বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

শুদ্ধাচার সার্বজনীন হলেও অনেক ক্ষেত্রে এর চর্চা নেই
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, তথ্য অধিকার আইন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ক বিভাগীয় সেমিনারে বক্তাগণ বলেছেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুগান্তকারী অনেক আইন পাস করেছে এবং জনকল্যাণকর বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রনয়ণ। যা ২০১২ সালে আইন হিসেবে পাস করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শুদ্ধাচার সার্বজনীন হলেও সরকারি অফিসসহ অনেক ক্ষেত্রে তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অথচ সোনার বাংলা গঠনে এটি অপরিহার্য। বক্তারা সকল ক্ষেত্রে শুদ্ধাচার চর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। দ্বিতীয় অধিবেশনে প্যানেল আলোচকদের মধ্যে প্রধানত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোঃ মিজানুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শুদ্ধাচার, শিষ্টাচার এ সব মানুষের আচরণের মৌলিক বিষয়। আমি মানুষ হিসেবে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা হলাম কি না তা আমার আচরণের দ্বারা প্রকাশ পাবে। এর বিপরীত তথা পশুসুলভ আচরণ হলে সৃষ্টিগতভাবে আমি মানুষ হলেও স্বভাবগতভাবে আমি আর তখন মানুষের পর্যায়ে থাকলাম না। সে জন্য শুদ্ধাচার, শিষ্টাচার মানুষের জীবনের অপরিহার্য বিষয়। তিনি দেশের স্বাধীনতা, রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা রাখতে গিয়ে বলেন, বোধসম্পন্ন কোনো মানুষের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয় নিজেকে নিরপেক্ষ মনে করা। প্রত্যেকেই নিজের ভেতরে কোনো না কোনো দর্শনকে লালন করে থাকেন। তাছাড়া আমরা ভোটও তো কাউকে না কাউকে দেই। তাহলে আর নিরপেক্ষ হলাম কীভাবে? তাই আমরা নিরপেক্ষ নয়, সত্যনিষ্ঠ হতে হবে। আর সত্যনিষ্ঠ হওয়াটা তো সাংবাদিকদের জন্য আরো বেশি জরুরি। সত্যনিষ্ঠ হওয়ার মধ্য দিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠকে বের করে আনতে হবে।

প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, একটি জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশের সৃষ্টি। কোনো পক্ষের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ সৃষ্টি হয় নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কী ছিল তা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় আমাদের মধ্যে থাকতে হবে। শুদ্ধাচার বিষয়ে তিনি বলেন, শুদ্ধাচার শিখনের মৌলিক জায়গা হচ্ছে পরিবার ও বিদ্যালয়। এখান থেকে যদি একজন মানুষ নিজেকে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে তৈরি করতে না পারে, তাহলে চাকুরি ক্ষেত্রে এসে তিন মাস বা ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে আর কী-ই বা পরিবর্তন হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বিভিন্নজনের প্রশ্ন এবং দু একটি বাস্তব ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি সরকারের একজন বিভাগীয় কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ডিসি-ইউএনওদের জনগণের সাথে ভালো আচরণের কোনো বিকল্প নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিভিল প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার কথা বা আচরণের দ্বারা যদি এমন কিছু প্রকাশ পায় যে, ‘সরকারকে আমরা ক্ষমতায় এনেছি’, তাহলে আমি বলবো ওরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।

গত ২২ জানুয়ারি শনিবার চট্টগ্রামে ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে অংশ নেন চাঁদপুরসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলার প্রায় অর্ধশত সাংবাদিক ও সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) নেতৃবৃন্দ। চাঁদপুর থেকে অংশগ্রহণ করেছেন চারজন। তাঁরা হচ্ছেন : বাংলাভিশনের জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর প্রবাহের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি রহিম বাদশা, আরটিভির স্টাফ রিপোর্টার ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরীফ চৌধুরী, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদক ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ ও ডিবিসির প্রতিনিধি ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আপ্যায়ন ও বিনোদন সম্পাদক তালহা জুবায়ের। সেমিনারে সভাপ্রধান ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. ইদ্রিস আলী। সঞ্চালক ছিলেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার দিলীপ কুমার সরকার।

প্যানেল আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের জাতীয় পরামর্শক তাওফিক আলী। সেমিনার শেষে অনলাইনে অংশগ্রহণকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়