মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষ
বিমল চৌধুরী ॥

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ ও সুধীজনদের ব্যাপক অংশগ্রহণে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাদ্য-বাজনা, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে চাঁদপুর জেলা শহরে উদযাপিত হয়েছে প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।

বাংলা নববর্ষের প্রথমদিন সকালে (১৪ এপ্রিল শুক্রবার) চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অতিক্রম করে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের মূল স্থান চাঁদপুর প্রেসক্লাব সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীর উন্মুক্ত তীরবর্তী স্থানে গিয়ে শেষ হয়। এ স্থানেই অনুষ্ঠিত হয় বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, যে উৎসবে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে তা হলো পহেলা বৈশাখ। সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষ। পুরাতনকে পেছনে ফেলে আজ আমরা বরণ করে নিচ্ছি ১৪৩০ বাংলাকে। প্রতিটি দেশের কিছু কিছু নিজস্ব ঐতিহ্য ও কৃষ্টি রয়েছে, যা বিশ্বে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। আমাদেরও এমন কিছু সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে, যা নিয়ে আমরাও গর্ব করতে পারি। আমাদের দেশে এমন ৪টি ঐতিহ্য রয়েছে, যা ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃত। এর মধ্যে রয়েছে বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাউল গান, জামদানি শাড়ির নকশা ও শীতল পাটির কারুকাজ।

পহেলা বৈশাখকে সার্বজনীন উৎসব আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এদিনটিতে আমাদের সকলের মাঝেই ফুটে উঠে বাঙালিয়ানা ভাব। বাঙালির এই ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। বাংলা নববর্ষে আমরা সার্বজনীন সম্প্রীতি খুঁজে পাই। তিনি আগামীতে ব্যাপকভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ইমতিয়াজ হোসেনের সভাপ্রধানে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী মিজানুর রহমান, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বাবু।

উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বশির আহমেদ, পুলিশ সুপারের সহধর্মিণী পুনাকের সভানেত্রী ডাঃ আফসানা শর্মী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, (সদর সার্কেল) ইয়াছির আরাফাত, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রশিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অজয় কুমার ভৌমিক, ছড়াকার ও লেখক পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, শরীফ চৌধুরী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবু, গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্বাস উদ্দিন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের জেলা সভাপতি তপন সরকার, বিশিষ্ট নারী সংগঠক মাহমুদা খানম, মুক্তা পীযূষ প্রমুখ।

চাঁদপুরের কৃতিমান সাংস্কৃতিক শিল্পীদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া পাতিলভাঙ্গা, মোরগ ধরা, তৈলাক্ত কলাগাছে উঠা, হাতল না ধরে বাঁশের সাঁকো পারাপার ও বালিশ খেলাসহ গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ীদের মাঝে জেলা প্রশাসকসহ অতিথিবৃন্দ পুরস্কার বিতরণ করেন।

নববর্ষ উদযাপনে এদিন ডাকাতিয়ার উন্মুক্ত স্থান সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় রূপান্তরিত হয়। উপস্থিত একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নিজেদের বন্ধুত্বপূর্ণভাব প্রকাশ্যে কোলাকুলির মাধ্যমে বাঙালিয়ানা ভাব প্রকাশ করেন। কামনা করেন নতুন বছরের সুখণ্ডশান্তি আর সম্প্রীতি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়