প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
মালের হাট যুব সংঘের প্রশংসনীয় উদ্যোগ

হাইমচরের মালের হাট যুব সংঘের উদ্যোগে ও ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় এবারের পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার ৪৫০টি দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারের মাঝে ৭০টি গরু কোরবানি করে ২ কেজি করে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। গত ১৮ জুন সকালে হাইমচর উপজেলার ৪টি স্থান থেকে এসব মাংস বিতরণ করা হয়। গরুগুলো জবাই করে মাংস প্রস্তুতকরণ, ওজন করে প্যাকেট করা এবং বিভিন্ন বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছানো হয় নীলকমল ইউনিয়নের মালেরকান্দি গ্রাম থেকে। মাংস বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি, উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধি, ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মালের হাট যুব সংঘের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারগুলো ২কেজি করে মাংস পেয়ে খুশি ও আনন্দিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালে ইংলাল্ডের বার্মিংহামে কার্যক্রম শুরু করে। সংস্থাটি বাংলাদেশসহ বর্তমানে বিশ্বের ৪৫টি দেশে কাজ করছে। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহায়তার মাধ্যমে ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। সংস্থাটির বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের মধ্যে দরিদ্র্যপীড়িত মানুষের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা একটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম। ২০১০ সাল থেকে প্রায় ১৫ বছর যাবৎ মালের হাট যুব সংঘের মাধ্যমে হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এ পর্যন্ত প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ৬২৩টি গরু কোরবানি দিয়ে প্রায় ২৯ হাজার পরিবারের মধ্যে ২ কেজি করে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। হাইমচর উপজেলাটি বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে একটি। প্রয়োজনের তুলনায় প্রাপ্তি নিতান্তই কম, তবুও যে সকল পরিবার ঈদে ২ কেজি মাংস পায় তাদের জন্যে এটি উপকারী। মাংস বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথি ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশকে এ দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার জন্যে আগামীতে বরাদ্দের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করার অনুরোধ জানান।
চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলায় ২৩ টি গরু কোরবানি করে মাংস বিতরণের সংবাদ শনিবার চাঁদপুর কণ্ঠে পড়েছি। এই জেলার কৃতী সন্তান দেশের শীর্ষ করদাতা হাজী কাউছ মিয়ার পক্ষে অন্যান্য বছরের ন্যায় এই গরুগুলো কোরবানি দেয়া হয়। চাঁদপুর সদরের পাশাপাশি হাইমচর উপজেলায় কাউছ মিয়ার মতো কোনো ব্যক্তি নয়, মালেরহাট যুব সংঘের ন্যায় বহুল পরিচিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত এনজিও'র মাধ্যমে ৭০ টি গরু কোরবানি ও মাংস বিতরণ করা হয়েছে। যেটি নদী ভাঙ্গনগ্রস্ত বিপন্ন হাইমচরবাসীর জন্যে কম মনে হলেও অনেক বড়ো ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ইংল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক রিলিফ নামক সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে শুধু এ বছর নয়, বিশ্বস্ততার সাথে পনের বছর ধরে বহু গরু কোরবানি দিয়ে মাংস বিতরণ করতে পারাটা অবশ্যই হাইমচরের মালেরহাট যুব সংঘের অনেক বড়ো দক্ষতা ও যোগ্যতার বিষয়। এমনটি দেশের কতোটা এনজিও করতে পারে! আমরা হাইমচরে দীর্ঘদিন ধরে মালেরহাট যুব সংঘের বহুবিধ কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে এটা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে, এই এনজিওটি হাইমচরের জন্যে আশীর্বাদই বটে। আমরা এটির দীর্ঘস্থায়িত্ব ও সর্বাঙ্গীণ সাফল্য-সমৃদ্ধি কামনা করি।