প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৫, ০৯:৪৩
কে করছে কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ?

শনিবার (২১ জুন ২০২৫) মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে গত ৯ জুন নিশ্চিন্তপুর বাজারে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে নিশ্চিন্তপুর কলেজ মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী ও খুনিদের কোনো দল নেই, আদর্শ নেই। তাদেরকে বর্জন করতে হবে। মানবিক দেশ গড়তে জাতীয়তাবাদী সরকার প্রয়োজন। আর এই সরকারের নেতৃত্ব দেবেন তারেক রহমান। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য মো. আলমগীর সরকার। দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শামসুদ্দীন সরকারের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মঞ্জুর আমিন স্বপনের সঞ্চালনায় এই প্রতিবাদ সভায় অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
এই প্রতিবাদ সভায় ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন কিংবা অন্য কোনো বক্তা ৯ জুন বিএনপির মিছিলে হামলাকারীদের শনাক্ত করে সুস্পষ্টভাবে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলেছেন কিনা সেটা জানা যায় নি। আর বললেও সেটা গণমাধ্যমে আসে নি। নিশ্চয়ই গণমাধ্যমকর্মীদের সীমাবদ্ধতার কারণে তারা সেসব বক্তব্য তুলে ধরেন নি। যদ্দুর জানা যায়, এই হামলাটি সেমসাইড অর্থাৎ স্থানীয় বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্য থেকে সংক্ষুব্ধরা করেছে। এদের নাম হামলার শিকার লোকজন জানেন। পুলিশ এদেরকে ধরছে না যেহেতু এরা ফ্যাসিস্ট ঘরানার কেউ নয়। যদি তেমন কেউ হতো, তাহলে অবশ্যই হামলাকারীরা এতোদিনে ধরা পড়ে যেতো।
আমরা মনে করি, মতলব উত্তরে বিএনপির যে গ্রুপ শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করেছে, তারা যদি এই মিছিল বের করার ক্ষেত্রে কোনো লিখিত/অলিখিত সমঝোতা ভঙ্গের দোষে দুষ্ট না হন, তারা যদি নিরেট নির্দোষ হন, তাদের ওপর যদি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের সন্ত্রাসী লোকজন অন্যায়ভাবে হামলা করে থাকে, তাহলে এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়াটা বাঞ্ছনীয়। একই সাথে বিএনপির ঊর্ধ্বতন মহল থেকে পুলিশকে বলে দিতে হবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে। এর কোনোটাই এই সম্পাদকীয় নিবন্ধ লেখা পর্যন্ত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।
৯ জুন বিএনপির মিছিলে হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তির চোখ হারানোর মতো ঘটনাসহ আরো ক’জন কম-বেশি আহত হয়েছে। চোখ হারানো ব্যক্তিকে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা হাসপাতালে দেখতে গেছেন, কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাও গেছেন, সান্ত্বনা দিয়েছেন, সহায়তা করেছেন। তাহলে কে কার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করছে-এটা নিয়ে সাধারণ্যে প্রশ্ন থাকছেই। সর্বোপরি এই হামলায় মতলব উত্তরে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কিংবা পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার বিকল্প আর কি কিছু আছে?