সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার
  •   দৈনিক ইনকিলাবের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ্ মিজির দাফন সম্পন্ন
  •   শনিবার চাঁদপুরে ৪ শতাধিক নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে ম্যারাথন প্রতিযোগিতা

প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রয়োজনীয়তা বেশ উপলব্ধ হচ্ছে এখন

অনলাইন ডেস্ক
কমিউনিটি পুলিশিংয়ের প্রয়োজনীয়তা বেশ উপলব্ধ হচ্ছে এখন

চলতি আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে চাঁদপুর শহরে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম শুরুর পঁচিশ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন মাইল ফলক অতিক্রমের শুভক্ষণে রজতজয়ন্তী উদযাপনের উপযোগিতা নেই, তবে প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলার উপলক্ষ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি এ.কে.এম. শহীদুল হক চাঁদপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ১৯৯৯ সালে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের গোড়াপত্তন করেন। সে হিসেবে বাংলাদেশে এটি তাঁর ব্রেন চাইল্ড। তিনি চাঁদপুর থেকে বদলি হয়ে পর্যায়ক্রমে যেখানে যেখানে পুলিশের যে যে পদে চাকুরি করেছেন, তিনি এই কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম নিয়ে নানারূপী পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন এবং আইজিপি হয়ে দেশব্যাপী সামগ্রিক বিস্তারে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি আইজিপি হিসেবে অবসরে গেলেও সারাদেশে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছিলো। তাঁর উত্তরসূরি চাঁদপুরের কৃতী সন্তান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আইজিপি হিসেবে কমিউনিটি পুলিশিংকে টেকসই করতে আন্তরিক প্রয়াস চালান। জাবেদ পাটোয়ারী অবসরে গেলে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি (বেনজীর আহমেদ) তার কর্মকালে (২০২০-২০২২) কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের পাশাপাশি বিট পুলিশিং চালু করেন। এতে দেশের অধিকাংশ স্থানে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে এবং বন্ধ হয়ে যায়। চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে এই কার্যক্রমে ভাটা পড়লেও কিংবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলেও চাঁদপুর শহরে নৈশকালীন টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম মোটামুটি চলতে থাকে এবং এখনো বহাল আছে।

বস্তুত এই কারণেই গেলো ৫ আগস্ট থেকে পুলিশের কর্মবিরতি চলাকালে চাঁদপুর শহরে রাতের অন্ধকারে বড়ো ধরনের চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়নি। অথচ বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলা, খোদ রাজধানী, বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ দেশের অনেক উপজেলা, পৌরসভা ও গ্রামগুলোতে। এমতাবস্থায় পুলিশের অনুপস্থিতিতে চাঁদপুর শহরে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের নৈশকালীন টহল কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা শহরবাসী হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছে।

উল্লেখ করা দরকার, ১৯৯৯ সালের ২৫ আগস্ট চাঁদপুর শহরে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম শুরুর পূর্বে চাঁদপুর শহরে রাতের বেলা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা অপরাধ সংঘটনের হিড়িক চলছিলো। এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি পুলিশিং চাঁদপুর অঞ্চল-১-এর সাফল্যের পর স্বল্প সময়ে চাঁদপুর অঞ্চল-২, ৩, ৪ ও ৫ গড়ে উঠে। মূল শহরে এই পাঁচটি অঞ্চলের কার্যক্রমে সাফল্যের পর উপ-শহরে প্রথমে অঞ্চল-৬ সৃষ্টি হয়। তারপর অঞ্চল ১৫ পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে পুরো চাঁদপুর শহর ও আশপাশের এলাকা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের আওতায় চলে আসে। তারপর বিরাট সময়ের ব্যবধানে চাঁদপুর জেলার সকল উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ে এবং নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাউন্সেলিং, সালিস, নৈশকালীন টহল, থানা পুলিশকে সহযোগিতা সহ সামাজিক কাজেও জড়িয়ে পড়ে প্রভূত সুনাম অর্জন করে। বিশেষ করে নৈশকালীন টহল কার্যক্রমে এতোটাই সাফল্য অর্জন করে, যাতে সন্তুষ্ট হয়ে চাঁদপুরের সাবেক এক পুলিশ সুপার (বখতিয়ার আলম) মন্তব্য করেন যে, দিনের চাঁদপুরের চেয়ে রাতের চাঁদপুর অধিক নিরাপদ। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের কর্মবিরতিজনিত অনুপস্থিতিতে উপরোল্লিখিত মন্তব্যটি চাঁদপুর শহরের বাসিন্দাদের নিকট অতীতের সকল সময়ের চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। এতে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূল উদ্যোক্তা এবং চাঁদপুর শহরে এর সংগঠকদের কম-বেশি আত্মশ্লাঘা অনুভূত হচ্ছে, সর্বোপরি কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সার্থকতা প্রতিপন্ন হচ্ছে। এতে শুধু চাঁদপুর শহর নয়, পুরো চাঁদপুর জেলা সহ দেশের অন্য সকল জেলায় কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম টেকসই করার তাগিদ অনুভূত হবে বলে আমরা আশাবাদী।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়