রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩, ০০:০০

নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার পরেই ধসে পড়লো মাদ্রাসার পুকুর ঘাটলা
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥

নির্মাণকাজ শেষে ভেঙ্গে পড়েছে সরকারি অর্থে নির্মিত মাদ্রাসার পুকুর ঘাটলা। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঠিকাদার কর্তৃক রাতের আঁধারে ধসেপড়া পুকুর ঘাটলার রড, ইট-কংক্রিটসহ অন্যান্য আলামত সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে মতলব দক্ষিণ উপজেলার পূর্ব ধলাইতলী গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঁড়ি ঢালাই দেয়ার পর সম্পূর্ণ ঘাটলাটি মাটিতে ধসে পড়ে। এলাকাবাসীর দাবি রাতের আঁধারে তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের কাজের কারণে পুকুর ঘাটলাটি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্ব ধলাইতলি দাখিল মাদ্রাসার জন্যে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে পাকা ঘাটলা নির্মাণে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক এডিবি প্রকল্পের আওতায় দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এটির নির্মাণের জন্য কাজটি পান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মনির হোসেন বকাউল।

এদিকে পাকা ঘাটলা নির্মাণে স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। ওই কমিটির সভাপতি করা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সোহেল হোসেন রিয়াদ এবং সেক্রেটারি করা হয় ঠিকাদার তথা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বকাউলকে। এই কমিটির অন্য ৩ সদস্য হলেন : মাসুদ পারভেজ, মাওলানা জয়নাল আবদীন ও বাবুল মেম্বার।

গত বৃহস্পতিবার রাতে তড়িঘড়ি করে নির্মাণাধীন পুকুর ঘাটলার সিঁড়ির ঢালাই দেয়া হয়। ঢালাই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো ঘাটলাটি ধসে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কজন এলাকাবাসী জানান, পুকুর ঘাটলা ভেঙ্গে পড়ার খবর পেয়ে ঠিকাদার মনির হোসেন বকাউল ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তিনি লোকজন নিয়ে ধসে পড়া ইট, কংক্রিট এবং রড সিমেন্টগুলো সরিয়ে ফেলেন।

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জানান, ঘাটলা নির্মাণ ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়ম করা হয়েছে। সিমেন্ট কম দেয়ার পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে পুরাতন রড। প্রতিটি পিলারে সাধারণত ৪টি করে রড দেয়ার কথা থাকলেও কোনো কোনো পিলারে ১/টি ২টি করে রড দেয়া হয়েছে। রাতের অন্ধকারে কাজ করায় আমাদের সন্দেহ সিঁড়িতে রডের পরিবর্তে হয়তো বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে ঢালাই করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে পুরো ঘাটলা ধসে পড়েছে।

এ বিষয়ে পুকুর ঘাটলা নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সোহেল হোসেন রিয়াদ বলেন, আমি এ কাজের সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে সভাপতি বানিয়ে দিয়েছেন। যে রাতে সিঁড়িগুলো ঢালাই দেয়া হয়, তখন আমি সেখানে ছিলাম না। রাতে সিঁড়ি ঢালাই করা হলো কেনো সেটি নিয়েও আমি প্রশ্ন তুলেছি। পুকুর ঘাটলা নির্মাণে কোনো অনিয়ম ছিল কিনা সেটি ঠিকাদার ভালো জানেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনির হোসেন বকাউল বলেন, ঘাটলাটি নির্মাণে আমি পরিমাণ মত সবই দিয়েছি। কিন্তু কেনো ধসে পড়েছে আমি জানি না, এটা আমার কপালে নেই। ভাগ্য খারাপ, এছাড়া আমি আর কিছু বলতে চাই না।

ঘাটলা ধসে পড়ার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, কাজে অনিয়ম হয়েছে তাই তো ঘাটলা ধসে পড়েছে, আপনারা নিউজ করেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে মতলব দক্ষিণ উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ঘাটলা ধসে পড়েছে এই বিষয়টি আমি অবগত নই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়