মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৪ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩

চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠটিকে খেলার ও খেলোয়াড়দের জন্যে দেয়ার দাবি

চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম
চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠটিকে খেলার ও খেলোয়াড়দের জন্যে দেয়ার দাবি

চাঁদপুর জেলা শহরে যদি একসময় খেলাধুলার কথা বলা হতো তাহলে সকলেই একনামে চিনতেন এবং জানতেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের মাঠটিকে। এ মাঠটি থেকে অনুশীলন করে অনেক ফুটবলার দেশের নামকরা বিভিন্ন ক্লাবসহ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে দেশ ও বিদেশে খেলার মাধ্যমে আনন্দ দিয়েছেন। আজ সেই মাঠটিতে খেলার কোনো ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। করোনার পর থেকে এই মাঠে খেলাধুলা করা কিংবা অনুশীলনের ব্যবস্থা পুরোটাই বন্ধ করে দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মাঠের ভেতর গাছ লাগানো এবং মাঠের ভেতর ম্যুরাল করার কারণে মাঠটিও অনেক ছোট হয়ে গেছে। এ মাঠে একসময় খেলাধুলাসহ অনেক বড়ো বড়ো দলের সভারও আয়োজন করা হয়েছিলো। দেশের বেশ ক’জন নামকরা ফুটবলার এ মাঠ থেকে খালি পায়ে খেলে পরবর্তীতে বুট পরে নিয়মিত জাতীয় ফুটবল দলে খেলেছেন। এই মাঠে নিয়মিত স্থানীয় একটি ক্লাবের আয়োজনে ঘরোয়া ফুটবল প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন বয়সী ফুটবলারদের নিয়ে লীগ ও টুর্নামেন্টের খেলাগুলো হতো। এই খেলা দেখার জন্যে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রীড়ামোদী দর্শকরা কলেজ মাঠে নিয়মিত চলে আসতেন। ফুটবল খেলার পাশাপাশি এই মাঠটিতে সকাল ও বিকেলে দু বেলাতেই ক্রিকেটাররাও অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। বাস্কেটবল মাঠটিতে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দিনের বেশির ভাগ সময়ই খেলাধুলা করতেন। এই মাঠটিতে এখনো খেলার ব্যবস্থা করে দিলে বিভিন্ন ইভেন্টের খেলার আয়োজনসহ খেলোয়াড়দেরও অনুশীলনের সুযোগ সৃষ্টি হতো। ফলে এ জেলা থেকে অ্যাথলেটসহ বিভিন্ন ইভেন্টের অনেক খেলোয়াড় সৃষ্টি হতো।

চাঁদপুর জেলা শহরের মূল অংশে স্টেডিয়াম, আউটার স্টেডিয়াম ও হাসান আলী হাই স্কুল মাঠ ছাড়া তেমন খেলাধুলার কোনো মাঠ নেই। জেলাবাসীসহ ক্রীড়ার সাথে সংশ্লিষ্টরা চাঁদপুরের ক্রীড়াবান্ধব জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে কলেজ মাঠটিকে খেলাধুলার জন্যে একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।

জেলার সাবেক ফুটবলার ও ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তারা দাবি তুলেছেন--কলেজ মাঠটিকে খেলার উপযোগী করে দেয়া হোক।

জেলার সাবেক ফুটবলার ও ফুটবল কোচ মফিজুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের সময়ে এটাই ছিলো আমাদের প্রধান মাঠ। অনেক বিদেশি ফুটবলার এ মাঠে খেলেছেন। কয়েক বছর ধরে মাঠটি অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হওয়ায় ও সংস্কারের কারণে মাঠটি অনেক ছোট হয়ে এসেছে। খেলাধুলার জন্যে যাতে মাঠটিকে ব্যবহার করা যায় সে উদ্যোগ নিতে হবে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ক্রিকেটার হাসান আল জায়েদ রিফাই এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন, খেলাধুলার জন্যে মাঠটিকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। পাশাপাশি মাঠের যে পরিচর্যা রয়েছে সেটার প্রতি খেয়াল রেখে আমাদের খেলাধুলা বহাল রাখতে হবে। দুপুরের পর মাঠটিকে উন্মুক্ত করে দিলেও সন্ধ্যার পর বন্ধ করে দিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সময় যেমন দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রেখে খেলোয়াড়দের অনুশীলনের ব্যবস্থা করে দেয়া যেতে পারে। মাঠটি যেনো নষ্ট না হয় আমাদেরকেও সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল উপ-কমিটির সদস্য ও সাবেক ফুটবলার এবং ফুটবল কোচ জাহাঙ্গীর গাজীর সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তিনি বলেন, যারা খেলাধুলার সাথে জড়িত রয়েছে তাদেরকেই এই মাঠটি ব্যবহার করার জন্যে দেয়া হোক। এই মাঠটি থেকেই আমরা খালি পায়ে ফুটবল খেলা শুরু করেছি। বিকেল ৩টা থেকে যদি শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের জন্যে মাঠটি কর্তৃপক্ষ ব্যবহার করতে দেয়, তাহলে তারা অনুশীলন করার সুযোগ পাবে। জেলা শহরে ফুটবল ও ক্রিকেটের অনেক খেলোয়াড় রয়েছে। এই মাঠটি পেলে তারা অনুশীলনের অনেক সুযোগ পাবে।

সাবেক ফুটবলার ও রেফারী ওয়াহিদুর রহমান লাবুর সাথে আলাপকালে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, করোনার সময় যে মাঠটিকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তা আর খেলার জন্যে ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। এতে করে আশপাশের খেলোয়াড়রা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাঠের থেকে খেলোয়াড় হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে অনেকেই। অতীতে এ মাঠ থেকে অনুশীলন করে অনেক খেলোয়াড় জাতীয় পর্যায়ে খেলেছে। বর্তমানে যদি আবার মাঠটিকে আগের মতো খেলার উপযোগী করে দেয়া হয়, তাহলে এ মাঠ থেকেই আবার আগের মতো অনেক ফুটবলারসহ বিভিন্ন ইভেন্টের খেলোয়াড় তৈরি হবে।

সাবেক অ্যাথলেট ও খেলোয়াড় এবং স্যাটেলাইট চ্যানেল এখন টেলিভিশনের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি তালহা জোবায়েরের সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপকালে তিনি বলেন, চাঁদপুর সরকারি কলেজ মাঠ শহরের তরুণ, কিশোরদের খেলাধুলার প্রাণকেন্দ্র। এই মাঠে শহরের হাসান আলী, আল-আমিন একাডেমি স্কুলসহ শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে থাকে। যাতে করে ছোট-বড় সবাই একত্রে খেলার সুযোগ এবং দলবদ্ধভাবে চলার শিক্ষা পেয়ে থাকে। এতে করে জীবন চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা অর্জন হয়। এই মাঠে অতন্ত এক শতাধিক শিশু-কিশোর খেলাধুলা করতো। কিন্তু বর্তমানে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ হারাচ্ছে। এতে করে নতুন প্রজন্মের অনেকে কিশোর গ্যাংয়ের কালচারে আসক্ত হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়