প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
এমন রদবদল ও বদলি যথার্থ
চাঁদপুর পৌরসভায় কর্মরত ১৩জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর দপ্তর রদবদলের মাধ্যমে বদলি করেছেন পৌর প্রশাসক। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার পৌরসভার প্রশাসক একরামুল ছিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ রদবদল ও বদলি করা হয়। এই আদেশে মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম চপলকে কর আদায় শাখার প্রধান কর্মকর্তা থেকে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা, লাইসেন্স শাখার প্রধান মোঃ মোশারফ হোসেন পাটোয়ারীকে পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের শিক্ষক, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর মোঃ রাজু মিয়াকে হাফেজ মাহমুদা পৌর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কসাইখানা পরিদর্শক মোঃ মাসুদ রানাকে ভারপ্রাপ্ত স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, কোড়ালিয়া পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন মিলনকে সহকারী বাজার পরিদর্শক, সাবেক মেয়রের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান খানকে ভারপ্রাপ্ত কর আদায়কারী, বাজার শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সহকারী এসেসর, সহকারী এসেসর মোঃ আক্তার হোসেনকে কোড়ালিয়া পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক, স্বাস্থ্য সহকারী বিপ্লব রায়কে পরিবার পরিকল্পনা শাখায়, পীর মহসীন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ আফসার আহমেদ পাটওয়ারীকে পৌর ডিজিটাল সেন্টারে এবং ফটো ডকুমেন্ট অপারেটর জহিরুল ইসলামকে জন্ম নিবন্ধনের রসিদ কর্তন কাজে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া কর্মচারীদের মধ্যে মোহাম্মদ রাসেল মিজি (এমএলএসএস- এডহক)কে জন্মনিবন্ধন শাখা থেকে পরিবার পরিকল্পনা শাখার এমএলএসএস হিসেবে বদলি করা হয়েছে। এই অফিস আদেশে উপরোল্লিখিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে পত্র প্রাপ্তির সাথে সাথে বদলিকৃত নূতন কর্মস্থলে যোগদানের জন্যে বলা হয়েছে।
এক কথায়, চাঁদপুর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন রদবদল ও বদলি যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে। তবে আরো কিছু রদবদল ও বদলির প্রয়োজনীয়তা রয়ে গেছে। বর্তমানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়র ও কাউন্সিলর না থাকায় তদবির ও চাপমুক্তভাবে পৌর প্রশাসক এই রদবদল ও বদলি যে করতে পেরেছেন সেটা ধারণা করা যায়। ভাগ্যিস, প্রশাসক কাউকে কাউকে শাস্তিমূলক বদলি করলেও চাকুরির ক্ষতি তো আর করেন নি, তবে বাড়তি অবৈধ আয়ের ক্ষতি (!) করেছেন। এই পৌরসভায় নিকট ও দূর অতীতে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং শাসকদলের নেতাদের রক্তসম্পর্কীয় লোকজনদের অনিয়মের মাধ্যমে চাকুরিটাই হয়েছে বেশি, যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছে কম--এটা যে কোনো গণমাধ্যমকর্মী অনুসন্ধান করলে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করলে সহজেই বেরিয়ে আসবে।
অতীতে এক মেয়র বিদায়ের পর আরেক মেয়র এসেছেন পৌরসভার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অঙ্গীকার দিয়ে। কিন্তু ক্ষমতার স্বাদ নেয়ার পর বোল পাল্টেছেন, দুর্নীতিবাজদের আর পাল্টাননি। কারণ, দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় নতুন মেয়র নানাভাবে প্রভাবিত হয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা ও শাসকদলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ফোন ও তদবিরে চুপসে গেছেন। রাষ্ট্র সংস্কারের বর্তমান সময়ে পৌর প্রশাসক এমন পরিস্থিতির শিকার হবেন না বলে আমরা বিশ্বাস রাখি। আর হলেও সেটি তিনি নির্ভয়ে এড়াতে পারবেন বলে মনে করি।