শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাজীগঞ্জে তাল গাছ থেকে পড়ে আহত যুবকের মৃত্যু
  •   অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন চৌধুরী মারা গেছেন
  •   ছেলের মামলা-হামলায় বাড়িছাড়া বৃদ্ধা মা
  •   মতলব উত্তরে ইকবাল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
  •   মতলবে ১০ কেজি গাঁজাসহ আটক ৩

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে শোক

অনলাইন ডেস্ক
সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে শোক

চাঁদপুর জেলায় অনেক বরেণ্য সাংবাদিক জন্মগ্রহণ করলেও সবাই জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে পারেন নি। হাতেগণা ক'জন এসেছেন এমন নেতৃত্বে। এঁদের একজন রুহুল আমিন গাজী। তিনি সাংগঠনিক দক্ষতা, সততাণ্ডস্বচ্ছতায় এতোটা গ্রহণযোগ্য ছিলেন যে, নানা প্রতিকূলতা ও সমস্যা সত্ত্বেও এবং সাংবাদিক সংগঠনকে দলীয় প্রভাবে শাসক দলের কুক্ষিগত করার প্রয়াসের মধ্যেও তিনি তাঁর আদর্শিক চেতনায় ছিলেন অটল-অবিচল। এজন্যে তাঁকে নানারূপ নির্যাতন সহ কারাবরণ করতে হয়েছে। বিগত সতেরোটি বছর তিনি ভালো ছিলেন না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে সোচ্চার থাকায় ব্যক্তিগতভাবে তিনি কোণঠাসা হলেও প্রকৃত সাংবাদিকতার ধ্বজা তিনি ধরে রেখেছেন। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তীতে মুক্ত-স্বাধীন দেশে তাঁকে নিয়ে যখন অনেক স্বপ্ন বুনছিলেন সারাদেশের সাংবাদিক সমাজ, আর তখনই বিনা মেঘে বজ্রপাতের ন্যায় খবর এলো, তিনি গুরুতর অসুস্থ এবং তাঁর জীবন সঙ্কটাপন্ন। অবশেষে তিনি দেশবাসীকে বিশেষ করে সাংবাদিক সমাজকে শোক সাগরে ভাসিয়ে পাড়ি জমালেন অনন্তলোকে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর কণ্ঠ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার সারাংশ হচ্ছে : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাত ৯টায় চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, রুহুল আমিন গাজী কিডনি সংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন। আওয়ামী সরকারের আমলে দীর্ঘ কারাবাসে তৈরি হয় নানা শারীরিক জটিলতা। ব্যাক পেইন, উচ্চ ডায়াবেটিস, লবণ ঘাটতি (ইলেক্ট্রোলাইট) সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের মেঘনার ভাঙ্গন-বিপন্ন গোবিন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে শুরু হয় তাঁর সাংবাদিকতার পেশাগত জীবন। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে দেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা দৈনিক সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

রুহুল আমিন গাজী যে চাঁদপুর জেলার অন্যতম কৃতী সন্তান সেটা ব্যাপকভাবে জানান দেয়ার কাজটি করেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক চাঁদপুর দর্পণের সম্পাদক ইকরাম চৌধুরী (বর্তমানে মরহুম) যখন দৈনিক সংগ্রামের চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিষ্ঠাতা, সম্পাদক ও প্রকাশক অ্যাডভোকেট ইকবাল-বিন-বাশারের সাথে ছয় বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠানে ও নিজের পত্রিকার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে এনে রুহুল আমিন গাজীকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন এবং পরবর্তীতে তাঁর সর্বোচ্চ মূল্যায়নে প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য পদ প্রদান করেন।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য ও দেশখ্যাত সাংবাদিক নেতা হিসেবে রুহুল আমিন গাজীর ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত ও সাধারণ সম্পাদক রোটাঃ মাহবুবুর রহমান সুমন স্বাক্ষরিত এক বার্তায় নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেন। তারা মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। আমরাও চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবার চাঁদপুর জেলাবাসীর পক্ষে বরেণ্য সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি, যাতে পরকালে চিরসুখের জান্নাতের উচ্চ মাকামে তাঁর স্থানপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। আমরা মনে করি, তাঁর মৃত্যুজনিত শূন্যতা সহজে পূরণ হবার নয়। তবে সাংবাদিকতায় তাঁর আদর্শ এবং সাংবাদিক সংগঠনে তাঁর নেতৃত্বের গ্রহণযোগ্যতা অনুসরণযোগ্য হয়ে থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়