প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের শরীরে দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল। শনিবার দুপুরে সিঙ্গাপুর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ঢাকা পোস্টকে এসব কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়া ভালো। এটি সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেই ভালো। কারণ তা (বেশি ছড়িয়ে পড়া) টিকার চেয়ে বেশি কার্যকর।
তিনি মনে করেন, মহামারির পর ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হবে। এজন্য এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে সবাইকে। সময়টি মোকাবিলা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওমিক্রনের শুরুতে উপসর্গ কম দেখা যাচ্ছে। সংক্রমণ হার বেশি হচ্ছে। কিন্তু এত সংক্রমণের পরও মৃত্যুর হার তুলনামুলক কম।
বিজন কুমার শীল বলেন, সর্দির ফলে ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে। সংক্রমণ বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে এটি বড় কারণ। তিনি জানান, ওমিক্রনের তিনটি ধরন আছে। এর মধ্যে রয়েছে বিএডটওয়ান, বিএডটটু ও বিএডটথ্রি। বিএডটওয়ানের সংক্রমণ ৫০০ গুণ ছড়িয়ে পড়েছে। ১২০ গুণ ছড়িয়েছে বিএডটটু।
তিনি বলেন, সংক্রমণ দ্রুত হলেও ওমিক্রনের রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা বাড়েনি। ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে, তবে তা ভয়াবহ নয়।
তার ধারণা, আগামী মাসের (ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ হবে। এরপর থেকে সংক্রমণ নি¤œমুখী হবে। সেপ্টেম্বর মাসের পর করোনা প্যান্ডেমিক (বৈশ্বিক) থেকে এন্ডেমিকে (দেশীয়) পরিণত হবে, শক্তি কমে যাবে। সাধারণ রোগের মতো এর চরিত্র দাঁড়াবে।
বিজন কুমার শীল আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে ফিরছেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। জন্মসূত্রে তিনি বাংলাদেশি হলেও বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিক। তিনি পর্যটক ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ভিসার মেয়াদ ২০২০ সালের ১ জুলাই শেষ হয়ে যায়।
বিজন কুমার শীল এরপর নিয়ম মেনে জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে এনভিআর (নো ভিসা রিকোয়ার্ড) ভিসা পরিবর্তনের আবেদন করেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ড. বিজনকে বিদেশি (অন্য দেশের পাসপোর্টধারী) হিসেবে ‘ই-ভিসা’ (এমপ্লয়মেন্ট ভিসা) করার উপদেশ দেয় এবং তার পর্যটক ভিসার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দেয়।
বিজন শীল ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান পদে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি করোনার কিট নিয়ে কাজ করছিলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। গেল বছরের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।