প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে আওয়ামী লীগ মনোনীত বিজিত প্রার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় তারা অভিযোগ করেছেন নৌকাকে পরাজিত করতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও সাবেক এমপি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ নেতারা একাট্টা হয়েছিলো।
গতকাল রোববার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী। অসুস্থতার কারণে দুই বিজিত প্রার্থী উপস্থিত না থাকলেও বাকি ৮ জন প্রার্থী উপস্থিত হয়ে নিজেদের হারের কারণ ব্যাখা করেন।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ফরিদগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩ জন প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন লাভ করি। দলীয় প্রতীক পাওয়ার পর থেকে ব্যক্তি স্বার্থে নৌকা প্রতীককে পরাজিত করতে সাবেক এমপি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। নির্বাচনে তাদের অনুসারীরা প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি এবং তাদের অনুসারীদের নৌকার বিপক্ষে মাঠে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রশাসন নিরপেক্ষতার আড়ালে নৌকাকে হারানোর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলো। নির্বাচনের পূর্বদিন এবং নির্বাচনের দিন তাদের আচরণে তা স্পষ্ট হয়েছে।
নৌকা প্রতীককে পরাজিত করার জন্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শীর্ষনেতা ও সাবেক এমপি প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখেন। একই সাথে স্বতন্ত্র নামে বিএনপি-জামাতের প্রার্থীদের অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা ডোনেশন দিয়েছেন। বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম রোমান প্রকাশ্য সমাবেশে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে হুমকি দিয়েছেন। তার অনুসারীরা এলাকায় গিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও আওয়ামী লীগের ভোটারদের না আসার জন্যে অপচেষ্টা করেন। প্রশাসনের মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে দলীয় কর্মীদের এলাকাছাড়া করেছেন। বিশেষ করে নির্বাচনের দিন একটি বিশেষ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য করেছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে। নির্বাচনের দিন গুলি বর্ষণ ও হামলার ঘটনা ছিলো নিয়মিত।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা বলেন, প্রতীক পাওয়ার পর আমরা ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। নির্বাচনে আমাদের সহযোগিতা করার জন্যে বারবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু কিছু নেতার আচরণে মনে হয়েছে, তারা নৌকাকে সাংবাদিক মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপিকে পরাজিত করতে মাঠে নেমেছেন। তারা ভুলেই গেছেন সংসদ, উপজেলাসহ সকল নির্বাচনে তারা নৌকা নিয়েই নির্বাচন করেছিলেন।
মোটকথা, সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানকে অপমানিত করতে এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জে আওয়ামী লীগের অবস্থান দুর্বল করতে তাদের এ হীন প্রচেষ্টা।
প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপ্রধানে সংবাদ সম্মেলনে বিজিত প্রার্থীদের মধ্যে বালিথুবা পশ্চিম ইউপির বাহাউদ্দিন, বালিথুবা পূর্ব ইউপির জিএম হাসান তাবাচ্চুম, সুবিদপুর পশ্চিম ইউপির পারভেজ হোসাইন, গুপ্টি পূর্ব ইউপির আব্দুল গণি বাবুল পাটওয়ারী, গুপ্টি পশ্চিম ইউপির রফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী, পাইকপাড়া উত্তর ইউপির আলাউদ্দিন, গোবিন্দপুর উত্তর ইউপির সোহেল চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান শাহীন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, পৌরসভার এমপি প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর পলোয়ান, রূপসা উত্তর ইউনিয়নের এমপি প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম সুমন, গোবিন্দপুর উত্তরের এমপি প্রতিনিধি পুতুল সরকার উপস্থিত ছিলেন।