মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

এক শতাংশ জমিও দখলে নেই বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল ॥

প্রতিষ্ঠার ৭২ বছরেও ম্যানেজিং কমিটি কিংবা শিক্ষকরা জানেন না বিদ্যালয়ের জমির ঠিকানা। কাগজ কলমে ৩৬ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে থাকলেও দখলে নেই ১ শতকও। ঘটনাটি শাহরাস্তি পৌরসভার বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৮ সালে। প্রতিষ্ঠাকালীন বিদ্যালয়ের নামে মোট ১টি খতিয়ানে ২টি দাগের মধ্যে ৩৬শতক জমি দান করেন দাতারা। তবে বিএস খতিয়ানে বাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামীয় ৩২নং বাদিয়া মৌজায় ৪নং খতিয়ানের ১৪২ দাগে ২৮ শতক স্কুল ও ১৫৩ দাগে ৭ শতক পুকুরের জমির রেকর্ড হয়েছে। প্রতিষ্ঠাকালীন দাতা গোষ্ঠীর ৫ জন সদস্য রমজান আলী, আঃ কাদের, মোঃ ইসমাইল, আবুল হাসেম ও মমতাজ উদ্দিন উক্ত জমি দান করে গেছেন।

১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়ের জমির দখল না নিয়েই শুধুমাত্র রেজুলেশনের মাধ্যমে বাদিয়া এম হক উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ২৪ বছর। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি কিংবা শিক্ষকদের কেউ খোঁজ রাখেন নি প্রতিষ্ঠানের মূল জমির পরিমাণ কত এবং তার অস্তিত্ব কোথায়। মূলত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবন রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গার ওপর। সমপরিমাণ জায়গায় সামনে খেলার মাঠ। মাঠ সুরক্ষা করতে এই জায়গা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে। বাকি জমি পশ্চিম পাশের পুকুরে। তবে পুকুরের কোন্ অংশে এই জায়গা তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না ম্যানেজিং কমিটি কিংবা শিক্ষকরা, এমনকি ভূমিদাতা পরিবারের সদস্যরাও।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ের দাতা পরিবারের সদস্য ও নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরী মোঃ ইমাম হোসেন পুকুরের পশ্চিম পাড়ে পাকা ইমারতের কাজ শুরু করলে উক্ত জমি বিদ্যালয়ের বলে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ তোলেন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলেই উঠে আসে বিদ্যালয়টি নিজেই দাঁড়িয়ে আছে ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জায়গায়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠটির অধিকাংশ বাদিয়া এম হক উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা। সরকারি নিয়ম মানতে শুধুমাত্র কাগজ-কলমে এর মূল জমির অস্তিত্ব উপস্থাপন করে কর্তৃপক্ষ। কখনো বিদ্যালয়ের জমি দখলে যাওয়ার প্রয়োজনও মনে করেনি কেউ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার ওই বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন ২৪ বছর ধরে। তিনিও জানেন না এর মূল রহস্য কোথায়? এ বিষয়ে তথ্য দিতে বেশ ভীত-সন্ত্রস্ত মনে হয়েছে তাকে। তিনি জানান, কেউ তাকে ওই জমির দখল বুঝিয়ে দেন নি। তার জানা নেই জমির প্রকৃত অবস্থান কোথায়।

শিক্ষক প্রতিনিধি হারুনুর রশিদ শেখ জানান, আমরা বিষয়টি অবগত হয়েছি। ম্যানেজিং কমিটির সাথে সমন্বয় করে এ ব্যাপারে শিক্ষা কার্যালয়ে জানানো হবে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ নূরুদ্দিন মিরন জানান, তিনি সম্প্রতি সভাপতি হয়েছেন। সকলের সাথে আলোচনা করে ভূমি উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী কাম দপ্তরী মোঃ ইমাম হোসেন ভূমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিজের জমির ওপর ভবন তৈরি করছেন। বিদ্যালয়ের জমি চিহ্নিত করলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

একই ক্যাম্পাসের বাদিয়া এম হক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুল হুদা পাটোয়ারী জানান, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে রেজুলেশনের মাধ্যমে ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো দালিলিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয় নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ লুৎফুর রহমান ভূঁইয়া জানান, খবর পেয়ে তিনি সাথে সাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ভূমি উদ্ধারে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদ জানান, বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে বিষয়টি পর্যালোচনা করে বিদ্যালয়ের জমি যাতে কেউ দখল না করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়