রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৫ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

জানা মতে কাজটি করলো কেবল মহিলা কলেজ

অনলাইন ডেস্ক
জানা মতে কাজটি করলো কেবল মহিলা কলেজ

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা হয়েছে। ২৪ মার্চ রোববার বেলা ১২টায় এই স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা কলেজের অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুননাহারের সঞ্চালনায় উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু না থাকলে আমরা একটি পতাকা পেতাম না, স্বাধীনতা পেতাম না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্যেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস, আমাদের প্রেরণার মাস, অস্তিত্বের মাস। ৭ মার্চ ১৯৭১ রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আমি তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে অবস্থান করতাম এবং সেখানে অনেক পশ্চিম পাকিস্তানী ছাত্রী ছিল। কিন্তু ২৫ মার্চ রাতে ওদের কেউই সেখানে অবস্থান করে নাই। তার মানে ঐ গণহত্যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। ২৫ মার্চ রাতে সেখান থেকে শুধু মুহুর্মুহু গোলার আঘাতের আওয়াজ শুনেছি। এপ্রিল মাসে কুমিল্লা থকে পাকিস্তানি আর্মি এসে আমার স্বামীর বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তারপর আমার স্বামী যুদ্ধে চলে যান, আমিও আমার কাজের ছেলেসহ নৌকায় চলে যাই এবং হাজীগঞ্জে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। নৌকায় বা মাঝে মধ্যে মানুষের বাড়িতে অবস্থান করে চিকিৎসা সেবা দেই। আমি একদিন চিতোষীর একটি স্কুলে গিয়ে ১৫-২০ জন নারীকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় এবং তাদের শরীরে পাশবিক অত্যাচারের চিহ্ন দেখতে পাই। তারপর আমরা ওদেরকে জামা-কাপড় পরিয়ে নৌকায় তুলে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলি। এ ঘটনার জন্যেই আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়েছে, যা চাঁদপুর জেলার সকল মানুষের। তিনি ২৫ মার্চ কালরাত্রি ও স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি বর্বরতায় নিজের অভিজ্ঞতার কথা শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। উক্ত অনুষ্ঠানে কলেজের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

এবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গৃহীত জেলা প্রশাসনের কর্মসূচির অন্যতম ছিলো এমন স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা। কিন্তু আমাদের জানামতে, ২৬ মার্চের পূর্বে বিভিন্ন স্থানে পৃথক পৃথক আয়োজনে কিছু আলোচনা সভা হলেও একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়ে এবার চাঁদপুরে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে একমাত্র চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ। এছাড়া অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্য কেউ কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে প্রধান অতিথি বা মুখ্য আলোচক করে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা করার কোনো প্রেস বিজ্ঞপ্তি বা সংবাদ আমরা পাইনি। মহিলা কলেজ এমন আয়োজন করে নিঃসন্দেহে সহজ-দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে আয়োজক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ করেনি বা দেখেনি এমন পদবীধারী ব্যক্তিকে এড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে প্রধান অতিথি করার ব্যাপারে তাদের ঔদার্য ও আন্তরিকতা ছিলো। এটা ক'জনের আছে সেটা দৃষ্টান্ত উপস্থাপন ছাড়া বলা মুশকিল। আমরা কাউকে হেয় না করে এমন সহজ-দৃষ্টান্ত স্থাপনের 'কঠিন' কাজটি আগামী বিজয় দিবসের পূর্বে করে দেখানোর বিনীত অনুরোধটুকু করছি। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের শিক্ষা বিভাগের এবং উপজেলা প্রশাসনের মনিটরিং করার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়