বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০

বাবুরহাটে নয় কেনো?
চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥

খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে চাঁদপুরে গতকাল ১২ জানুয়ারি বুধবার বিশাল সমাবেশ করেছে বিএনপি। তাদের প্রচার-প্রচারণা ছিল সমাবেশ। কিন্তু এই সমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হয়। যা বলতে গেলে জনসমুদ্রে রূপ নেয়। আর এই বিশাল সমাবেশের স্থানটি ছিলো চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার এলাকাস্থ বেগম মসজিদের সামনে মুনিরা ভবনে। যেটি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাসভবন নামে পরিচিত। পুরো জেলা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে মুনিরা ভবনের ভেতরে বিশাল খোলা জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে সামনে জেএম সেনগুপ্ত রোড লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। চতুর্মুখী মিছিলে চাঁদপুর শহর দুপুরের পর থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়ে। জেলার কেন্দ্রবিন্দুতে এমন বিশাল সমাবেশ তথা হাজার হাজার লোকের সমাগম করতে পেরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেশ উৎফুল্ল। বহু বছর পর চাঁদপুর শহরে বিএনপি একটি বড় ধরনের শোডাউন করল।

কিন্তু মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, বিএনপি তো সমাবেশ করতে চেয়েছে বাবুরহাট মাঠে। সেখানে না হয়ে চাঁদপুর শহরে কেনো হলো এই সমাবেশ? বিএনপি তো মুনিরা ভবনে সমাবেশ করতে চায় নি। বিএনপি সমাবেশ করার জন্যে প্রশাসনের কাছে অনুমতি চেয়েছে শহরের হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ, পৌর পার্ক অথবা বাবুরহাট কলেজ মাঠ। শেষ পর্যন্ত বাবুরহাট কলেজ মাঠে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিতে থাকে বিএনপি। প্রশাসন থেকে সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি হয়তো মিলবে এমন ধারণা ছিল তাদের। কিন্তু সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার থেকে নতুন করে নানা নির্দেশনা আসায় বিএনপিকে খোলা মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয় নি। যার কারণে সমাবেশের স্থান হিসেবে ঠিক করা হয় মুনিরা ভবনকে। যদিও বিধিনিষেধ কার্যকরের নির্দেশনা ১৩ জানুয়ারি থেকে। যেটি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে জানান দেন।

এদিকে বিএনপির সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য হচ্ছে, তাদেরকে খোলা জায়গায় সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয় নি। তাদেরকে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে, ঘরোয়া পরিবেশে, কমসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিকে সমাবেশ করতে। সেটা যদি কারো বাড়ির সামনে করা হয় সেটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনকে বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে এই বক্তব্য দেন। এক কথায় বিএনপিকে প্রশাসন বাবুরহাট মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় নি। শর্তসাপেক্ষে ঘরোয়া পরিবেশে করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু গতকাল বাস্তব চিত্র দেখা গেলো ভিন্ন। মুনিরা ভবনের ভেতরে খোলা জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে সামনের রাস্তা নতুনবাজার মোড় থেকে জোড় পুকুরপাড় এলাকার ব্রিজ পর্যন্ত সড়কজুড়ে লোকে লোকারণ্য ছিল। চতুর্দিক থেকে সকল উপজেলার মিছিল আসতে থাকে মুনিরা ভবনের দিকে। মিছিলের পর মিছিল আসতে থাকায় দুপুরের পর থেকে কার্যত চাঁদপুর শহর অচল হয়ে পড়ে।

শহরবাসীর প্রশ্ন হলো, বিএনপিকে বাবুরহাট মাঠে কেনো সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হলো না। বাবুরহাট কলেজ মাঠে সমাবেশ হলে এর দ্বিগুণ লোকসংখ্যা হলেও মাঠের ভেতরেই জায়গা হয়ে যেতো। লোকজনকে রাস্তায় আর আসতে হতো না। আর সেটা শহরের একটা সাইডে ছিল, শহরজুড়ে তার কোনো প্রভাব পড়তো না। কিন্তু প্রশাসন থেকে সেখানে অনুমতি না দেয়ায় অগত্যা তারা মুনিরা ভবনের সামনে খোলা জায়গাকে বেছে নিতে হয়েছে। ফলে বাস্তবে হয়ে গেলো বিপরীত। অসংখ্য নেতা-কর্মীর সমাগমে মুনিরা ভবনের ভেতর পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় মানুষ রাস্তায় চলে এসেছে। তাছাড়া মুনিরা ভবনের সামনে তথা বাউন্ডারীর বাইরে একেবারেই কাছাকাছি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির বাসভবনটি হওয়ায় মুনিরা ভবনে বিএনপির মহাসমাবেশ হওয়াটা ছিলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো দুষ্কৃতকারী কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির হয়তো সৃষ্টি হতো। তাই প্রশাসনকে আরো বিচক্ষণতার সাথে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন সচেতন মহল।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়