প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
চা খেতে চিকিৎসকের এতো সময় লাগে!
গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোর গোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছে। কিন্তু সেখানে কর্মরত কিছু চিকিৎসকের নিয়মিত অনুপস্থিতির কারণে সরকারের আন্তরিক উদ্যোগ কোথাও কোথাও ভেস্তে যায়। এর ফলে চিকিৎসা সেবার নামে প্রহসন চলে বলে অনেকে অভিযোগ করেন।
|আরো খবর
গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে একটি সংবাদের শিরোনাম হয়েছে এমন-‘পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তার আসেন না ॥ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা।’ এ ক্লিনিকের জন্যে নিয়োগকৃত চিকিৎসক ডাঃ ফিরোজ ক্লিনিকের পাশের বাড়ির একজন নারীর কাছে চাবি রাখেন। সেই নারী প্রতিদিনের মতো কমিউনিটি ক্লিনিকটি খুলতে ভুল করেন না। কিন্তু ডাঃ ফিরোজের দেখা মিলে না। নিজের ইচ্ছেমত তিনি ক্লিনিকে আসেন, আবার চলে যান। প্রায় সময় তিনি ক্লিনিকে আসেন না। অপেক্ষমান রোগীরা ফোন করলে উপজেলা সদরে বা অন্য কোথাও মিটিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। ক’জন ভুক্তভোগী রোগী গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমরা দূর থেকে পায়ে হেঁটে ক্লিনিকে আসি, এসে দেখি ক্লিনিক খোলা, কিন্তু ডাক্তার নেই। সরকার গরিবের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্যে ক্লিনিক করেছে, কিন্তু ডাক্তার ঠিকমত ক্লিনিকে আসেন না।
পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়োগকৃত ডাঃ ফিরোজের সাথে ক’দিন আগে সরেজমিনে যাওয়া গণমাধ্যম কর্মী ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, আমি সকাল ৯টায় ক্লিনিকে এসেছি। তবে মাঝখানে একটু চা খেতে বাইরে গিয়েছিলাম। তার এই চা খাওয়ার সময় অপেক্ষমান রোগীদের কেউ কেউ চিকিৎসাসেবা না নিয়ে বাড়ি চলে যান। প্রশ্ন হলো, ডাক্তার আসলে কি চা খেতে গিয়েছিলেন, না প্রাইভেট প্র্যাকটিসের প্রয়োজনে কোনো ঔষধ কোম্পানির মোটর সাইকেলে চড়ে নিকটস্থ কোনো ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকে গিয়েছিলেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়োগকৃত চিকিৎসক ডাঃ ফিরোজের দায়িত্বপালনে অনিয়মের চিত্র প্রকৃত পক্ষে দেশের অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকেরই চিত্র। এ চিত্র পাল্টানোর জন্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনিক পদে কর্মরত সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে তদারকির যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, সেটা অধিকাংশজনই নানা অজুহাতে এড়িয়ে যান। এটা কতোটুকু সঠিক এবং সেজন্যে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জবাবদিহিতার প্রশ্নে কতোটুকু স্বস্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকেন, সেটা ভেবে দেখার মতো বিষয়।
চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা পলিন বলেছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের সব সময় তদারকি করা হয়। যেহেতু আমরা পশ্চিম সকদী কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত ডাঃ ফিরোজের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। ভুক্তভোগী রোগীদের সাথে সাথে আমরাও এ ব্যবস্থাগ্রহণের অপেক্ষায় থাকলাম।