প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
মানুষের চরিত্র প্রকৃতিগতভাবে বা জিনগতভাবেই ফুটে উঠে, এটা আমার কাছে ৯৯% সঠিক বলে মনে হয়। বিতর্ক আছে বিতর্ক থাকবে। বাবা-মায়ের ভালো-মন্দ দুটি দিকই সন্তান বহন করে। তাৎক্ষণিক তার মস্তিষ্ক থেকে যেটা সাড়া দেয়, সেটাই গ্রহণ করে তার অন্তর কুটির।
মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই এটা সত্য, গরমিলটা হেডকোয়ার্টারে! (আই মিন মাথায়) যেখান থেকে সিগন্যাল আসে, সে কীভাবে ধাবিত হবে, কোন্ কাজটা করবে, কার জন্যে কোন্ মুহূর্তে কী করণীয়, চিন্তাশীল মগজ সেটা বলে দেয়।
জিন মানবদেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রভাব ফেলে। সেখান থেকেই প্রকাশ হয় মানুষের ক্যারেক্টার। বিজ্ঞানীদের আরো জিনতত্ত্ব শ্রেণীবিভাগ বিশ্লেষণ অবশ্যই আছে।
আমাদের লাইফটা জন্ম থেকে মৃত্যু অব্দি একটা রেলগাড়ি। একটা কামরায় উঠে বসে আছি। আপনজন, পরিচিত, অপরিচিত এই কামরাতে উঠে, ভাব হয়, আলাপ হয়, সম্পর্ক হয়, আবার স্টেশন আসলে নেমে যায়!
আমার গন্তব্য আসলে আমিও নেমে যাবো।
আপন আপন ক্যারেক্টার বা চরিত্র কেউ অনুধাবন করে, কারো চরিত্র আবার ¯্রােতের টানের ঢেউ! প্রকৃতিগতভাবে বা জিনগতভাবেই মানুষের কোয়ালিটি, এটা আমার ব্যক্তিগত বা নিজস্ব এনালাইসিস। আমার সাথে অনেকেই একমত হবেন, আবার নাও হতে পারেন।
ভালো মানুষের ভেতর ২/১টা যে খারাপ বৈশিষ্ট্য নেই তা বলা যাবে না, তেমন খারাপ মানুষের ভেতর ২/১টা যে ভালো বৈশিষ্ট্য নেই তা-ও বলা যাবে না।
বলে না যে, বাপটাই খারাপ!
বাপের দোষ পেয়েছে!
আবার বলে,
দেখো, বাবা-মায়ের শিক্ষা-
ছেলেটাকে একটা হীরের টুকরো তৈরি করেছে।
কেবল শুধু একজন মানুষের চরিত্র নয়, তার হাত, মুখ, নাক, চোখ, এমনকি গায়ের রঙ, এটাও বাবা-মা বা বংশধরের কাছ থেকেই আসে।
পরিবার থেকে কী শিক্ষা পেলো, সেটা পার্মানেন্টলি ঢুকে যায় মগজে, সঙ্গ বা সঙ্গী বা সমাজিক প্রভাবও পড়ে মানুষের মগজের একাংশে!
ভালো হওয়া বা ভালো মানুষ হওয়া, বিষয়টা মনে মনে লালন করার বিষয়। তা নিয়ে আগেই বলেছি, ওই যে হেডকোয়ার্টার! যা তোমায় নির্দেশ করে তা-ই তুমি মনের কুটিরে পৌঁছে দাও বা রেখে দাও। এখানে আমাকে আবারও বলতে হয়, হেডকোয়ার্টার বা মগজের বিষয়টা জিনগত।
রক্ত বহন করে জিন, যতোই চেষ্টা করো না কেন, রক্ত ধুয়ে ফেলা যায় না।
সৎগুরুর একটা কথা আছে : একুশ বছর পর নাকি মানুষ নিজের সিদ্ধান্তে চলে।
ভেবে দেখলাম, নিজের সিদ্ধান্তটাও আসে হেডকোয়ার্টার থেকে (আই মিন মাথা) থেকে। যা পৌঁছে যায় মনে। মন নেয় সিদ্ধান্ত, আর সিদ্ধান্ত গঠন করে চরিত্র। আর চরিত্রের মধ্যে বাস করে জিন।
আমার বিহিত বাস্তবতা বলে দেয়, মানুষের চরিত্র অনেকটা জিনতত্ত্বে আবৃত। বিজ্ঞানের ভাষাও তাই।
দেখেছি অনেক মিশেছি বেশি/মানুষে মানুষে অকারণে শুধু রেষারেষি!
‘যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো’। -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আমি সবসময় আমার চেয়েও একজন ভালো মানুষের সঙ্গী হতে চাই, মুক্ত আকাশে
নিতে চাই স্বস্তির অক্সিজেন।
সবার জন্য নিরন্তর শুভকামনা।
লেখক : সাহিত্য সম্পাদক, বঙ্গজ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, পুরাণবাজার, চাঁদপুর।