প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ০৭:০৪
১৭ বছরেও হয়নি ঐক্য
শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির গ্রুপিং তীব্র হচ্ছে
সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

২০০৮ সাল থেকে চলে আসছে শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির গ্রুপিং। দীর্ঘ সময় পার হলেও সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বিএনপির নীতি নির্ধারণী মহল। দিন দিন গ্রুপিং তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। যে কোনো সময় উভয় পক্ষ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শাহরাস্তি উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে বর্তমানে প্রকাশ্যে তিনটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। সভা-সমাবেশ পালন করছে আলাদাভাবে। বিগত আওয়ামীলীগ শাসনামলে প্রকাশ্যে গ্রুপিং থাকলেও নিজেদের মতো করে দলীয় কর্মসূচি পালন করতো। হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেকটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে করে প্রশাসন অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। গ্রুপিংয়ের ফলে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি সহ প্রকাশ্য বিরোধে জড়িয়ে পড়ছে কর্মীরা। ২০০৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মতিন মনোনয়ন পেয়েও নির্বাচনে অংশ নেননি। ঐ সময় দলের মনোনয়ন লাভ করেন মমিনুল হক। সেই থেকে মতিন অনুসারীরা এম এ মতিনের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিগত করোনার সময় এম এ মতিনের মৃত্যুর পর মমিনুল হক এককভাবে শাহরাস্তি- হাজীগঞ্জ উপজেলার নেতৃত্বে থাকলেও গ্রুপিং বন্ধ হয়নি। এর মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিস্টার কামাল হোসেন তাঁর কর্মকাণ্ড শুরু করেন। সম্প্রতি দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। এতে নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়ছে দলের সহযোগী সংগঠনগুলোও। ব্যক্তি পর্যায়ে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন অনেকেই। নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার ও আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগিয়ে অপদস্থ করার মতো ঘটনা ঘটেছে। নেতাদের অবস্থান চাঙ্গা করতে গিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এতে সচেতন মহল ও সাধারণ কর্মীদের মাঝে বিএনপির প্রতি অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৭ বছর ধরে চলে আসা বিএনপির গ্রুপিংয়ের অবসান চায় সাধারণ নেতা-কর্মীরা।
|আরো খবর
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. মোস্তফা কামাল জানান, দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন ভাই এলাকার রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় আমরা আশা করি সকল দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটবে। ইতোমধ্যেই তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপির জন্যে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনো ভাইয়ের রাজনীতি নয়, আমাদের নেতা তারেক রহমান, আমরা সবাই দলের কর্মী।
উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলী হোসেন মন্টু বলেন, ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রামের পর নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং কাম্য নয়। এজন্যে সকল সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে এক জায়গায় আসতে হবে।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মিয়াজী বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, দীর্ঘদিনের ভেদাভেদ ভুলে হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপিকে জয়যুক্ত করবো। আমি সবাইকে এক কাতারে এসে দলকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানাই।