রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

দ্বিতীয় মেয়াদে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী
এএইচএম আহসান উল্লাহ ॥

চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এবার নিয়ে তিনি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাথে ভোট যুদ্ধ হয়েছে তীব্র। জয়-পরাজয়ের ব্যবধান ২১৬ ভোট হলেও ওচমান পাটওয়ারীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভোটে এতোদূর যাবে তা কারোরই চিন্তার মধ্যে ছিল না। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী একেবারেই নূতন মুখ। তার নির্বাচনী প্রচারণা এবং ক্যাম্পিং তেমন একটা ছিলো না বললেই চলে। দুই প্রার্থীর সাথে তুলনা করলে একজন রাজনীতি, নির্বাচন, পরিচিতি সবদিক দিয়ে শতভাগ ফেভারিট, আর অপরজনকে বললে বলতে হবে এসবে মাত্র হাতেখড়ি। আর এমন আনকোরা প্রার্থী প্রথম নির্বাচনে এসেই বাঘা প্রার্থীর সাথে ভোট যুদ্ধে লড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এসেছেন, এটাকেই ‘তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ এবং চমক হিসেবে দেখছে চাঁদপুরবাসী।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই ভোট যুদ্ধে আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী (মোবাইল ফোন) পেয়েছেন ৭৩৮ ভোট, আর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ জাকির হোসেন প্রধানীয়া (আনারস) পেয়েছেন ৫২২ ভোট। ভোটের ব্যবধান হচ্ছে ২১৬ ভোট। জেলার আট উপজেলার আটটি কেন্দ্রের মধ্যে জাকির হোসেন প্রধানীয়া জিতেছেন হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি কেন্দ্রে। অন্য ছয় উপজেলায় জিতেছেন ওচমান গনি পাটওয়ারী। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর এবং হাইমচর উপজেলায় ওচমান পাটওয়ারী বড় ব্যবধানে জিতেছেন। ফলাফল বিশ্লেষণে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এ নির্বাচনে ওচমান পাটওয়ারী জয়লাভ করেছেন বলতে গেলে চাঁদপুর সদর ও হাইমচরের ভোটে। আর অন্য চার উপজেলায় দুজনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান খুব একটা বেশি নয়।

কচুয়া, ফরিদগঞ্জ এবং মতলব উত্তরে জাকির হোসেন প্রধানীয়া পরাজিত হলেও ব্যবধান খুব বেশি ছিল না। মতলব উত্তরে জাকির হোসেন ভোট পেয়েছেন ৮১, ওচমান পাটওয়ারী পেয়েছেন ১শ’। ফরিদগঞ্জে জাকির হোসেন পেয়েছেন ৯৭ ভোট, ওচমান পাটওয়ারী পেয়েছেন ১১৪ ভোট। কচুয়ায় জাকির হোসেন পেয়েছেন ৭২ ভোট, ওচমান পাটওয়ারী পেয়েছেন ৯৯ ভোট। এই তিন উপজেলায় দুজনের ভোটের ব্যবধান খুবই কম। অথচ এই তিন উপজেলাই ছিল ওচমান পাটওয়ারীর জন্য ভোট ব্যাংক। আর এই তিন উপজেলায়ই স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম প্রকাশ্যে ওচমান পাটওয়ারীকে সমর্থন দিয়ে তাঁকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারপরও এই তিন উপজেলায় ওচমান পাটওয়ারী এতো কম ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করাটাকে নানাভাবে বিশ্লেষণ করছেন সচেতন ও রাজনৈতিক মহল। দুই এমপি (ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও মুহাম্মদ শফিকুর রহমান) এবং এক কেন্দ্রীয় নেতার ওপেন সমর্থনের পরও ওচমান পাটওয়ারী ভোট অনেক কম পাওয়াটা মূলত এই তিনজনের সমর্থনকে ভোটাররা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

গতকাল দুপুর ২টায় ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলেই পূর্ণাঙ্গ ফলাফল পাওয়া যায়। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ফলাফল শীট থেকে জানা যায়, জেলার আট উপজেলায় আটটি কেন্দ্রে মোট ১২৬৯ ভোটের মধ্যে ভোট প্রয়োগ হয়েছে ১২৬৫। এর মধ্যে ভোট বাতিল হয়েছে ৫টি। বাদবাকি ১২৬০ ভোটের মধ্যে আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটওয়ারী মোবাইল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭৩৮ ভোট, আর মোঃ জাকির হোসেন প্রধানীয়া আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫২২ ভোট।

উপজেলাভিত্তিক দুজনের প্রাপ্ত ভোট হচ্ছে- চাঁদপুর সদর : ওচমান পাটওয়ারী ১৬৩, জাকির হোসেন ৪০, হাইমচর : ওচমান পাটওয়ারী ৬৬, জাকির হোসেন ১৪, মতলব উত্তর : ওচমান পাটওয়ারী ১০০, জাকির হোসেন ৮১, মতলব দক্ষিণ : ওচমান পাটওয়ারী ৫৮, জাকির হোসেন ৩২, কচুয়া : ওচমান পাটওয়ারী ৯৯, জাকির হোসেন ৭২, হাজীগঞ্জ : ওচমান পাটওয়ারী ৭১, জাকির হোসেন ১০৩, শাহরাস্তি : ওচমান পাটওয়ারী ৬৭, জাকির হোসেন ৮৩ এবং ফরিদগঞ্জ : ওচমান পাটওয়ারী ১১৪ ও জাকির হোসেন ৯৭।

এ নির্বাচনে সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে তিনজন মহিলা সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এরা হচ্ছেন : ১নং ওয়ার্ডে (চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ) আয়েশা রহমান লিলি (দোয়াত কলম), প্রাপ্তভোট ২৬৪। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জোবেদা মজুমদার খুশি (ফুটবল) প্রাপ্তভোট ২২৮। ২নং ওয়ার্ডে (মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও কচুয়া) তাছলিমা আক্তার (ফুটবল), প্রাপ্ত ভোট ২০৫। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাজমা আক্তার আসমা (দোয়াত কলম), প্রাপ্ত ভোট ১২৭। ৩নং ওয়ার্ডে (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) জান্নাতুল ফেরদৌসি (ফুটবল), প্রাপ্ত ভোট ১৫৮। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সকিনা বেগম (মাইক), প্রাপ্ত ভোট ৯১।

সাধারণ ৮টি ওয়ার্ডে আটজন সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এঁরা হচ্ছেন : ১নং ওয়ার্ডে (চাঁদপুর সদর) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান (হাতী)-প্রাপ্ত ভোট ৮৬, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল বারাকাত লিজন (ঘুড়ি)-প্রাপ্ত ভোট ৭০; ২নং ওয়ার্ডে (হাইমচর) মোঃ খুরশিদ আলম (তালা)-প্রাপ্ত ভোট ৪২, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এসএম কবির (টিউবওয়েল)-প্রাপ্ত ভোট ৩৮; ৩নং ওয়ার্ডে (ফরিদগঞ্জ) আলী আক্কাছ (টিউবওয়েল)-প্রাপ্ত ভোট ১১৩, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ মশিউর রহমান (তালা)-প্রাপ্ত ভোট ৬৫; ৪নং ওয়ার্ডে (মতলব দক্ষিণ) মোঃ আল-আমিন ফরাজি (হাতী)-প্রাপ্ত ভোট ৪১; নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (টিউবওয়েল)-প্রাপ্ত ভোট ৩৪; ৫নং ওয়ার্ডে (মতলব উত্তর) আলাউদ্দিন (তালা)-প্রাপ্ত ভোট ৭১; নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোহম্মদ হাবিবুর রহমান (বৈদ্যুতিক পাখা)-প্রাপ্ত ভোট ৬৫; ৬নং ওয়ার্ডে (কচুয়া) তৌহিদুল ইসলাম (টিউবওয়েল)-প্রাপ্ত ভোট ৭৯, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ জোবায়ের হোসেন (হাতী)-প্রাপ্ত ভোট ৫২; ৭নং ওয়ার্ডে (হাজীগঞ্জ) মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন (টিউবওয়েল)-প্রাপ্ত ভোট ৮৮, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোঃ জসিম (তালা), প্রাপ্ত ভোট ৭৭; ৮নং ওয়ার্ডে (শাহরাস্তি) মোঃ জাকির হোসেন (ক্রিকেট ব্যাট)-প্রাপ্ত ভোট ৬২, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব আলম (বৈদ্যুতিক পাখা)-প্রাপ্ত ভোট ৫০।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়