প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
মালিক সমিতি ও কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব নিয়ে কচুয়া-ঢাকা সড়কে সুরমা সুপার পরিবহনের বাস চলাচল ৩দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। বাস চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার দুপুরে কচুয়ার বাস শ্রমিকরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে কচুয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। কচুয়া বিশ্বরোড এলাকায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করলে উপজেলা যুবলীগের (একাংশ) ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ একাত্মতা প্রকাশ করে মিছিলে যোগ দেয়। মিছিলে যোগদানকারীরা হচ্ছেন : কচুয়া উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি কামাল হোসেন অন্তর, সহ-সম্পাদক গাজী কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, পৌর যুবলীগ নেতা গাজী ফারুক, সুরমা বাস মালিক মিজানুর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সবুজ, প্রচার সম্পাদক ইমাম হোসাইন, সদর দক্ষিণ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
বিক্ষোভকারীরা জানান, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে কচুয়া-ঢাকা সড়কে সুরমা বাস যাত্রী সেবা দিয়ে আসছে। কতিপয় লোকজনের চাঁদাবাজির কারণে আজ ৩দিন ধরে বাস সার্ভিসটি বন্ধ হয়ে আছে। ফলে শ্রমিক ও ড্রাইভাররা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাছাড়া শত শত যাত্রী হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিষয়টির দ্রুত সমাধান না হলে বড় ধরনের কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হবো।
গত বুধবার সকাল ৫টা থেকে কচুয়া, শাহরাস্তির হোসেনপুর, হাজীগঞ্জ ও মতলবের কাশিমপুর হতে ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে কচুয়া, শাহরাস্তি, মতলব ও হাজীগঞ্জগামী ৮৪টি সুরমা সুপার বাসের সবক’টি চলাচল বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা দফায় দফায় বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেও বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে সক্ষম হননি।
সুরমা বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে সুরমা বাস মালিক সমিতির সভাপতি সালাম সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মজুমদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাদেক মুন্সি জানান, কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের নির্দেশে কতিপয় নামধারী ব্যক্তি শ্রমিক পরিচয়ে ২৪ আগস্ট বুধবার কচুয়া কাউন্টার দখল করে নেয়। এ সময় তারা কচুয়া ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন সুরমা কাউন্টারে এসে কেরানী শফিকুল ইসলামকে মারধর করে কাউন্টার থেকে তাড়িয়ে দিয়ে প্রতিটি বাস থেকে ২শ’ টাকা করে জিপির টাকা আদায় করে। তারা কচুয়ার বিশ্বরোড এলাকায় আমাদের ৫টি গাড়ির ব্যাটারী ও চাবি নিয়ে গাড়িগুলো আটকে রাখে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ৭ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুব আলম জানান, এই পরিবহনের দুটি বাস চলাচলের জন্য সরকারিভাবে পারমিট নেই। একটি বাস হাজীগঞ্জ থেকে চলাচল করার সুযোগ দিলেও অপরটি শাহরাস্তি থেকে চলাচলের অনুমতি চাইলে সুরমা সুপার বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমার নিকট হতে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। তাদের প্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আমার বাস থেকে ব্যাটারী খুলে নিয়ে যায় এবং গাড়ির ড্রাইভারসহ শ্রমিকদের মারধর করে। তাই শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে জনসম্মুখে তাদের গাড়ির ব্যাটারী খুলে নেয়। তিনি আরো দাবি করেন, বাস শ্রমিক সংগঠনের জিপির নামে উত্তোলনকৃত টাকা শ্রমিক সংগঠনের গুটি কয়েক লোক আত্মসাৎ করে আসায় সংগঠনের অধিকাংশ শ্রমিক তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ। এ ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কচুয়া ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন সুরমা কাউন্টারে কেরানী শফিকুল ইসলামকে সরিয়ে দিয়ে শ্রমিকদের নিয়োজিত ব্যক্তি দিয়ে জিপির টাকা আদায় করছে।