প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ
চাঁদপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ চলছে। এই প্রশিক্ষণ যে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার অনুকূলে হচ্ছে সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়। চাঁদপুর শহর, শহরতলী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রচারের প্রয়োজনে উচ্চশব্দে মাইকের যে ব্যবহার হয়, সেটা শ্রুতিকটু। এ ব্যাপারে মাইক অপারেটরদের প্রশিক্ষণ প্রদান তো দূরের কথা, সাধারণ জ্ঞান ব্যবহারের কথাও বলে দেয়া হয় না। অথচ কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ন্ত্রিত মাত্রার শব্দে মাইকে এমনভাবে প্রচার করা হয়, যা শ্রুতিগ্রাহ্য ও শ্রুতিমধুর হয়। মাইক অপারেটররাও খুব সহজে ক্লান্তি বোধ করেন না। চাঁদপুরে মাইক অপারেটররা গায়ের জোরে উচ্চ কণ্ঠে এমনভাবে প্রচার করেন, তাতে শ্রোতা যেমন বিরক্ত হয়, তেমনি অপারেটররাও দ্রুত ক্লান্তি বোধ করেন।
|আরো খবর
আশার কথা এই যে, চাঁদপুরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ চালাচ্ছে। গত ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন পেশাজীবীকে নিয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে টাইলস্ ব্যবসায়ী, মসজিদের ইমাম, সাংবাদিক, পরিবহন শ্রমিক ও চালকসহ অন্যান্য পেশাজীবী অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণের একদিন পূর্বে ১২ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরেকটি প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাস, ট্্রাক ও মাইক্রোবাস চালক এবং সহযোগীসহ ৭০জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। প্রশিক্ষকরা শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো প্রশিক্ষণার্থীদের জানানোর চেষ্টা করেন এবং সেই সাথে শব্দদূষণ সম্পর্কে সকলকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান।
শব্দদূষণ বলতে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়। কেউ লাগাতার শব্দদূষণের শিকার হলে তার শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। এছাড়া আচার-আচরণে ও স্বাস্থ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন খিটখিটে মেজাজ, উগ্রতা, ঘুমের ব্যাঘাত, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি।
বলা দরকার, মানুষের কান যে কোনো শব্দের ব্যাপারে যথেষ্ট সংবেদী। তাই তীব্র শব্দ কানের পর্দাতে বেশ জোরে ধাক্কা দেয়, যা কানের পর্দাকে ফাটিয়েও দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এর ক্ষতিকর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
আমরা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয় কর্তৃক সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত একের পর এক প্রশিক্ষণকে যথার্থ ও সময়োপযোগী বলে মনে করছি। চলমান এ প্রশিক্ষণের আওতায় চাঁদপুরের বিভিন্ন পেশাজীবী হয়তো বা সুযোগ পেতে পারে, তবে মাইক ব্যবসায়ী ও অপারেটররা যাতে সুযোগবঞ্চিত না হয়, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমরা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতা প্রত্যাশা করছি।