মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ফরিদগঞ্জের বেকারদের এমন বক্তব্য সঠিক
অনলাইন ডেস্ক

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোর হোটেল-রেস্তোরাঁয়, মিনি মার্কেট ও বিভিন্ন দোকানের সামনে বসে থাকা শিক্ষিত বেকার যুবকদের বলতে শোনা যায়, শিক্ষাগ্রহণ করে বয়স শেষ করলাম। অর্থ, মামা ও দুলাভাই না থাকায় চাকরি পাই না। যদি আমাদের এলাকার শিল্পপতিরা সবাই মিলে বেকারদের কথা ভেবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাগ্রহণ করতেন এবং উৎপাদনমুখী কলকারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতেন, তাহলে একদিকে যেমন বেকার সমস্যা দূর হতো, অন্যদিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চুরি-ডাকাতিসহ অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হতো।

প্রাগুক্ত মন্তব্যটি চাঁদপুর কণ্ঠের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি এমরান হোসেন লিটনের। তিনি চাঁদপুর কণ্ঠে এমন একটি সংবাদ পরিবেশন করেন, যেটি রোববার শেষ পৃষ্ঠায় গুরুত্ব সহকারে ছাপা হয়। সংবাদটির শিরোনাম হয়েছে ‘ফরিদগঞ্জ শিল্পপতির দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও কর্মসংস্থানের দিক থেকে পিছিয়ে’। আকর্ষণীয় এই শিরোনাম দেখে পাঠকদের অধিকাংশই সংবাদটি পুরোপুরি পড়েছেন এবং কম-বেশি বিস্মিত হয়েছেন। লিটন তার সংবাদের শেষ স্তবকে লিখেছেন, ফরিদগঞ্জের উপজেলা সদর, চান্দ্রা বাজার, রূপসা বাজার, গৃদকালিন্দিয়া বাজার, মুন্সিরহাট, কালিরবাজার, গোয়ালভাওর বাজার সবচে’ উৎপাদনমুখী ও ব্যস্ততম বাজার। সকলের বিশ্বাস, শিল্পপতিরা যদি তাদের সুন্দর মন নিয়ে কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করেন এবং তাদের পছন্দমতো ভূমি চান তাহলে তা দিতে কেউ অস্বীকার করবে না। ফরিদগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল শিক্ষিত বেকারের পরিবার আশায় আছে, কবে আসবে তাদের সেই দিন।

এমরান হোসেন লিটনের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা লিখতে চাই, ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যে কোনো ধরনের শিল্পকারখানা গড়ে তোলার মতো উপযোগী জায়গা, পরিবেশ ও সুগম যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে ফরিদগঞ্জে। কেননা উপজেলাটি চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সিআইপি) বেড়িবাঁধের ভেতরে হওয়ায় বন্যামুক্ত। এতোসব উপযোগিতা থাকা সত্ত্বেও ফরিদগঞ্জে গড়ে উঠছে না বড় ধরনের কোনো শিল্প-কারখানা। ফরিদগঞ্জে বিত্তশালী এমন কিছু শিল্পপতি রয়েছেন, যাদের বিপুল টাকা ও অগাধ সম্পদের হিসাব তারা নিজেরাও জানেন না বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তাদের কেউ কেউ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে রাজনীতি করতে গিয়ে এবং জনপ্রতিনিধি হবার উচ্চাভিলাষে স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের সভা, মিছিলসহ যাবতীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট করে কার্যত স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার করে চলছেন, কিন্তু এসব যুবকের কর্মসংস্থানসহ স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের কথা ভাবছেন না। এমন শিল্পপতিরা মসজিদ, মাদ্রাসা নির্মাণ কিংবা ধর্মীয় কাজে পৃষ্ঠপোষকতা, দান-খয়রাতসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে অবদান রেখে স্বীয় পরিচিতির ব্যাপক সম্প্রসারণ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যাকাত, শীতবস্ত্র ইত্যাদি বিতরণে স্থানীয় শিক্ষিত বেকারদের দেদার ব্যবহার করলেও তাদের অভিভাবকদের শান্তি ও স্বস্তির জন্যে বেকারত্ব দূরীকরণে কেউই নিচ্ছেন না কোনো পদক্ষেপ, হচ্ছেন না কার্যকর উদ্যোক্তা। সেজন্যে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এমন শিল্পপতিরা স্বীয় কল্যাণে রাজনীতি করছেন, জনকল্যাণে নয়। এরা শিক্ষিত বেকারদের রাজনৈতিক ক্যাডার বা মাস্তানে পরিণত করে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ও পরিবারের বোঝা হবার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।

অবশেষে ফরিদগঞ্জের শিক্ষিত বেকার যুবকরা মুখ খুলেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন, এ উপজেলায় পৈত্রিক সূত্রে জন্মগ্রহণকারী শিল্পপতিরা ঢাকার অভিজাত এলাকায় বসবাস করে এবং ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ সন্নিহিত অঞ্চলে শিল্পকারখানা গড়ে তুলে অন্য এলাকায় শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে চলছেন, নিজেদের আখের গোছাচ্ছেন, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছেন, আর তাদেরকে রাজনৈতিক ও স্বীয় স্বার্থে ব্যবহার ছাড়া তাদের টেকসই কর্মসংস্থানের বিষয় এড়িয়ে চলছেন। আমরা ফরিদগঞ্জের শিক্ষিত বেকার যুবকদের প্রাগুক্ত বক্তব্য এবং উপলব্ধিকে সঠিক বলে মন্তব্য করতে মোটেও দ্বিধান্বিত নই। আমাদের বিশ্বাস, এবার উদ্দিষ্ট শিল্পপতিদের কারো না কারো টনক নড়বে এবং ফরিদগঞ্জের শিক্ষিত বেকার যুবকদের টেকসই কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ত্বরিৎ উদ্যোগ নেবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়