প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২২, ০০:০০
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চাঁদপুর জেলা শাখার আয়োজনে চাঁদপুরে ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার চাঁদপুর হাসান আলী হাইস্কুল মাঠে এই তাফসির মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বেলা আড়াইটায় শুরু হয়ে রাত ৭টায় মাহফিল শেষ হয়। হাজার হাজার মুসল্লি এই তাফসির মাহফিলে অংশ নেন।
মাহফিলে তাফসির পেশ করেন এবং বয়ান রাখেন আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলার শায়খ ড. সাইফুল আজম বাবর আজহারী, আওলাদে রাসুল আল্লামা সাইয়্যেদ মাখদুম শাহ্ আল-মাদানী, আল্লামা ড. সাইফুল ইসলাম আজহারী ও মুফতি গিয়াসউদ্দিন তাহেরি। সভাপতিত্ব করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত চাঁদপুর জেলার সভাপতি ড. একেএম মাহবুবুর রহমান। আলোচকগণ পবিত্র কোরআন মাজিদের আয়াত নিয়ে সেখান থেকে তাফসির পেশ করেন এবং তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেন।
ওলামায়ে কেরাম বলেন, আল-কোরআন যে মুজিযা তার প্রমাণ কোরআন নিজেই। খোদার সৃষ্টি জগতের যতো রকমের জ্ঞান-বিজ্ঞান রয়েছে, সব কিছুতেই কোরআনের প্রবেশ দ্বার দিয়েই ঢুকতে হয়। কোরআন এমন গ্রন্থ যাকে বলা হয়েছে আল-কিতাব। যার মধ্যে বিন্দুমাত্র সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ নেই। কারণ স্রষ্টার কালাম হলো কোরআন। এই কোরআনের ওজন এতো বেশি যে পাহাড় তাকে বহন করার সাহস পায় নি। সেই কোরআন মানুষের বক্ষে ধারণ করার জন্য মনোনীত তিনিই করেছেন, যাঁর কালাম এই পবিত্র কোরআন। আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মনোনীত করেছেন পবিত্র কোরআনকে বক্ষে ধারণ করার জন্যে। তাই কোরআন যেমন মুজিযা, কোরআন যাঁর উপর নাজিল হয়েছে তিনিও মুজিযা। কোরআন হচ্ছে নূর, আর এই কোরআন যাঁর উপর নাজিল হয়েছে তিনিও হচ্ছেন নূর। তাই এই নূরময় কোরআনের তাফসির করতে হলে নূরের দৃষ্টিতে করতে হবে। বক্ষে নূরময় ইলম থাকতে হবে। ওলামায়ে কেরাম বলেন, পৃথিবীতে সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত প্রায় চারশ’ ভাষার সৃষ্টি হয়েছে।
সকল ভাষার পরিবর্তন-বিবর্তন হয়েছে। একমাত্র পরিবর্তন বা কোনো ধরনের বিবর্তন হয় নি আরবি ভাষার। তা কী জন্য! তার একমাত্র কারণ, কোরআন আরবি ভাষায়। তাই আরবি ভাষার কোনো পরিবর্তন হয় নি। এটাও কোরআনের অন্যতম মুজিযা।
ওলামায়ে কেরাম বলেন, কোরআন শুরু হয়েছে সূরাতুল বাকারাহ দিয়ে, আর শেষ হয়েছে সূরাতুন নাস দিয়ে। বাকারাহ অর্থ গাভী। আল্লাহ পশু দিয়ে কোরআন শুরু আর নাস মানে মানুষ দিয়ে শেষ কেনো করলেন? তার রহস্য কী! এ বিষয়গুলো হলো কোরআনের তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাখ্যা। আর এসব ব্যাখ্যাই হলো তাফসির। বক্তাগণ বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রে আমাদের জন্য অনুকরণীয় একমাত্র আদর্শ হবে রাহমাতুল্লিল আলামিন মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার আদর্শ। তাঁর রঙে আমাদের জীবনকে রঙিন করতে হবে।
সবশেষে মিলাদ কিয়াম ও দোয়া মুনাজাতের মধ্য দিয়ে তাফসির মাহফিল শেষ হয়। উপস্থাপনায় ছিলেন মাওঃ আব্দুর রাহীম ও মাওঃ হাসানুজ্জামান। মাহফিলে অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম উপস্থিত ছিলেন।
মাহফিলে ফাযিল (স্নাতক) পরীক্ষা-২০২০-এর বৃত্তির ফলাফলে সারাদেশে ট্যালেন্টপুলে (মেধা তালিকায়) ৭ম ও সাধারণ বৃত্তিতে ১৩তম হওয়া দুই কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। আল্লামা রুহুল্লাহ (রাঃ) ওয়েলফেয়ার অর্গানাইশেন, চাঁদপুরের পক্ষ থেকে এদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরা হচ্ছে-ট্যালেন্টপুলে ৭ম ধানুয়া ফাযিল মাদ্রাসার কৃতী শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ বৃত্তিতে ১৩তম হাফেজ শামসুল হক।