মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মিশরে ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহ্য ‘আরুসাত-আল-মোলিদ’ : জন্মদিনের পুতুল
  •   'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনার রাজনৈতিক শক্তির বিকাশ অপরিহার্য'
  •   চাঁদপুরের ২৪তম পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব
  •   ফরিদগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা
  •   ওয়াইফাই সংযোগ দিতে গিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

এটা কি পুরাণবাজারবাসীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নয়?

অনলাইন ডেস্ক
এটা কি পুরাণবাজারবাসীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নয়?

চাঁদপুর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম সড়ক দোকানঘর বাজার থেকে পুরাণবাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটারব্যাপী সড়ক। এ সড়কটিতে বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে । সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে কাদামাটি, পানি ও কাদাযুক্ত ছোট, বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়। এতে ছোট, মাঝারি ধরনের যানবাহন চলাচল মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে শীর্ষ সংবাদ হিসেবে ছাপা হয়েছে। সংবাদটিতে প্রতিবেদক যে ছবি জুড়ে দিয়েছেন, তা দেখলে কোনো পাঠকের পুরো সংবাদটি পড়ার খুব প্রয়োজন পড়ে না।

জানা যায়, ২০১১ সালে চাঁদপুর পৌরসভার উদ্যোগে এ সড়কটি সংস্কার করা হয় । এরপর সড়কটিতে আর বড়ো ধরনের সংস্কার হয় নি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পিচঢালাই উঠে ইটের খোয়া ও খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি । এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন । দোকানঘর বাজারস্থ সিআইপি বেড়িবাঁধ হতে জাফরাবাদ, পালপাড়া, চলতা গাছতলা, মক্কামিল, লোহারপুল, রয়েজ রোড, পলাশ হোটেল মোড়, পুরাণবাজার পর্যন্ত রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে গেছে । একটু বৃষ্টি হলেই পানি-কাদায় একাকার হয়ে যায়। এ সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন সহ ফরিদগঞ্জ এবং হাইমচর উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক লোককে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের কয়েক বারের এমপি-মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি ও তার মনোনীত মেয়র প্রার্থী জিল্লুর রহমান জুয়েল নির্বাচনকালীন সময় সড়কটি সংস্কার ও ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন নি । বরং জিল্লুর রহমান জুয়েল মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সড়ক সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন ।

দোকানঘর বাজার থেকে লোহারপুল পর্যন্ত অদ্যাবধি কোনো ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণ না হওয়ায় বৃষ্টির সময় জমে থাকা পানি নিষ্কাশন হতে পারে না । ফলে সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় । চাঁদপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওর্য়াডের বাসিন্দা ও পুরাণবাজারের ব্যবসায়ী মোঃ মামুন হোসেন মিজি বলেন, তের বছর ধরে সড়কটির অবস্থা খারাপ, বিশেষ করে দোকানঘর বাজার থেকে লোহারপুল পর্যন্ত ছোট-বড় অনেক গর্ত। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে ছোট-বড় ডোবার মত হয়ে যায় । যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল করা যায় না সড়কটিতে । খানাখন্দ থাকায় এ সড়ক দিয়ে রিকশা ও অটোবাইক চালকেরা আসতে চায় না । এলেও দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া রাখে । এর ওপর তো ঝাঁকুনির যন্ত্রণা আছেই । দোকানঘর এলাকার বাসিন্দা টুটন মজুমদার জানান, ব্যস্ততম সড়কটি দিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও জরুরি রোগী এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। মানবিক দিক বিবেচনা করে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন ।

চাঁদপুর শহরের নূতনবাজার এলাকায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে অনেক অবকাঠামো গড়ে উঠলেও পুরাণবাজারে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেভাবে গড়ে উঠছে না। অথচ ব্রিটিশ আমল থেকে পুরাণবাজার ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি ও ঐতিহ্য নিয়ে বেশ পরিচিত। তবুও এই পুরাণবাজারের উন্নয়ন বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভা বরাবরই থাকে উদাসীন। এই উদাসীনতা ও বৈষম্যমূলক আচরণের অন্যতম নমুনা পুরাণবাজার-দোকানঘর সড়ক। এই সড়কটি পুরাণবাজারের সাথে চাঁদপুরের তিনটি উপজেলা শুধু নয়, চট্টগ্রাম-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের সাথে সংযোগ রক্ষাকারী খুবই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়কটির পুরোপুরি সংস্কার, উন্নয়ন ও মেরামত গত ১৩ বছর ধরে হচ্ছে না--এটা ভাবতেই অবাক হতে হয়। আরো অবাক হতে হয় এজন্যে যে, এ সড়কটি চলাচল উপযোগী করতে পৌর কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম মেরামতের উদ্যোগও নিচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষের এতোটা পুরাণবাজার-বিদ্বেষী হবার কারণ কী সেটা মাথায় আসছে না। আশা করি, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক পুরাণবাজারের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ বা বিদ্বেষমূলক মনোভাব পরিহার করে সড়কটিকে অতি দ্রুত চলাচল উপযোগী করার কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন এবং পুরোপুরি সংস্কারের জন্যে বরাদ্দপ্রাপ্তির সর্বোচ্চ আন্তরিক প্রয়াস চালাবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়