সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   খাল দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
  •   নৌ পুলিশের হয়রানি বন্ধে জেলা বিএনপির সভাপতির কাছে জেলেদের লিখিত আবেদন
  •   হাসান আলী মাঠে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শততম দিনে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
  •   মাদ্রাসা খাদেমের লাশ নদী থেকে উদ্ধার
  •   পল্লবীতে দুই ছেলেকে জবাই করে হত্যার অভিযোগ বাবার বিরুদ্ধে

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৩

আইনি জটিলতা কেটেছে

আলোর মুখ দেখছে উটতলী সেতু

অনলাইন ডেস্ক
আলোর মুখ দেখছে উটতলী সেতু

২০২৪ সালের জুন মাসে মূল সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আইনি জটিলতার বেড়াজালে পড়ে বন্ধ হয়ে যায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ উটতলী সেতু। অবশেষে সকল আইনি জটিলতা পেরিয়ে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে সেতুটি। সেতুর জন্যে অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য গত ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার পরিশোধের মধ্য দিয়ে পুনরায় কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া দ্রুত লয়ে সেতুর রি-এস্টিমেট করে দ্রুত টেন্ডার পক্রিয়ায় যাওয়া হবে বলে উপজেলা প্রকৌশলী নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ৫৫০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের জন্যে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ দুই উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত স্বপ্নের উটতলী সেতু ২০২০ সালের জুলাই মাসে একনেক সভায় অনুমোদন হয়।

পরে ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর সেই সময়ের সাবেক সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও সাবেক সিনিয়র সচিব নূরুল আমিনের উপস্থিতিতে হাজার হাজার লোকজনের সমাগমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

সেতুটির নির্মাণ কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার দোহার উপজেলার মোঃ আইয়ুব আলীর মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরমা এন্টারপ্রাইজ। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কয়েকমাস পরে চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির হাজীগঞ্জের অলিপুর অংশে প্রতিষ্ঠানের সাইট নির্মাণ কাজ শুরু করার পর মাত্র ২০টি পিলারের পাইলিং কাজ সম্পন্ন করে। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের ধীরগতির কারণে ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট চুক্তিপত্র বাতিল করে এলজিইডি। কাজের চুক্তি বাতিলের সূত্র ধরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশনে রিট করলে আদালত থেকে সেতুর কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজ। অন্যদিকে জমি অধিগ্রহণের সকল কাজ সম্পন্ন হলেও স্থানীয় লোকজন তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ বুঝে না পাওয়ায় তারাও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

সম্প্রতি এলজিইডির তৎপরতার কারণে উচ্চ আদালত রিটের বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। ফলে দ্রুত লয়ে এলজিইডি পুনরায় সেতুৃর নির্মাণ কাজ শুরু করতে সক্রিয় হয়। এরই অংশ হিসেবে সেতু নির্মাণে মোট চার একর জমির অধিগ্রহণকৃত চার কোটি ৯১ লাখ আট হাজার ৬৬৩ টাকা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ এলাকার লোকজন জানান, এতোদিনে সেতু দিয়ে আমরা পারাপার হতাম। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা হলো না। আশা করছি, এবার আমরা সেতুটি দেখতে পাবো। প্রতিদিন উটতলী খেয়াঘাট দিয়ে আসা যাওয়া করা অলিপুর গ্রামের অধীরসহ বেশ ক'জন বলেন, অনেকদিন ধরেই আমরা উটতলী ব্রিজটি নিয়ে স্বপ্ন দেখছি। আমাদের প্রতিদিন ৪০ টাকা ভাড়া গুণতে হয় ব্রিজ না থাকায়। স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত এখানে ব্রিজটি হলে আমাদের কষ্ট দূর হবে।

সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব বলেন, উটতলী ব্রিজটি আমাদের দুই উপজেলার সংযোগ স্থাপন করবে। এটি দ্রুত দৃশ্যমান হলেই তা সম্ভব। হাজীগঞ্জে আমাদের ব্যবসার খাতিরে যেতে হয়। তাই সেতুটি হলে আমরা অনেক উপকৃত হবো।

সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের দুই উপজেলাবাসীর স্বপ্নের সেতু উটতলী। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে কাজ হলে এতোদিনে সেতুটি আমাদের চোখের সামনে থাকতো। ইতিপূর্বে অনিয়মের কারণে সেতুর কাজ শুরু হয়েও বন্ধ হয়ে গেছে। শুনেছি উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা কেটে গেছে। আশা করবো নতুন করে কাজ শুরু হলে কর্তৃপক্ষ অনিয়ম রোধে কঠোর নজরদারি করবে। যাতে নিদিষ্ট সময়ে কাজ শুরু ও শেষ হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদ জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুরমা এন্টারপ্রাইজের উচ্চ আদালতে দায়ের করা রিটের নিষ্পত্তি হয়েছে। আইনি জটিলতা কেটে যাওয়ায় আমরা সেতুর কাজের রি- এস্টিমেট করে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়