বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

নানা সমস্যা ও অনিয়মে চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাটে দুর্ভোগ
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি নৌ-রুট। এই ফেরির চাঁদপুর অংশ হচ্ছে হরিণাঘাট। এই ফেরিঘাটটি নানা সমস্যা, অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের কারণে দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। ৭টি ফেরি চলাচল করলেও সেগুলো সবসময় সচল থাকছে না, অতি পুরাতন ফেরি হওয়ায় ফেরি ত্রুটি যেন নিত্যসঙ্গী।

প্রতিদিনই ফেরি পার হতে দু’পাড়ে অবস্থান করে ৩শ’ থেকে ৪শ’ যানবাহন। পারাপার হয় ৮ শতাধিক গাড়ি। স্পেশালের নামে কিছু গাড়ি অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সিরিয়াল ছাড়া পার হলেও সিরিয়ালে আটকা থাকতে হচ্ছে নিয়মিত যানবাহনগুলো। চালকসহ যানবাহনগুলো শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে হরিণা ঘাটের পার্কিং ইয়ার্ডে এসে থাকে আতঙ্কে। কারণ পুরো পার্কিং ইয়ার্ডটি অরক্ষিত। দেখার যেনো কেউ নেই। বিআইডাব্লিউটিএ’র কর্মকর্তারা বলছেন দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

সরজমিনে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ফেনি, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলার অধিকাংশ মালাবাহী গাড়ি ও গণপরিবহন চলাচলের জন্যে চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি রুট ব্যবহার হয়। পদ্মা-মেঘনা নদীর খরস্রোত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া এই রুটে ২৪ ঘন্টাই ফেরি চলাচল করে।

২০০০ সালের মাঝামাঝিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন। বিভিন্ন সময়ে এ ফেরিঘাটের অবকাঠামো কিছুটা উন্নয়ন হলেও বাস্তবে পরিকল্পিত উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এই রুটে গাড়ির চাপ বাড়লেও স্থাপিত হয়নি রো রো ফেরি ঘাট এবং দেয়া হয়নি রো রো ফেরি।

ফেরির হরিণা অংশে পার্কিংইয়ার্ডটি অযতেœ-অবহেলার কারণে এটি আস্তে আস্তে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। তাছাড়া অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রাতের বেলা কোনো পাহারাদার নেই। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। ৪শ’ থেকে ৫শ’ চালক ও হেলপারের জন্য একটি পানির চাপকল এবং একটি টয়লেট। সীমানা প্রাচীর খোলা থাকায় রাতে ও দিনে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। চালকদের বিশ্রাম নেয়ার সুযোগও নেই। বিশ্রামাগারগুলো মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।

যানবাহন পারাপারের জন্যে ৭টি ফেরি থাকলেও এসব ফেরি খুবই পুরানো। অনেকটা চলাচলের অযোগ্য ফেরি দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাহন নিয়ে চলছে পারাপার। নদীতে ঢেউ কিংবা ¯্রাোত বাড়লে যান্ত্রিক দুর্বল ফেরিগুলো বন্ধ করে রাখা হয়। যার কারণে প্রতিদিনই আলুবাজার ও হরিণা ঘাটে ৬শ” থেকে ৮শ’ গাড়ির দীর্ঘ লাইন থাকে।

চট্টগ্রাম থেকে আসা চালক আরিফ জানান, হরিণা পার্কিং ইয়ার্ডটি পুরোই অরক্ষিত। রাতের বেলায় লাইট জলে না। পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা খুবই খারাপ। প্রায়সময় ছিনতাই হয়। সিরিয়াল ছাড়া গাড়ি পার হয়। চালক ও হেলপারদের নিরাপদে থাকার ব্যবস্থা করা জরুরি।

খুলনার আরেকজন গাড়ি চালক রুহুল আমিন জানান, ফেরি কম থাকায় প্রচুর জ্যাম থাকে। দুই পাড়ে থাকে দীর্ঘ লাইন। ফেরিগুলো অনেক পুরানো। এসব ফেরিগুলো পরির্তন করা দরকার।

নোয়াখালীর গাড়ি চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, এখানকার ইজারাদারের লোকজন আমাদের সাথে খুবই খারাপ আচরণ করে। দিনের বেলা গাড়ি পার হলেও রাতে একটি ট্রাকও পার হতে দেয়া হয় না। তারা ইচ্ছেমতো টাকা নেয়। নিয়মের বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে গাড়ি পার করে। রাতে এই ঘাটে একটা নৈরাজ্য চলে।

চালক জামাল হোসেন চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন, যাবেন ভা-ারিয়া। তিনি বলেন, হরিণাঘাটে এসেছি, থাকতে হবে কমপক্ষে ৩দিন। কিন্তু এখানে থাকার মতো সেই ব্যবস্থা নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় আতঙ্কে থাকতে হয়। নেই টয়লেট ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। এগুলো কর্তৃপক্ষের সমাধান করা দরকার। কারণ এই ঘাট দিয়ে আয়তো কম হয় না।

চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাট বিআইডাব্লিউটিসি ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) আব্দুন নুর তুষার বলেন, আমাদের নিয়মিত ৭টি ফেরি চলে। তবে সব ফেরির সাইজ এক নয়। যার কারণে কম-বেশী বাহন নিয়ে পার হতে হয়। স্রোত থাকলে এবং কুয়াশার জন্য বন্ধ রাখা হয় ফেরি। তবে আরো ফেরি দেয়া হলে তখন এই সমস্যা থাকবে না।

বিআইডাব্লিউটিএ চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা একেএম কায়সারুল ইসলাম বলেন, হরিণা ঘাটে যানবাহনের যেসব সমস্যা এসব নিরসনে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। রাতের আলোর জন্যে কাজ করেছি। পানি ও টয়লেট ব্যবস্থা পরিস্কার রাখার জন্যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অনেক লোক প্রতিদিন টয়লেট ব্যবহার করে, যার জন্যে পরিস্কার রাখা খুবই দুরহ ব্যাপার। চালক ও যানবাহনের নিরাপত্তার জন্যে ইজারাদারকে শোকজ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়