প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩
কচুয়ায় ৬শ’ বছরের পুরানো ‘গায়েবী মসজিদ’
সংস্কারে দরকার সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা
কচুয়ায় বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনও রয়েছে। তেমনি একটি নিদর্শন হচ্ছে আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ বা ‘গায়েবী মসজিদ’। এই মসজিদটি কবে, কখন ও কীভাবে নির্মিত হয়েছে তা কেউ জানেন না। বর্তমানে তার নামকরণ করা হয়েছে আটোমোর পূর্বপাড়া প্রাচীন শাহী জামে মসজিদ।
|আরো খবর
ধারণা করা হয়, প্রায় ৬শ' বছর আগে এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। সেই সময় থেকেই ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রাচীনতম এই মসজিদটি আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে অক্ষত অবস্থায়। তবে মসজিদটিকে বিরাট আকারে নির্মাণ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে ব্যয় হয়েছে অনেক টাকা। বাকি কাজ করতে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গেলে মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক নিজামী জানান, লোকমুখে শুনেছি, সম্ভবত মুঘল সম্রাটদের শাসনামলে মসজিদটি এলাকাবাসী বন-জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে খুঁজে পান। ওই সময় এলাকায় জনবসতি না থাকায় বনজঙ্গল আচ্ছন্ন হয়ে মসজিদটি ঢাকা পড়ে যায়। কে বা কারা এ মসজিদটি নির্মাণ করেছেন তা কেউ জানেন না। সেই থেকে মানুষ মসজিদটিকে ‘গায়েবী মসজিদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছেন। বিশাল এক গম্বুজ মসজিদটিতে ইমামসহ মাত্র ৯ থেকে ১০জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারতেন। বর্তমানে এ মসজিদকে প্রায় ২৩শ' বর্গফুট করা হয়েছে। মসজিদে বর্তমানে ৪শ' থেকে ৫শ' জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। প্রায় ১৮ শতাংশ জমিতে সম্প্রসারিত মসজিদটির বর্তমান অবস্থান।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, মসজিদটিকে বিরাট আকারে নির্মাণ করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি শুক্রবার মুসল্লিরা আসেন এবং অনেকে মনের বাসনা পূরণে মানত করেন বলেও জানান তারা। মসজিদটিকে সংস্কারের জন্যে সরকারি কিংবা বেসরকারি সহায়তার পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা। মসজিদটির পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আটোমোর জামালিয়া হাফিজিয়া নূরানীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা ।
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. বায়েজিদ সরকার বলেন, প্রতি শুক্রবার দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষরা মসজিদে মানতের নগদ টাকা ও মিষ্টি নিয়ে আসেন । তাদের ধারণা, যে কেউ যে কোনো নিয়তে মানত করলে আল্লাহর অশেষ রহমতে তা পূরণ হয়। আগের চেয়ে মসজিদটিকে অনেক প্রসারিত করা হয়েছে। আরও অনেক কাজ অসমাপ্ত রয়েছে। এদিকে মসজিদ প্রসারিত করতে গিয়ে অনেক টাকার ঋণ হয়েছে। তাই সরকারি-বেসরকারি,জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।
মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুল হক নিজামী বলেন, এ মসজিদের নির্মাতা কে তা আমরা বলতে পারি না। আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে শুনেছি এ মসজিদের কথা। এদিকে বাহির থেকে অনেক বড়ো মনে হলেও মসজিদের ভেতরে শুধুমাত্র ৪শ' জন মুসল্লি নিয়ে নামাজ আদায় করা যায়। মসজিদের মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে সম্প্রসারিত করার জন্যে নূতন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ছোট সুন্দর গ্রামেও বন-জঙ্গল পরিষ্কার করে কচুয়ার আটোমোরের উপরোল্লিখিত মসজিদটির ন্যায় এক গম্বুজ বিশিষ্ট ছোট মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে ক'বছর আগে, যেটি স্থানীয় এমপির উদ্যোগে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়েছে।