রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩১ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

ছবিই কথা বলে, ব্রীজটির দশা কতো করুণ!

ছবিই কথা বলে, ব্রীজটির দশা কতো করুণ!
অনলাইন ডেস্ক

‘ফরিদগঞ্জের বালিথুবায় ভাঙ্গা ব্রীজে লাখো মানুষের নিত্য দুর্ভোগ’ শিরোনামে চাঁদপুর কণ্ঠের ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি এমরান হোসেন লিটন গত বৃহস্পতিবার পরিবেশিত তার সংবাদে লিখেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২নং বালিথুবা ইউনিয়নের বালিথুবা বাজার হতে সরখাল অভিমুখী রাস্তার ব্রীজের মাঝখান ভেঙ্গে যাওয়ায় কমপক্ষে ৩/৪টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্রীজটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে থাকলেও বাস্তবে তার কিছুই হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ভেঙ্গে আছে ব্যস্ততম এই সড়কের বিশাল ব্রীজের মাঝখানটা। প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত ব্রীজের মাঝখানটা ভেঙ্গে দেবে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা জেলা সদরের লোকজন, হাট-বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা, পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের। যাতায়াতের বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই এই ভাঙ্গা ব্রীজ ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের। এক সময় অটোবাইক, সিএনজি অটোরিকশা ও ভটভটিসহ ছোটখাটো যানবাহন এই ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতো। বর্তমানে ব্রীজটির ভাঙ্গার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় উপজেলার ২নং বালিথুবা ইউনিয়ন, ৭নং পাইকপাড়া, ৮নং পাইকপাড়া, ৪নং সুবিদপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের লাখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী লোকজন নিজ উদ্যোগে ভাঙ্গা সেতুটির ওপর কাঠ ব্যবহার করে যাওয়া-আসা করলেও বর্তমানে ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লোকজন চলাচল করছেন। তাই ভাঙ্গা এই ব্রীজটি যে কোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে সাধারণ পথচারী বা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে ৩/৪ টি ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আনা নেওয়া এবং চাঁদপুর সদর ও হাজীগঞ্জ থেকে বিভিন্ন বাজারের দোকান মালিকরা পণ্য কিনে পরিবহনের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অত্র অঞ্চলের পাটোয়ারী বাজার, বালিথুবা বাজার, শাহীবাজার, চৌরঙ্গী বাজার, কড়ৈতলী বাজার, শোল্লা বাজার সহ কয়েকটি বাজারের অসংখ্য দোকান মালিক জানান, এই ব্রীজটি ৩/৪টি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম। ব্রীজের মাঝখানটা দেবে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় মালামাল আনা-নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই ব্রীজটির স্থলে দ্রুত নতুন ব্রীজ নয়তো সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ২নং বালিথুবা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ হারুন আর রশিদ বলেন, বালিথুবার এই ব্রীজটি এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৃষিপণ্য আনা নেওয়া ও হাট-বাজারের মালামাল আনা নেয়ার ক্ষেত্রে ভাঙ্গা ব্রীজটি চরম দুর্ভোগের কারণ। আমরা কর্তৃপক্ষকে ব্রীজের বেহাল দশা নিয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছি। উপজেলার মাসিক মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছি। আশা করি খুব শীঘ্রই ব্রীজটি সংস্কার করা হবে এবং আগামী এক মাসের মধ্যেই সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আমাকে অবগত করেছেন। আমাদের বিশ্বাস, ব্রীজটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন করলেই যোগাযোগে স্বস্তি ফিরে আসার পাশাপাশি দুর্ভোগ লাঘব হবে এ অঞ্চলের লাখো মানুষের।

উপরোল্লিখিত সংবাদটিতে প্রতিবেদক যে ছবি জুড়ে দিয়েছেন, তা দেখে ব্রীজটির করুণ দশা এবং ঝুঁকির বিষয়টি খুব সহজে আঁচ করা যায়। এই ব্রীজটি নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠে ইতিপূর্বে সংবাদ ও সম্পাদকীয় নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ জনপ্রতিনিধি কারো টনক নড়েছে বলে মনে হয় না। এটা দুর্ভাগ্যজনক ও দুঃখজনক। এই ব্রীজটিকে এড়িয়ে অন্য পথে যাতায়াতের সুযোগ যেহেতু নেই, সেহেতু গুরুত্ব ও অনিবার্যতা বিবেচনায় ব্রীজটি পুনঃনির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করার আগে জরুরি টেকসই মেরামতের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাথায় রাখা উচিত। আর যদি কর্তৃপক্ষ ব্রীজটিতে সম্ভাব্য অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনার জন্যে অপেক্ষা করতে চায়, সেটা ভিন্ন কথা। তবে পানি নিচের দিকে গড়ানোর মতো দায় দায়িত্বটা শেষ পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলীকে যে গ্রাস করবে, তাতে সন্দেহ নেই। উপর্যুপরি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সমীপে জোরালো তদবির করা বা না করার প্রশ্নে জনপ্রতিনিধিগণ যে প্রশ্নবিদ্ধ হবেন না, সেটা তাদের বিশ্বস্ত চাটুকারও হলফ করে বলতে পারবেন না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়