প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০
ভূমি অফিসের ভুল রিপোর্টের জের
ফরিদগঞ্জে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে অসহায় পরিবারের ওপর মিথ্যা মামলার অভিযোগ
জমি থেকে উচ্ছেদ করতে অসহায় পরিবারের বিরুদ্ধে ১৪৫ ধারায় জমির দখল বিষয়ে আদালতে মামলা করে প্রভাবশালীরা। আদালত জমির দখল বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে উপজেলা ভূমি অফিসকে। সেই অনুযায়ী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক পর পর তিন দফা তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখানে অবস্থানরতদের দখলে সম্পত্তি রয়েছে বলে নিশ্চিত করে আসেন। কিন্তু সরেজমিনে প্রাপ্ত রিপোর্টকে পাশ কাটিয়ে কাগজ-কলমে উল্টো রিপোর্ট প্রদান করায় নিজেদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদের আশঙ্কা করছে এক অসহায় পরিবার। সোমবার ২৬ সেপ্টেম্বর দিন পর্যন্ত অসহায় শেখ ফরিদের পরিবার তার পিতার ক্রয় সূত্রে মালিক সম্পত্তির ওপর বসবাস ও চাষাবাদ করতে দেখা যায়। ঘটনাটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুরের।
|আরো খবর
সোমবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মৃত জয়নাল আবেদিনের তিন ছেলে রুস্তমপুর মৌজায় ৪৮.৬২ শতক পিতার ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখলে রয়েছেন। বাড়িতে তিন ভাইয়ের তিনটি ঘর রয়েছে। এছাড়া বাড়ির পশ্চিম পাশের ডোবায় মাছ চাষ ও ওপরের অংশে সবজি চাষ করে আসছেন তারা।
জয়নাল আবেদিনের ছেলে ফরিদ মৃধা জানান, তাদের প্রতিবেশী প্রভাবশালী ঢাকা মুগদা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন বাহার ও তার ভাই মোজাম্মেল হোসেন বাবু তাদের সম্পত্তির মূল্য বাড়াতে তাদের তিন ভাই যথাক্রমে ফয়েজ আহমেদ মৃধা, ফরিদ মৃধা ও সোহাগ মৃধাকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করেন। একাধিকবার প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় হামলা করে তাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। চলতি বছরের ১৩ মে রুস্তমপুর বাজারে জনসম্মুখে ফয়েজ আহমেদ মৃধা ও ফরিদ মৃধাকে বেধড়ক মারধর করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার কারণে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে বাধ্য হয়।
ফরিদ মৃধা জানান, ক্ষমতাবান প্রভাবশালীরা মারধরসহ অনৈতিকভাবে জমি দখল করতে না পেরে কৌশলের আশ্রয় নেয়। নিজেরা মামলার বাদী না হয়ে তাদের আরেক প্রতিবেশী জনৈক দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং আমাদের জমিটি তাদের দখলে নেয়ার পাঁয়তারা শুরু করেন। ১৪৫ ধারায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করার জন্য আদালত উপজেলা ভূমি অফিসকে নির্দেশনা দেয়। প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ তাদের কৌশল হিসেবে ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে তাদের পক্ষে সম্পত্তির মিথ্যা দখল দেখিয়ে রিপোর্ট করিয়ে নেয়। অথচ আমরা আজ পর্যন্ত সেই ভূমিতে বসাবস করছি। ফলে গত ১২ সেপ্টেম্বর ভূমি অফিসের দেয়া মিথ্যা রিপোর্ট এবং অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নেয়ার বিষয়ে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।
সরেজমিন গেলে মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন জানান, জয়নাল আবেদিনের সন্তানরা যে জমিতে বর্তমানে ভোগদখলে রয়েছে, তা আমরা পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্য। এজন্যে মামলা করেছি। তারা ক্রয় সূত্রে যতটুকু মালিক তার চেয়ে বেশি দখলে রয়েছেন।
স্থানীয় মুন্না, আব্দুল জলিলসহ বেশ ক’জন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই জয়নাল আবেদিনের সন্তানরা এই সম্পত্তির উপর বসবাস করছেন। কিন্তু গত প্রায় দুইবছর ধরে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে মামলা হামলা চলছে।