প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
চাঁদপুর পুরাণবাজার দাসপাড়া (পূর্ব শ্রীরামদী) শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ গোপাল মন্দিরর ১৮তম বাৎসরিক উৎসব ২২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ব্যাপক ভক্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় ৩২ প্রহর হরিনাম কীর্তনসহ পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল।
তিনি উৎসবের সফলতা কামনা করে বলেন, যেখানে ধর্ম চর্চা থাকবে সেখানেই শান্তি বিরাজমান থাকবে। আপনারা সকলে মিলে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে যে ধর্মীয় উৎসবের আয়োজন করেছেন আমি তার সফলতা কামনা করছি। পাশাপাশি আমি এখানে আসতে পেরে খুবই আনন্দবোধ করছি। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন এজন্যে আমি সকল সময়ই আপনাদের কাছে দায়বদ্ধ রয়েছি। আমার দায়বদ্ধতা থেকেই চাঁদপুরের উন্নয়নে কাজ করতে চেষ্টা করছি। কিন্তু এখনো বড় ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে না পারলেও আমার চেষ্টা কিন্তু থেমে নেই। ইতিমধ্যে পৌরসভার অনুন্নত বেশ কিছু এলাকার রাস্তাঘাটসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করেছি। আপনারা জানেন, পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থায় উন্নয়নে বড় কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। এজন্যে প্রয়োজন প্রজেক্টভুক্ত হওয়া। কিন্তু যে পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট আর্থিত দেনা থাকে সেটি কীভাবে প্রজেক্টভুক্ত হবে? তিনি বলেন, আমি অনেকটা দেনা নিয়েই পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি। দায়িত্ব নিয়ে পৌর কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বেশ কিছু দেনা পরিশোধ করেছি। ফলে বর্তমানে পৌরসভার উন্নয়নের জন্য বড় ধরনের প্রজেক্টের আওতায় আসার লক্ষ্যে চাঁদপুর পৌরসভা এগিয়ে যাচ্ছে। পৌরসভার এ উন্নয়নে চাঁদপুরের এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ব্যাপক সহায়তা করছেন বলেও তিনি জানান। তিনি মন্দিরের উন্নয়নে সার্বিক সহায়তা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আলোচনা শেষে ১৮তম বাৎসরিক উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর অযাচক আশ্রমের অধ্যক্ষ সুরেশ মজুমদার, চাঁদপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমের অধ্যক্ষ স্থিরাত্মানন্দজী মহারাজ, চট্টগ্রামস্থ সীতাকু- শংকর মঠের শ্রীমৎ স্বামী সন্তুশানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ। মন্দিরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সেবক শ্রীমতি কৃষ্ণ লীলা দাসীর সভাপ্রধানে ও রামদাস পলাশের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মন্দির পরিচালনায় পর্ষদের অন্যতম সদস্য স্বপন চন্দ্র সরকার, দুলাল চন্দ্র দাস, বিশ্বনাথ দাস, মৃনাল কান্তি দাস, দ্বিবাস চন্দ্র দাস, সুভাষ চন্দ্র দাস, সন্তোষ চন্দ্র দাস, শনিরাম দাস, নিবাস দাস, অঞ্জন দাস, পংকজ দাস প্রমুখ। আলোচনা শেষে হাজারো নর-নারী সমবেত হয়ে বাদ্য বাজনা সহকারে উৎসবমুখর পরিবেশে পুরাণবাজার কলেজ সংলগ্ন ডাকাতিয়া নদীতে গঙ্গা আহ্বানের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা করেন। গতকাল অরুণোদয় হতে শুরু হয়েছে ৪ দিনব্যাপী অহোরাত্র ৩২ প্রহর নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার অনুষ্ঠিত হবে মহাপ্রভুর ভোগরাগ অন্তে মহাপ্রসাদ বিতরণ। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আগত কীর্তনীয়াদল হরিনাম পরিবেশন করবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি রোববার অনুষ্ঠিত হবে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দের অষ্টকালীন লীলা কীর্তন। অনুষ্ঠানে সকলের উপস্থিতিপূর্বক মন্দির উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন মন্দিরের সেবক-সেবিকাবৃন্দ।