প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
বিষয়টি বিস্ময়কর ও আপত্তিকর
'খেলাধুলা দূরের কথা, নাম-নিশানাও নেই শাহরাস্তি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার'--যেন বোমা ফাটানো শিরোনাম। এই শিরোনামেই গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের পাক্ষিক পাতা 'ক্রীড়াকণ্ঠে' লিখেছেন শাহরাস্তি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের শাহরাস্তি ব্যুরো ইনচার্জ মোঃ মঈনুল ইসলাম কাজল।
|আরো খবর
তাঁর এই লেখার সারাংশ হচ্ছে : কিশোর গ্যাং, ইভটিজিং, মাদক ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ থেকে শিক্ষার্থী ও যুবকদের ফিরিয়ে রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। এই কথাটি আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলেও বাস্তব চিত্র অন্যরকম। খেলাধুলা এগিয়ে নিতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে একটি করে ক্রীড়া সংস্থা। তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তৈরি করা, শিক্ষার্থী ও যুবকদের নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত রাখতে ক্রীড়া সংস্থার অবদান ও গুরুত্ব অপরিসীম। বিগত দিনগুলোতে কাগজে কলমে শাহরাস্তি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি থাকলেও তাদের কোনো প্রকার তৎপরতা দেখা যায়নি। মাঝে মধ্যে ডিসি কাপ ফুটবল ও সরকারি পর্যায়ে আয়োজিত টুর্নামেন্টগুলো ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও ব্যক্তি পর্যায়ে চাঁদা তুলে তা আয়োজন করতে দেখা গেছে। অনেক সময়েই ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের ওপর চাপিয়ে দেয়া হতো এই কাজ।
ক্রীড়াঙ্গনের উর্বর ভূমি শাহরাস্তি উপজেলায় ব্যক্তি ও বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোগে সবসময়ই খেলাধুলা আয়োজন করা হয়ে থাকে। অল্প কিছু দিন আগে ব্যক্তি উদ্যোগে শাহরাস্তিতে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এসেছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল ও বোলার সাইফুদ্দিন। এছাড়াও অষ্টগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে স্মরণকালের সেরা একটি ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে, যেখানে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সহ জাতীয় দলের বেশ ক'জন খেলোয়াড় অংশ নিবেন বলে জানা গেছে। শাহরাস্তিতে খেলাধুলার পর্যাপ্ত মাঠ থাকলেও আয়োজকের অভাবে কোনো কিছুই সঠিক ভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। শাহরাস্তি উপজেলার কোথাও ক্রীড়া সংস্থার কোনো অফিস কিংবা সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। এমনকি কোনো প্রকার কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি। খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রীড়া সংস্থার কোনো প্রকার কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অবগত নন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আরাফাত জানান, ক্রীড়া সংস্থার বিষয়ে আমি অবগত নই। তাদের কোনো কর্মকাণ্ড আমার চোখে পড়েনি। এ বিষয়ে আমি পদক্ষেপ নিচ্ছি। অচিরেই ক্রীড়া সংস্থা পুনরায় গঠন করা হবে। বর্তমানে কে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন আমার জানা নেই।
শাহরাস্তি উপজেলার শিক্ষার্থী ও যুবকদের জন্যে খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি করে দিতে শাহরাস্তি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম বেগবান হবে--এমনটাই মনে করে শাহরাস্তিবাসী। আমরাও তা-ই মনে করি।
এমনটি মনে করার পাশাপাশি আমাদের বিস্ময়কর ও আপত্তিকর অভিব্যক্তিও আছে। আর সেটি হচ্ছে, শাহরাস্তির মতো আলোচিত ও আলোকিত উপজেলায় অনেক কিছু থাকলেও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অস্তিত্ব নেই কেন? এখানে শিক্ষানুরাগী, সমাজহিতৈষী ও রাজনীতিকের অভাব না থাকলেও ক্রীড়া সংগঠকের কিন্তু অভাব রয়েছে। এটা কি এই উপজেলার জন্যে দুর্ভাগ্যের বিষয় নয়? আশা করি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অচিরেই জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে শাহরাস্তি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা গঠন করবেন এবং এখানকার ক্রীড়াঙ্গন চাঙ্গা করার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম হাতে নিবেন।