প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তাহাজ মাঝি। আওয়ামী লীগের বিগত আন্দোলন-সংগ্রাম-মিছিল কিংবা সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে যাকে প্রায়ই দেখা যেত, বঙ্গবন্ধু ও নৌকার পাগল সেই তাহাজ মাঝির বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডস্থ মাঝি বাড়ি। তিনি এখন জীবিত নেই। তার স্ত্রী, ৭ ছেলে ২ মেয়ে নিয়ে পরিবারটি এখন খুবই অসহায়।
তাহাজ মাঝির স্ত্রী ছামিয়া খাতুন (৭০) স্বামীর সম্পত্তি ও সন্তান বাবুল মাঝি (৬৩)সহ ৯ সন্তান পিতার সম্পত্তি ফিরে পেতে সালিসি বৈঠকে বসে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে বৃদ্ধা ছামিয়া খাতুনসহ চারজনকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো রয়েছে। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৯ আগস্ট সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মদনা গ্রামের মাঝি বাড়িতে ।
হাসপাতালে ভর্তিকৃত আহতরা হলেন : মৃত তাহাজ মাঝির ছেলে বাবুল মাঝি (৬৩), আবু তালেব, লাকি আক্তার ও তাদের ‘মা’ ছামিয়া খাতুন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চন্দ্রা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডরোস্থ মদনা গ্রামের সোনা মিয়া মাঝির ছেলে তাহাজ মাঝি যুবক বয়স থেকেই ঢাকায় বসবাস করতেন। তিনি দীর্ঘ বছর ধরে নিজ গ্রামের বাড়িতে আসেননি। তার পিতা সোনা মাঝি প্রায় ৩০ বছর পূর্বে ৩১ শতাংশ জমি রেখে মারা যান। পিতার মৃত্যুর পর তাহাজ মাঝি তার পিতার সম্পত্তির অংশ বুঝে নেননি। ২০১০ সালে তাহাজ মাঝি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর স্ত্রী ও ৯ সন্তান স্থানীয় চান্দ্রা এলাকায় এসে তাহাজ মাঝির সম্পত্তির বুঝে পেতে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বহুবার ধর্ণা দেন। কিন্তু তারা কোনো সমাধান করেননি। এরই মধ্যে গত ৯ আগস্ট চান্দ্রা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাঝি বাড়িতে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক সাইফুল জমাদারের নেতৃত্বে একটি সালিসি বৈঠক বসানো হয়। সেই সালিসি বৈঠকে উভয় পক্ষের জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করার একপর্যায়ে সালিস পল্লী চিকিৎসক সাইফুল জমাদার প্রতিপক্ষের পক্ষ নেন।
এ সময় প্রতিপক্ষ দুলাল মাঝির নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় তাহাজ মাঝির স্ত্রী ছামিয়া খাতুন ও তার সন্তানদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ হামলায় ছামিয়া খাতুনসহ কম পক্ষে ১০ জন আহত হয়।
ঘটনার পরপরই হামলার শিকার ব্যক্তিরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তায় জীবনে রক্ষা পান। এই ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন : সিরাজ মাঝির ছেলে দুলাল মাঝি, মনির মাঝি, আলাউদ্দিন মাঝি, সুমন মাঝি, নুরুল ইসলাম মাঝির ছেলে ইউসুফ মাঝি, আনসারুল্লার ছেলে মাইনুদ্দিন বিশ্বাস, সাহিন বিশ্বাস ও পল্লী চিকিৎসক সাইফুল জমাদার।