প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩, ০০:০০
কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের নলুয়া বাজারে অবস্থিত ‘হাজী ইদ্রিস মুন্সি শিশু সদন’ এতিমখানা পরিচালনায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এই এতিমখানায় সর্বমোট ৬০ জন এতিম, দুঃস্থ ও অসহায় ছাত্র-ছাত্রী থাকতে হবে। এতিমদের সপক্ষে এতিম/দুঃস্থ মর্মে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র থাকার কথা। ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এতিমদের জন্যে মোট ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা দুই কিস্তিতে পাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি। বৃহস্পতিবার (৪ মে) উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুল ইসলাম উক্ত প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শনে গেলে তিনি ১৪ জন ছাত্র এবং ২ জন ছাত্রীর উপস্থিতি পান মাত্র। পরিদর্শনকালে প্রধান শিক্ষক মোঃ কাউসার ও তত্ত্বাবধায়ক আলী হোসেন উপস্থতি ছিলেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ‘উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কচুয়া’ পেজে ‘হাজী ইদ্রিস মুন্সি সদন এতিমখানা পরিদর্শন’ নিয়ে তথ্য ও ভিডিওসহ একটি পোস্ট দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুল ইসলাম। পোস্টটি মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হলে অজ্ঞাত কারণে কিছুক্ষণ পর পোস্টটি আর পেইজে দেখা যায়নি।
‘হাজী ইদ্রিস মুন্সি শিশু সদন’ প্র্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক আলী হোসনের নিকট শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, স্থানীয় একটি অনুষ্ঠানে এক শিক্ষক সহ অন্য ছাত্ররা দাওয়াতে গেছে।
প্রধান শিক্ষক মোঃ কাউছার জানান, বর্তমানে এতিম শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২ জন এবং ক’জন ছুটিতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ নাহিদুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার নলুয়ায় অবস্থিত হাজী ইদ্রিস মুন্সি শিশু সদন এতিমখানা পরিদর্শনে যাই। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পোশাক অপরিচ্ছন্ন, এতিমখানার খাবারের মেন্যু দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে না রাখা, রান্নাঘর অপরিচ্ছন্ন, গোসলখানা ও টয়লেট অপরিচ্ছন্ন পাওয়া যায়। সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক ক্যাপিটেশন গ্র্যান্টপ্রাপ্ত নতুন সাইন বোর্ড কোনোরকম দায়সারাভাবে ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। নীতিমালা অনুসারে ৬০জন শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও হাজিরা খাতায় ৩০ জনের নাম ও ২৭ জনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। ভর্তি ফর্মে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩০ জন ছবিযুক্ত পাওয়া যায়। ছবিসহ এতিম/দুঃস্থ ছাত্র-ছাত্রীর তালিকায় ৩৮ জনের নামের তালিকা পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার এ.কে.এম. আবদুল মোতালবের মোবাইল ফোনে এতিমখানার সকল অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ একটি কাজে তিনি ঢাকা অবস্থান করছেন। কিছুদিনের মধ্যে কচুয়ায় আসলে পরিদর্শনকারী কর্মর্কতার সাথে দেখা করে বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। পরিদর্শনকালে উপজেলা সমাজসবো র্কমর্কতার সাথে উপস্থিত ছিলেন অফিস সহকারী সাব্বির আহম্মদে মজুমদার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া পোস্টটি ডিলেট হওয়া প্রসঙ্গে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাহিদুল ইসলামের নিকট জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বার বার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।