প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০
ক্রীড়াকণ্ঠের সাথে আলাপচারিতায় সাবেক ফুটবলার এমআর ইসলাম বাবু
নিয়মিত ফুটবল লীগ হলে জেলাতে নতুন খেলোয়াড় তৈরি হবে
এক সময় যিনি শুধুমাত্র ক্রীড়াঙ্গনকেই জীবনের ব্রত মনে করতেন। এখন ক্রীড়াঙ্গনের পাশাপাশি সংস্কৃতি অঙ্গনে তার দেখা সহজেই মিলে। হাইস্কুলে পড়াবস্থায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচিতে সুযোগ পেয়ে শুরু করেছিলেন ফুটবল জীবনের অধ্যায়। সেই স্কুল জীবন থেকে ফুটবলের সাথে জড়িত হয়ে গোলকিপার হিসেবে খেলেছেন ঢাকা স্টেডিয়াম সহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন মাঠে। গোলপোস্টের দায়িত্বে থেকে গোলকিপার হিসেবে জীবনের প্রথম ম্যাচে নিজ জেলার বাইরে খেলতে নেমে সেই ম্যাচ থেকেই নিজের এবং দলের ভাগ্য পরির্বতন করেছেন নিজের দক্ষতায়। ঢাকাতে পাইওনিয়ার বিভাগ ফুটবল লীগ দিয়ে শুরু করে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ সহ খেলেছেন বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে। নিজ জন্মস্থানের ওই এলাকার ক্লাবের হয়ে খেলেছেন নিটল-টাটা ফুটবল লীগ সহ বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্ট ও ফুটবল লীগ। নাট্যকর্মী, নাট্যকার ও নাট্যনির্দেশকসহ আবৃত্তি ও উপস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ সনদও লাভ করেছেন। আর তিনি হলেন চাঁদপুরের সকলের পরিচিত রফিকুল ইসলাম বাবু, বর্তমানে যাকে এমআর ইসলাম বাবু নামেই চিনে। তার বাবার নাম মোঃ আনোয়ার হোসেন। বাবা ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন। মা সালমা বেগম গৃহিণী। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার জন্ম চাঁদপুর শহরের নাজিরপাড়া এলাকায় হলেও বর্তমানে বসবাস করেন চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়ায় মাতাব্বর বাড়ি রোডে নিজ বাড়িতেই।
|আরো খবর
সাবেক এই ফুটবলার বর্তমানে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক, চাঁদপুর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক সুদীপ্ত চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, চাঁদপুর ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আবৃত্তি ও উপস্থাপনা প্রশিক্ষকের দায়িত্ব সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। এমআর ইসলাম বাবু তার প্রাইমারী জীবন শুরু করেন বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিলেন চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেই বিদ্যালয়ে এক বছর পড়ার পরে সপ্তম শ্রেণীতে এসে ভর্তি হন চাঁদপুর গণি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেই বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন এবং চাঁদপুর সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। সেই কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স পাস করে ঢাকা মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কলেজে বিএড-এ ভর্তি হন। খেলাধুলার পাশাপাশি শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে সফলতার সাথেই উত্তীর্ণ হন। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ও পরিবার-পরিজন নিয়ে একসাথে বসবাস করছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। ফুটবল খেলারত অবস্থায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার অন্তর্ভুক্ত বেশ ক’টি ক্লাবের হয়ে নিয়মিত মাঠে খেলেছেন এবং একটি ক্লাবের টানা ৫ বছর অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। চাঁদপুর শিক্ষা অফিসের আয়োজনে শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নিয়মিত খেলা পরিচালনার দায়িত্বে তাকে দেখা যায়। সাবেক এই ফুটবলারের সাথে ক্রীড়াকণ্ঠের এ প্রতিবেদকের আলাপচারিতায় তিনি তার অতীত ও বর্তমান বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। প্রশ্নোত্তর আকারে তার কথাগুলো পাঠকদের জন্য পত্রস্থ করা হলো :-
ক্রীড়াকণ্ঠ : আস্সালামুআলাইকুম, কেমন আছেন?
এমআর ইসলাম বাবু : জি¦ ওআলাইকুম আস্সালাম। সকলকে জানাই পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। আপনাদের সকলের দোয়ায় ও ভালোবাসায় ভালো আছি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : অনেক খেলার মধ্যে ফুটবলের সাথে জড়িয়ে পড়লেন কিভাবে?
এমআর ইসলাম বাবু : আমার জন্মস্থান চাঁদপুর শহরের নাজিরপাড়া এলাকায়। নানার বাড়িতে আমার বড় হয়ে ওঠা। সেই এলাকাতে প্রতিষ্ঠিত একটি ক্লাব রয়েছে নাজির পাড়া ক্রীড়া চক্র। ওই ক্লাবের বেশ ক’জন সিনিয়র ফুটবলারের খেলা দেখে আমি ফুটবলের সাথে জড়িয়ে পড়ি। আমি প্রাইমারি স্কুলে পড়া অবস্থায় দেখেছি জাহাঙ্গীর গাজী, সোহাগ, লাবু, ইউছুফ বকাউল ও জাহাঙ্গীর পাটওয়ারীর ফুটবল খেলা। তাদের খেলা দেখা ও তাদের অনুশীলনের পরই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ফুটবল খেলবো।
ক্রীড়াকণ্ঠ : কখন থেকে ফুটবল খেলা শুরু করেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াবস্থায় ফুটবল খেলা শুরু করি। ওই সময় আমাদের পাড়ার সোহাগ, লাবু ও মাসুম ভাইয়ের মাধ্যমে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে আসি। হাইস্কুলে পড়া অবস্থায় আমি লাবু ভাইয়ের কাছে পড়তাম। উনি আমার শিক্ষক ছিলেন। উনারাই আমাকে ফুটবল খেলার ব্যাপারে অনেক উৎসাহ দিয়েছেন।
ক্রীড়াকণ্ঠ : বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচিতে কিভাবে সুযোগ পেয়েছিলেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি যখন নিয়মিত চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে অনুশীলন করতাম, তখন ঢাকার বিকেএসপি থেকে নির্বাচকরা আসেন উদীয়মান ফুটবলার বাছাই করতে। তখন এ জেলাতে নিয়মিত খেলাধুলা হতো। ওই সময় ফুটবল অনুশীলনের জন্যেও অনেক সময় মাঠের সাইডে বসে থাকতে হতো। ওই অনুশীলনের সময় নির্বাচকদের তালিকায় আমি ও হাজীগঞ্জের জসিম সহ ৩ জনকে তারা বাছাই করেন। আমি তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি। নির্বাচকরা প্রথমে আমাদেরকে ১ মাস প্রশিক্ষণের জন্যে বান্দরবানে নিয়ে যান। ওই প্রশিক্ষণ শেষে আবার ঢাকায় বিকেএসপিতে নিয়ে যান মাসব্যাপী আবাসিক ফুটবল প্রশিক্ষণের জন্যে। সেখানে সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার রক্সি ভাইয়ের প্রশিক্ষণ নেই।
ক্রীড়াকণ্ঠ : চট্টগ্রাম ফুটবল লীগে খেলার সুযোগ মিলে কিভাবে?
এমআর ইসলাম বাবু : ঢাকা বিকেএসপিতে ফুটবলে প্রশিক্ষণ নেয়াবস্থায় চট্টগ্রামে ফুটবল লীগ শুরু হয়। আমাকে তখন চট্টগ্রাম শতদল ক্লাবের ৪নং গোলকিপার হিসেবে নেয়া হয় দলে। ওই ক্লাবে তখন জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় এমিলি ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার চাঁদপুরের জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী, শাকিল খান সহ অনেকেই খেলতেন। আমাদের দলের ১৬টি খেলার মধ্যে ১৩টি ম্যাচের অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। তখন দলের কোচ ছিলেন খোকন ভাই। আমরা যারা ওই ক্লাবে তরুণ ফুটবলার হিসেবে যোগ দেই, লীগের শেষ ৩টি ম্যাচ তখন বাকি ছিলো। ক্লাবের পয়েন্ট তখন অনেক তলানির দিকে। সে অবস্থায় আমি গোলকিপারের দায়িত্ব সহ ফুটবল দলের হয়ে খেলতে নামি। আমরা লীগের শেষ ৩টি ম্যাচে জয়লাভ করার পর ওই বছর আমাদের দলটি লীগে টিকে থাকে। আমি শতদল ক্লাবের হয়ে প্রথম যেই ম্যাচটিতে খেলতে নেমেছিলাম সেই দলের প্রতিপক্ষ দলটি ছিলো চট্টগ্রাম মোহামেডান ক্লাব। সেই দলের গোলকিপার ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার (গোলকিপার) আমিনুল ইসলামসহ ইরাকী ফুটবলার রিয়াদ ও আরিফুল। ওই ম্যাচটি ড্র হয়। খেলা ড্র হওয়ার পর টাইব্রেকারের মাধ্যমে খেলা নিষ্পত্তি হয়। আমি গোলকিপারের দায়িত্বে ছিলাম এবং সেই ম্যাচে জয়লাভ করার ফলে আমাদের শতদল ক্লাবটি রেলিগেশন লীগে টিকে যায়। এরপর আমার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলে আমি চাঁদপুর চলে আসি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকা পাইওনিয়ার লীগে খেলেন কখন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি ১৯৯৮ সালে ঢাকার মিরপুরের স্পন্দন ক্রীড়া চক্রের মাধ্যমে পাইওনিয়ার লীগে খেলা শুরু করি। দলের ট্রায়ালে অনেক খেলোয়াড়ের মধ্যে সুযোগ পাই খেলার। আমি ওই ক্লাবের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে না পারলেও ২য় ম্যাচ থেকে শুরু করে ওই বছর ক্লাবের হয়ে ১৮টি ম্যাচ খেলি। আমাদের দলটি লীগে ৪র্থ হয়। আমি পাইওনিয়ার লীগে ওই ক্লাবের হয়ে ২ বছর নিয়মিত খেলি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকায় ৩য় ও ২য় বিভাগ ফুটবল লীগে কোন্ ক্লাবের হয়ে খেলেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি পাইওনিয়ারে খেলাবস্থায় যাত্রাবাড়ী ক্রীড়া চক্রের কর্মকর্তারা তাদের দলে খেলার জন্যে সিলেক্ট করেন। আমি ২০০০ ও ২০০১ এই ২ বছর ওই দলের হয়ে ৩য় বিভাগ ফুটবল লীগে খেলি। আমাদের দলটি চ্যাম্পিয়ন হলে আমি ২য় বিভাগ ফুটবল লীগে খেলার সুযোগ পাই।
ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকার মাঠে প্রথম বিভাগ ফুটবল খেলেছিলেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি ঢাকার প্রতিষ্ঠিত ক্লাব পিডব্লিউটির মাধ্যমে প্রথম বিভাগ ফুটবল খেলি। যেই দলটিতে একসময় দেশের সেরা ফুটবলাররা খেলেন। ওই ক্লাবটিতে ১ বছর খেলার পর ফকিরাপুল ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগ খেলি। আমি টানা ১০ বছর ঢাকায় খেলাবস্থায় মিরপুর জাতীয় স্টেডিয়াম, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, আর্মি স্টেডিয়াম, কমলাপুর স্টেডিয়াম, ঢাকা আউটার স্টেডিয়ামে প্রায় ১শ’র বেশি ফুটবল ম্যাচ খেলেছি বিভিন্ন ক্লাবের সাথে।
ক্রীড়াকণ্ঠ : ঢাকায় চাঁদপুরের কোন্ ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি আমার প্রিয় ক্লাব নাজিরপাড়া ক্রীড়া চক্রের হয়ে ঢাকায় নিটল-টাটা ফুটবল লীগে খেলার সুযোগ পাই। আমাদের দলটি চাঁদপুর জেলা লীগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমরা ঢাকাতে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। ওই সময়ে ক্লাবের দুই কর্মকর্তা সফিক উল্লাহ সরকার ও দেওয়ান আরশাদ আলী (বর্তমানে দুজনই মরহুম) খেলার ব্যাপারে অনেক সহযোগিতা সহ উৎসাহ দিয়েছেন।
ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরে কোন্ কোন্ ক্লাবের হয়ে খেলেছেন, কোথায় কোথায় খেলেছেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি চাঁদপুর জেলা ফুটবল লীগে নাজিরপাড়া, পশ্চিম শ্রীরামদী ক্রীড়া চক্র ও ভাই ভাই স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছি। ২০১৫ সালের দিকে পশ্চিম শ্রীরামদী ক্লাবের হয়ে খেলার পর মাঠ থেকে বিদায় নেই। আমি যখন থেকে ফুটবল খেলা শুরু করি এবং যখন খেলা ছেড়ে দেই সেই সময় পর্যন্ত বলতে গেলে বৃহত্তর কুমিল্লা সহ চাঁদপুরের ৮ উপজেলার এমন কোনো মাঠ নেই যেই মাঠে আমি ফুটবল খেলিনি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে খেলেছেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে ফেণী গোল্ডকাপ ফুটবলে অংশ নিয়েছিলাম। আমাদের দলটি সেই বছর ফেণীতে রানার্সআপ হয়।
ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনি অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় কিভাবে আসেন? মঞ্চ নাটকের সাথে কি জড়িত ছিলেন?
এমআর ইসলাম বাবু : আমি স্কুলে পড়াবস্থায় নাটক করতাম। এসএসসি পাস করার পর অগ্নিতরুণ নাট্য গোষ্ঠীর মাধ্যমে মঞ্চ নাটকে যাত্রা শুরু করি। পড়াশোনা ও খেলাধুলার পাশাপাশি নিয়মিত মঞ্চ নাটকের সাথে জড়িয়ে পড়ি। মঞ্চ নাটকের ওপর অনেক কর্মশালা করেছি। কর্মশালা করতে গিয়ে সঠিক ও শুদ্ধ উচ্চারণ অনেকটা আয়ত্তে আসে। সেই থেকেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে আবৃত্তি ও নাট্যকলা বিভাগে প্রশিক্ষণ নেই। তার পাশাপাশি উপস্থাপনাকে একটি শিল্প হিসেবে নিয়ে নিজেকে জড়িয়ে ফেলি। প্রথমে নিজের সংগঠন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সহযোগী সদস্য স্বরলিপি নাট্যগোষ্ঠীর মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা শুরু করি। ২০১৬ সালের দিকে সংগঠনের ‘সম্প্রীতির বন্ধন’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনার পুরো কার্যক্রম শুরু হয়। আমি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান সহ চাঁদপুর জেলার অনেক বড় বড় অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করার সুযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে পদ্মাসেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, ক্ষণগণনা উৎসব, বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : নাট্যজগতে অভিনয়ের পাশাপাশি কি নাটক লিখেছেন?
এমআর ইসলাম বাবু : হ্যাঁ, আমি এ পর্যন্ত ৫০টির মতো নাটকে অভিনয় করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ধানমন্ডী-৩২, বিদ্যামন্ত্র, ৭১-এর তারামন, দ্যা মেট, কদমফুল ইত্যাদি। আমার লেখা নাটকের মধ্যে রয়েছে ধানমন্ডী-৩২, কদমফুল, সন্দেহ, পরিত্রাণ, মুক্তি। রূপান্তর কংশবদসহ বেশ ক’টি নাটকের রচিয়তার সাথে জড়িত রয়েছি।
ক্রীড়াকণ্ঠ : চাঁদপুরের খেলাধুলা নিয়ে কিছু বলেন।
এমআর ইসলাম বাবু : আগে চাঁদপুরে নিয়মিত জেলা ফুটবল লীগ হতো। জেলার ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ তখন নিয়মিত স্টেডিয়ামে যেতেন খেলাধুলা দেখতে। এখন আর নিয়মিত জেলা ফুটবল লীগ কিংবা কোনো লীগ বা টুর্নামেন্ট হচ্ছে না। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে নিয়মিত বিভিন্ন খেলাধুলার টুর্নামেন্ট চালানো উচিত। বর্তমানে যুব সমাজ মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। স্টেডিয়াম থাকাবস্থায়ও তারা মাঠে যেতে চায় না। আমাদের সময় আমরা খেলার জন্যে সাইড লাইনে বসে থাকতাম। ওইসময় খেলার জন্যে আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতো। খেলাধুলায় চাঁদপুরের অনেক সুনাম রয়েছে। যেমন বাংলাদেশ ক্রিকেট ও ফুটবল দলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের খেলোয়াড়রা খেলছেন। এটা একটা ভালো দিক। নিয়মিত খেলাধুলা হলে খেলোয়াড় বের হয়ে আসবে। নিয়মিত ফুটবল লীগ না হওয়াতে এখন আর নতুন খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে না। খেলোয়াড় তৈরি করতে হলে প্রশিক্ষণসহ খেলাধুলার আয়োজন অব্যাহত রাখতে হবে।
ক্রীড়াকণ্ঠ : উদীয়মান খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
এমআর ইসলাম বাবু : উদীয়মান খেলোয়াড়দের লক্ষ্য থাকতে হবে আমাকে ভালো কিছু করতে হবে। নিয়মিত অনুশীলনের সাথে জড়িত থাকতে হবে। খেলাধুলার পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। ভালো খেলোয়াড় হতে হলে পড়াশোনায়ও ভালো হতে হবে। স্বপ্ন নিয়ে এগুতে হবে। একজন খেলোয়াড় যদি ভালো খেলা উপহার দিতে পারে তাহলে তার পাশে অনেকেই এগিয়ে আসবে।
ক্রীড়াকণ্ঠ : আপনাকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
এমআর ইসলাম বাবু : জি¦ আপনি সহ সকলের প্রতি রইলো অগ্রিম পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।