বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

পাদটীকা সমাচার
বিমল কান্তি দাস

এই মহান বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির বৈচিত্র্য মানব মনের জন্যে অসীমণ্ডদুর্বোধ্য এক লীলা ক্ষেত্র মাত্র। সসীম মানুষ সৃষ্টির অসীমত্ব অনুধাবন করতে গিয়ে নিশ্চয়ই চিন্তার খেই হারিয়ে ফেলতে হয়। অসীমত্বের নিগূঢ় তত্ত্ব নিয়ে একমাত্র সৃষ্টা নিজেই আপন মনে নিশি-দিন চির নিয়মানুবর্তী ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। এ যেন এক সাধারণ ব্যতিক্রমহীন চলমান দৃশ্য।

ভূপৃষ্ঠে এমন কিছু চলমান ক্রীড়ার বর্ণনা অতীব চমকপ্রদ। আমরা নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ে অভ্যস্ত। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু জায়গা আছে যেখানে বরুণদেব দিনের ২৪ ঘন্টায়ই বিরাজ করে। এখানে তপনানন্দ ‘মিডনাইট সান’ নামে অভিহিত। ভূপৃষ্ঠে প্রথম সূর্যোদয় জাপানে। উত্তর গোলার্ধে ২১শে জুন এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ২৩শে সেপ্টেম্বর রাতেও সূর্যাস্ত হয় না। এ জন্য নরওয়েকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলা হয়। দক্ষিণ আমেরিকার ইকুয়েডর দেশটির রাজধানী কুইটো কীটো নামেও পরিচিত, চির বসন্ত বিরাজমান। শহরটি নিরক্ষ রেখার উপর অবস্থিত বলে এখানে সূর্যরশ্মি সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয়। পৃথিবীর শীতলতম স্থানটি সাইবেরিয়ার পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পর্বতময় এলাকা। নামটি হলো ভারক্ষয়ানক্স। এটি মানব বসতি সম্পন্ন একমাত্র শীতলতম স্থান। পৃথিবীর উষ্ণতম স্থানটি লিবিয়ার আল-আজিজিয়া শহর নামে পরিচিত। এশিয়ার উষ্ণতম স্থানটি পাকিস্তানের জেকোবাবাদ।

মেঘালয় মানে মেঘের দেশ। এখানে ‘মিউসিনরাস’ গ্রামে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। যার পরিমাণ বছরে ৪৬৭ ইঞ্চি। হিমালয় অববাহিকা অঞ্চল চেরাপুঞ্জিতেও প্রায় একই পরিমাণের বৃষ্টিপাত বর্ষিত হয়। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী মিশরের নীল নদ। যার দৈর্ঘ্য ৬,৬৯০ কিঃ মিঃ। দ্বিতীয় স্থানের নদীটি হলো দক্ষিণ আমেরিকার আমাজান। যার দৈর্ঘ্য হলো ৩০০০ মাইল (প্রায়)। ইহা তিনটি দেশ বিধৌত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে। বিশ্বের গভীরতম সমুদ্র প্রশান্ত মহাসাগর। এর গভীরতা প্রায় চার হাজার মিটার। পৃথিবীর খর¯্রােতা নদী হলো আমাজান। এশিয়ার খর¯্রােতা নদী হলো কর্ণফুলী এবং গোমতি। কর্ণফুলী নদীটি লুসাই পাহাড় থেকে ১৮০ কিঃ মিঃ পথ অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ‘সাগর কন্যা’ কুয়াকাটা। এখান থেকে সূর্যের উদয়াস্ত উভয়টি অতীব স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয়। পৃথিবীর বৃহত্তম জলপ্রপাত ‘নায়াগ্রা’ যুক্তরাষ্ট্র ও কানডায় অবস্থিত। সাম্প্রতিক কালের এক জরিপে দেখা গিয়েছে যে, চীনকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সব চেয়ে জনবহুল দেশ এখন ভারত। চীনকে অতিসম্প্রতি জনসংখ্যায় ছাড়িয়ে গেছে।

আনুমানিক ১১০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০ অব্দের বৈদিক যুগের বঙ্গদেশ-সমন্বিত বাংলা-বিহার উড়িষ্যা- বাংলা-পূর্ববঙ্গ-পশ্চিম বঙ্গ-পূর্ব পাকিস্তান এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সৃষ্টি বাংলাদেশ একটি চরম অবস্থার দেশ। যা শিক্ষা, সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্যে বিশ্বানুপম সৌন্দর্যের সূতিকাগার বল্লেও অত্যুক্তি হবে না।

এ বাংলায় যাঁরা অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তাঁরা হলেন সাহিত্য স¤্রাট বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কথা সাহিত্যিক শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের উদ্দীপক বিপ্লবী কবি ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বাংলা ভাষায় সুপ্ত বিবিধ রতন উদ্ধার করে অমিত্রাক্ষর ছন্দের আবিষ্কারক বিপ্লবী মাইকেল মধু কবির ইংরেজি ভাষার সনেটের প্রতি ভ্রুকুটি মাত্র। এবং অতি সমৃদ্ধ বাংলা ভাষাকে বিশ্ব-সাহিত্য কোষে অন্তর্ভুক্ত করেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ। বিজ্ঞানের একজন অমর প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব জগদীশ চন্দ্র বসু প্রমুখ মাইক্রো ওয়েভ প্রযুক্তির ওপর সফল গবেষণা আধুনিক যোগাযোগ বিজ্ঞানের পথিকৃৎ। বাংলার অপর একজন পদার্থ বিজ্ঞানী মেঘনাথ সাহা তাপীয় আয়নীকরণ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করে বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি সাধন করেছেন।

এতদ্ব্যতীত বাঙালি বিজ্ঞানীরা হলেন সত্যেন বোস, ড. কুদরাত-এ-খুদা, কাজী মোতাহার হোসেন প্রমুখ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং রাজা রাম মোহন রায় ছিলেন রুচিসম্মত সংস্কৃতির সুস্পষ্ট বাতিঘর।

হে রত্নগর্ভা, বীর প্রসবিনী বঙ্গজননী! আজ তোমার আকস্মিক বন্ধ্যাত্ব আমাদেরকে নিতান্তই অসহায় করে দিয়েছে। তোমাতে পুনর্জন্ম ঘটে না সূর্যসেন-প্রীতিলতার বীরত্বের অনুরূপ ভয়ঙ্কর বীরত্ব নিয়ে জন্মানো বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর। কিন্তু তা তো যুগের প্রয়োজনের তাগিদেই আবির্ভাব। আজ বাংলার সর্বত্রই আবহমান কালের চলমান সংস্কৃতির বিকৃত রূপ বাংলার শ্রেষ্ঠত্বকে নিকৃষ্ট স্তরে নিয়ে যাচ্ছে।

বিমল কান্তি দাশ : কবি ও প্রবন্ধকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক, বলাখাল যোগেন্দ্র নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়