বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

তত্ত্বাবধায়কের সদিচ্ছায় মেয়রের যথার্থ সমর্থন

তত্ত্বাবধায়কের সদিচ্ছায় মেয়রের যথার্থ সমর্থন
অনলাইন ডেস্ক

কোথাও উন্নয়ন দেখলে এক শ্রেণির মানুষ সেখানে অনিয়মের গন্ধ খোঁজেন। প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য থাকে এমন, ভালোটাকে থামিয়ে দিতে হবে কালো মানসিকতায়। চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রায় দুবছর পূর্বে যোগদানের সময় তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহাবুবুর রহমান দৃঢ় প্রত্যয়সহ সদিচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন যে, সামর্থ্য ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেই তিনি হাসপাতালে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আনয়নের চেষ্টা করবেন। তাঁর এই চেষ্টার মধ্যেই হাসপাতালের রোগী হয়ে ভর্তি হলেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবাও পেলেন। ফলে তাঁর মধ্যে হাসপাতালটির জন্যে চাঁদপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে কিছু করার তাগিদ অনুভূত হলো। সেমতে তিনি করালেন কিছু কাজ। এই কাজ শেষে বুধবার চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত হলো একটি বিশেষ সংবাদ, যার শিরোনাম হয়েছে ‘চাঁদপুর পৌরসভার সহযোগিতায় আধুনিক হলো সরকারি জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিট’।

সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, প্রশস্ত রুম। পুরো রুম একাধিক এসির দ্বারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। টাইলস্ করা হাই কমোড সম্বলিত ওয়াশরুম। ঝকঝকে উন্নতমানের টাইলস্, রুচিশীল জানালার পর্দা, সোফা সেট। এ যেনো ভালোমানের কোনো বাসাবাড়ির ড্রয়িং রুম। কিন্তু না, এটা কোনো বাসার ড্রয়িং রুম নয়। এই দৃশ্য আড়াই শ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের কেবিনের। হাসপাতালের সবক'টি কেবিনই বর্তমানে এমন সুসজ্জিত এবং উন্নত। এছাড়া অন্যান্য ইউনিটও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। হাসপাতালের কেবিন ব্লক, পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, কার্ডিওলজি বিভাগ ও ইপিআই বিভাগে সংস্কারসহ নানা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এসব ইউনিট শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং প্রতিটিতে উন্নতমানের টাইলস্সহ রুচিশীল আসবাবপত্র রয়েছে। আর এমন আধুনিকতার ছোঁয়াসহ হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে চাঁদপুর পৌরসভার আর্থিক সহায়তায়। শুধু তাই নয়, বিশুদ্ধ সুপেয় পানির জন্যে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও করে দেয়া হচ্ছে পৌরসভা থেকে। এর জন্যে ব্যয় হবে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। এই পুরো ব্যয়টাই পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে করা হচ্ছে। এসব তথ্য জানালেন পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল।

গত কদিন আগে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল হাসপাতালে যান ক’জন রোগীর চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে। তখন মেয়রের সাথে চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিবেদকও ছিলেন। রোগী দেখার পর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান মেয়রকে পৌরসভার অর্থায়নে আধুনিক মানে গড়ে ওঠা হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিট পরিদর্শনে নিয়ে যান। সাথে এই প্রতিবেদকও ছিলেন। হাসপাতালের কেবিন ব্লকে গিয়ে দেখা গেলো, পুরো রুম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, ঝকঝকে উন্নতমানের টাইলস্, হাই কমোড সম্বলিত প্রশস্ত ওয়াশরুম, সোফা সেট এবং জানালায় রুচিসম্মত পর্দা। একজন রোগীও তখন সে কেবিনে ভর্তি ছিলেন। সব কেবিনই এমন আধুনিক মানের উন্নত করা হয়েছে বলে জানালেন তত্ত্বাবধায়ক। এরপর যাওয়া হয় দ্বিতীয় তলায় কার্ডিওলজি বিভাগে। এই বিভাগে আগে ছিল একটা ইউনিট। এখন দুই সাইডে দুটা করা হয়েছে। কার্ডিওলজি বিভাগের দুটো ইউনিটই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং নতুন টাইলস্ দিয়ে করা। এরপর পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, সেটিও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং উন্নতমানের টাইলস্ দিয়ে আধুনিক মানের করা হয়েছে। সে মুহূর্তে কয়েকজন রোগীও সেখানে ছিলেন। হাসপাতালের নিচতলায় ইপিআই বিভাগে গিয়েও দেখা গেছে, সেটিও আধুনিক মানের করা হয়েছে। মেয়র জানালেন, পৌরসভা থেকে হাসপাতালের রোগী এবং দর্শনার্থীদের জন্যে বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা হিসেবে হাসপাতাল ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও করে দেয়া হচ্ছে। মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল জানান, আমরা সেবার মানসিকতা নিয়ে এ কাজগুলো করছি। এটা এই জেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। চাঁদপুর জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলার মানুষও এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির প্রচেষ্টায় এই হাসপাতালটিতে সেবার মান আগের চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে এখন আইসিইউ ইউনিট রয়েছে। ওয়ানস্টপ ইমার্জেন্সি সার্ভিস ইউনিট খোলা হয়েছে। অপরিণত এবং গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জন্ম নেয়া নবজাতক শিশুদের বিশেষ পরিচর্যার জন্যে ‘স্ক্যানো’ এবং ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার ইউনিট চালু করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবার এসব বিভাগ চালু করায় এখন আর চাঁদপুরের মানুষকে ঢাকা যেতে হয় না। আমি নিজেও এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছি। ভর্তি ছিলাম সপ্তাহেরও উপরে। তখনই আমি অনুভব করেছি হাসপাতালটিতে অভ্যন্তরীণ সেবার মান বাড়াতে আরো কিছু কাজ করতে হবে। আমি তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে কেবিন ব্লকসহ অন্যান্য ইউনিট আধুনিক করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তাতে শুধু চাঁদপুর শহরের নয়, পুরো জেলা ছাড়াও জেলার বাইরের মানুষও উপকৃত হবে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান বলেন, মেয়র মহোদয়ের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। এটা কিন্তু পৌরসভার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। তারপরও মেয়র মহোদয় সম্পূর্ণ সেবার মানসিকতা নিয়ে এ কাজগুলো করেছেন। সেজন্যে আমরা মেয়র মহোদয় তথা চাঁদপুর পৌরসভার প্রতি কৃতজ্ঞ।

চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মাহাবুবুর রহমান স্বীয় ক্ষমতায় কূট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে চাঁদপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে হাসপাতালে সম্পাদিত উন্নয়ন কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু না, তিনি সেটি না করে বরং সেটিকে তাঁর সদিচ্ছার প্রতি যথার্থ সমর্থন হিসেবে ধরে নিয়ে লোকাল রিসোর্স তথা স্থানীয় সম্পদকে কাজে লাগানোর বিরল সুযোগ বলে মনে করেছেন। সত্যি কথা বলতে কি, জটিল মানসিকতাসম্পন্ন অনেক সরকারি কর্মকর্তা এমনটি মনে করার ঔদার্য প্রদর্শন করতে না পারার নজির রয়েছে। এ ক্ষেত্রে চিন্তা-চেতনায় ঋজু ও স্বচ্ছ ডাঃ মাহাবুবুর রহমান কম/বেশি ব্যতিক্রম। আমরা এই হাসপাতালে তাঁকে তত্ত্বাবধায়ক পদে অধিষ্ঠিত করার পেছনে স্থানীয় এমপি শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি অবশ্যই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। আর তত্ত্বাবধায়কের সদিচ্ছার প্রতিফলনে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্যে আমরা চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের প্রতি জানাতে চাই অশেষ কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ ও সাধুবাদ সহ আরো অনেক কিছু।

 

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়