০

নিজেই পরীক্ষার হলে নকল সরবরাহ করেন ॥ পরীক্ষার্থী মেয়ের কাছে প্রতিদিন যান
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

অধ্যক্ষ নিজে পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করেন। তার নিজের মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। মেয়ের কাছে প্রতিদিন যান, নিজে তাকে নকল দেন, পরীক্ষার খাতাও নিজে দেখে দেন। এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে যাচ্ছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী খাজা আহমদ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম। চলতি দাখিল পরীক্ষায় তিনি এই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন পরীক্ষার শুরু থেকে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা ছামাদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে কড়ৈতলী মাদ্রাসাসহ উপজেলার ১৭টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এই কেন্দ্রের ভেন্যু কেন্দ্র হচ্ছে চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয়। নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার দায়িত্বে নেই এমন কেউ কেন্দ্রে থাকতে পারবেন না। কিন্তু কড়ৈতলী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এই নিয়ম মানছেন না। তিনি প্রতিদিন পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে থাকছেন, হলের ভেতরে যাচ্ছেন, নিজের মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীদের নকল সরবরাহ করছেন। যেখানে তার মেয়েও পরীক্ষার্থী রয়েছে। আর এ কাজটি তিনি খুব সাবধানতার সাথে প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে করে থাকেন। তিনি যে পরীক্ষার কেন্দ্রে আছেন তা তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকারও করেছেন।

কড়ৈতলী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ যে পরীক্ষার শুরু থেকেই এমন অনৈতিক কাজ করে আসছেন তা স্থানীয় অনেকের কাছ থেকে প্রথম থেকেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির এই লোককে প্রমাণ ছাড়া ধরা যাবে না। সংবাদ কর্মীরা অপেক্ষায় থাকেন প্রমাণের জন্যে। ভিডিও ফুটেজসহ প্রমাণ চলে আসে সংবাদ কর্মীদের হাতে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম কেন্দ্রে ঢুকে সিঁড়ি বেয়ে ঠিক যেই কক্ষে তার মেয়েসহ নিজের মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে সেই কক্ষে চলে যাচ্ছেন। পাশে দাঁড়িয়ে পরীক্ষার্থীদের বলে দিচ্ছেন। তখন পুরো কক্ষে শোরগোল শোনা যায়। অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের যে মেয়ে চান্দ্রা কেন্দ্রে এবার দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছে তার নাম হলো উম্মে হানি, পিতা রফিকুল ইসলাম, মাতা ফাতেমা বেগম, পরীক্ষার্থী কড়ৈতলী মাদ্রাসা, রোল ২৭৩৪০৩, রেজিঃ ২০১৮৬২৬৮০৩।

অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম যে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রতিদিন যান তার প্রমাণ হলো তিনি পরীক্ষা চলাকালীন একদিনও নিজের মাদ্রাসায় উপস্থিত ছিলেন না। অথচ তিনি ছুটি ছাড়া কোনো কারণেই মাদ্রাসায় টানা অনুপস্থিত থাকতে পারেন না। অবশ্যই শিক্ষক হাজিরায় তার প্রমাণ মিলবে না। কারণ তিনি পরে মাদ্রাসায় গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নেন।

এদিকে কেন্দ্রে তার উপস্থিতির ভিডিও ফুটেজ এই প্রতিবেদকের কাছে আসার পর গত বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদক পরীক্ষা চলাকালীন অর্থাৎ সকাল ১১টায় তাকে ফোন দিয়ে জানতে চান তিনি কোথায় আছেন? জবাবে তিনি বলেন, আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে আছি। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় আপনি কি কেন্দ্রের কেনো দায়িত্বে আছেন? জবাবে তিনি বলেন, না কোনো দায়িত্বে নেই, এমনেই কেন্দ্রে থাকি। দায়িত্বে না থাকলে কীভাবে আপনি কেন্দ্রে থাকেন এ কথা জিজ্ঞেস করার পরপর তিনি কল কেটে দেন। এরপর যতবার তাকে কল করা হয় তিনি রিসিভ করেন নি।

এ বিষয়টি সেদিনই ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে সাথে সাথে তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রে তাঁর লোক পাঠান অধ্যক্ষের খোঁজে। কিন্তু তাকে পাওয়া যায় নি। তিনি এই প্রতিবেদকের ফোন পাওয়ার পরই ওই এলাকা থেকে সটকে পড়েন। এমনকি ইউএনও তাকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি বলে ইউএনও জানান। তবে এ বিষয়টি ইউএনও কঠোরভাবে দেখবেন বলে জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়