সোমবার, ০৫ মে, ২০২৫  |   ৩৩ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

পূর্ব ভাওয়ালে পাকা সেতু চাই
অনলাইন ডেস্ক

অতি সম্প্রতি চাঁদপুর কণ্ঠে ‘ফরিদগঞ্জে পাকা সেতুর অভাবে হাজারো মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ’ শিরোনামের সংবাদটি শীর্ষ সংবাদের মর্যাদা পেয়েছে। সংবাদটিতে প্রতিবেদক সচিত্রভাবে তুলে ধরেছেন, পাকা সেতুর অভাবে হাজার হাজার মানুষ কতোটা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সংবাদটিতে লিখা হয়েছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ি এলাকায় একটি পাকা সেতুর অভাবে গ্রামের হাজারো মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হচ্ছে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থী, গ্রামের সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন এলাকার পথচারীরা। জানা যায়, পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ি এলাকায় খালের ওপর ভেঙ্গে যাওয়া সেতু স্থানীয় খেটে খাওয়া মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজ অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশের ব্যবহারে নির্মাণ করলেও কিছু দিন না যেতেই আবার ভেঙ্গে পড়ে। যাতায়াতের জন্যে এভাবে প্রতি বছর কাঠ ও বাঁশের সেতু তৈরি করে স্থানীয়রা। আর সেটির ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ বছর ধরে এলাকাবাসী এভাবে চলাফেরা করলেও সংশ্লিষ্টদের নজরদারি না থাকায় সেতু নির্মাণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি--এমনটা অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, এ জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠ-বাঁশের সেতু দিয়ে ওই গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হয়। স্থানীয় এলাকার পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব ভাওয়াল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও কাঁশারা দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ওই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে যেতে হয়। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে ও শাহী বাজার, পাটওয়ারী বাজার, শোল্লা বাজার, মুন্সীরহাট, চৌরঙ্গী বাজার, গল্লাক বাজার ও কামতা বাজারে এ অঞ্চলের মানুষ এ কাঠ-বাঁশের সেতু দিয়ে যাতায়াত করে। ওই এলাকার প্রাইমারী স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক, ৮২ বছরের বৃদ্ধ মোঃ আনোয়ার হোসেন, পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ির আবুল কালাম, সৈয়দ আহম্মদ তালুকদারসহ এলাকাবাসী চাঁদপুর কণ্ঠের প্রতিবেদককে জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা এলাকাবাসী যাতায়াতের জন্যে এ খালের উপর নিজস্ব উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজস্ব অর্থায়নে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সেতু তৈরি করে পারাপার হচ্ছি। সাধারণত বর্ষার ভরা মৌসুমে কাঠ ও বাঁশ পানিতে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে অটোরিকশা, সাইকেল, মোটরবাইক ও মানুষ চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এছাড়াও স্থানীয় তালুকদার বাড়ির জুমা মসজিদে এবং ঈদগাহে নামাজ পড়তে এসে মুসল্লিরা ওই সেতু ভেঙ্গে দুর্ঘটনার শিকার হন। কিছুদিন পূর্বে একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা সেতু ভেঙ্গে পড়ে গেলে দুজন যাত্রী আহত হন।

পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থী আকলিমা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা এ কাঠের সেতুটি দিয়ে খাল পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয় এবং জরাজীর্ণ সেতুতে প্রায়শই পা পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহোদয়কে একটি পাকা সেতু তৈরি করে দেয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই। গ্রামবাসী, শিক্ষক, কোমলমতি শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি, সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টিতে একটি পাকা সেতুই পারে এই অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের ভোগান্তি দূর করতে। পাইকপাড়া উত্তর ইউপি সদস্য শামীম বেপারী বলেন, পূর্ব ভাওয়াল তালুকদার বাড়ি এলাকার খালের উপর একটি পাকা সেতু একান্ত প্রয়োজন। যাতায়াতে এ এলাকার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। একটি পাকা সেতু নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হবে তা ইউনিয়ন পরিষদের বাজেটে নেই। তবে সেতুটি নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে স্থানীয় এমপি ও সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু পাটওয়ারী বলেন, ভুক্তভোগী গ্রামবাসী সেতুর বিষয়টি আমাকে অবগত করলে ইতিমধ্যে স্থানীয় উপজেলা কার্যালয়ের এলজিইডি প্রকৌশলীকে অবগত করেছি। সেতুটি নির্মাণের জন্যে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলেই দ্রুত সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল গ্রামে তালুকদার বাড়ি সংলগ্ন খালের ওপর বিদ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর স্থলে একটি পাকা সেতু নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ ব্যাপারে এলজিইডর প্রধান কার্যালয়ে প্রেরিত প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদন লাভ করুক এবং আসন্ন শুষ্ক মৌসুমেই সেতুটির কাজ শুরু হোক--এমন প্রত্যাশা ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর সাথে আমাদেরও। আমরা এ ব্যাপারে স্থানীয় এমপি বিশেষ করে ইউপি চেয়ারম্যানের সক্রিয়তা, প্রয়োজনে যথাস্থানে সুষ্ঠু তাগিদ বা তদবিরের অনিবার্যতা উপলব্ধি করছি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়